31 C
Nārāyanganj
সোমবার, মে ২৯, ২০২৩

ফেসবুককে ৫০০ কোটি ডলার জরিমানা করেছে এফটিসি

ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা লঙ্ঘনের দায়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুককে ৫০০ কোটি ডলার জরিমানা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি)। মার্কিন গণমাধ্যমগুলোতে বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এদিকে ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত কথা গুগল শুনছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।

বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, এফটিসি এ বিষয়টি তদন্ত করছে। ফেসবুকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার হয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রাজনৈতিক কাজে ব্যবহারের জন্য ৮৭ মিলিয়ন ফেসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে।

প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদ মাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এফটিসির সদস্যদের মধ্যে ৩-২ ভোটের মাধ্যমে ফেসবুকের বিরুদ্ধে এ বিশাল এবং রেকর্ড পরিমাণ জরিমানার বিষয়টি অনুমোদন দেয়া হয়। অবশ্য ফেসবুক এবং এফটিসি উভয়ই ওই প্রতিবেদন নিয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ব্রিটিশ পলিটিক্যাল কনসালট্যান্সি ফার্ম ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার কাছে ৮ কোটি ৭০ লাখ ফেসবুক গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য থাকার বিষয়ে গত বছরের মার্চে ফেসবুকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে এফটিসি।

২০১১ সালের একটি চুক্তির শর্ত ভঙ্গ হওয়ার কারণেই তদন্তের কাজ শুরু করে তারা। ওই চুক্তি অনুযায়ী কোনো ফেসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য নেয়ার ক্ষেত্রে তাদের বিষয়টি স্পষ্ট করে জানাতে হবে, যদি তারা সম্মতি দেয় তাহলেই শুধু তাদের তথ্য শেয়ার করা যাবে। আর সেটা না করা হলে তা হবে বেআইনি।

ঘটনার সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন ব্যক্তি গত শুক্রবার ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে বলেছেন, ফেসবুককে ৫০০ কোটি ডলার জরিমানার বিষয়টি এফটিসির ৩-২ ভোটে অনুমোদন দেয়া হয়। তারা বলছেন, যে তিনজন জরিমানা করার পক্ষে ছিলেন তার ক্ষমতাসীন দল রিপাবলিকান পার্টির এবং বিপক্ষে যারা ছিলেন তারা বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক পার্টির।

অবশ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা এফটিসি জরিমানা করলেও এখন এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে মার্কিন বিচার বিভাগের সিভিল বিভাগ। তবে চূড়ান্ত ওই সিদ্ধান্ত আসতে কত সময় লাগবে তা স্পষ্ট নয় বলে ভাষ্য সূত্রগুলোর। শেষ পর্যন্ত এ ৫০০ কোটি ডলার জরিমানা বহাল থাকলে, তা হবে কোনো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের ওপর এফটিসির আরোপ করা সর্বোচ্চ জরিমানা।

অক্টোবরে যুক্তরাজ্যের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফেসবুককে ৫ লাখ পাউন্ড জরিমানা করেছিল। যুক্তরাষ্ট্রে জরিমানার পরিমাণ ৫০০ কোটি ডলার হতে পারে বলে আগেই অনুমান করেছিল ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।

লন্ডভিত্তিক ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা ২০১৬ সালের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে কাজ করেছিল।

গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট আড়ি পাতছে : গুগল অ্যাসিস্ট্যান্টের ম্যাধ্যমে পাওয়া ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত ভয়েস রেকর্ডিং নিয়মিত শোনে গুগল সংস্থা। বেলজিয়ামের গণসম্প্রচারক ভিআরটি গুগল অ্যাসিস্ট্যান্টের ডাচ ভাষার কিছু রেকর্ডিং ফাঁস করে দেয়ার পরেই একথা স্বীকার করতে বাধ্য হল গুগল। তাদের প্রতিবেদনে ভিআরটি দাবি করেছে, ‘অধিকাংশ রেকর্ডিংই সচেতনভাবে করা, কিন্তু গুগল এমন সব কথোপকথনও শুনছে যেগুলো রেকর্ড হওয়ারই কথা নয়। এর মধ্যে কয়েকটিতে গোপনীয় তথ্যও রয়েছে।’

গুগলের সার্চের প্রোডাক্ট ম্যানেজার ডেভিড মানসীস সংস্থার তরফে একটি ব্লগ পোস্টে স্বীকার করেছেন যে তাদের ভাষা বিশেষজ্ঞরা ভাষা এবং তার ব্যবহারের প্রযুক্তিগত উন্নতির স্বার্থে এসব রেকর্ডিং শোনেন। ‘এ ভাষা বিশেষজ্ঞরা যে কোনো ভাষা বোঝার সুবিধার্থে পর্যালোচনার পর প্রশ্নের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করেন। স্পিচ টেকনোলজির উন্নতির ক্ষেত্রে এ প্রক্রিয়াটি অবশ্যক এবং গুগল অ্যাসিস্ট্যান্টের মতো প্রোডাক্ট সৃষ্টির ক্ষেত্রেও’, লিখেছেন তিনি।

গুগলের এও দাবি, মোট সংগৃহীত অডিও ফাইলের স্রেফ ০.২ শতাংশই রিভিউ বা পর্যালোচনা করা হয়। এ ছাড়াও দাবি, সব অডিও ক্লিপিংই হয় বেনামি, না হয় কোনো ব্যবহারকারীর সঙ্গে যুক্ত নয়, কাজেই কোনো ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হওয়ার সম্ভাবনা নেই। ব্লগ পোস্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে ভাষা বিশেষজ্ঞরা গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে অডিও ক্লিপে ‘ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েজ’র ওপর হস্তক্ষেপ করবে না।

কিন্তু স্মার্টফোন, ‘গুগল হোম’ জাতীয় স্মার্ট স্পিকার এবং অন্যান্য ডিভাইসে ব্যবহৃত অ্যাসিস্ট্যান্টের মাধ্যমে সংগৃহীত এক হাজারের বেশি রেকর্ডিংয়ের মধ্যে ১৫৩টি রেকর্ডিং ঘটনাচক্রে করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভিআরটি। এগুলোতে ব্যবহারকারীদের বক্তিগত তথ্য, যেমন একজনের ক্ষেত্রে তার ঠিকানা, আরেকজনের ক্ষেত্রে নাতি-নাতনির নাম, প্রকাশ হয়ে গেছে।

গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট চালু করতে হলে হয় ‘ওকে গুগল’ বলতে হয়, না হয় সংশ্লিষ্ট ডিভাইসে অ্যাসিস্ট্যান্ট বোতাম টিপে সক্রিয় করতে হয়, যার পর রেকর্ডিং শুরু হয়। বিরল হলেও গুগল স্বীকার করেছে, কখনও কখনও ‘ওকে গুগল’-এর কাছাকাছি কোনো কথাতেও চালু হয়ে যেতে পারে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট। ওই ব্লগ পোস্টে বলা হয়েছে, খুব বেশি ‘ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েজ’ থাকলে এরকমটা সম্ভব। এবছরই গুগলের প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যামাজন প্রকাশ্যে স্বীকার করে যে তাদের ভাষা পরিচিতি এবং স্বাভাবিক ভাষা বোঝার প্রক্রিয়া মজবুত করতে তারা ‘একো’ প্রযুক্তির দ্বারা ধারা পড়া অ্যালেক্স ভয়েস রেকর্ডিংয়ের ‘খুবই সামান্য সংখ্যক নমুনা’ শুনেছে। এ স্বীকারোক্তির নেপথ্যে ছিল ব্ল–মবার্গের একটি প্রতিবেদন, যাতে বলা হয়েছিল, সারা পৃথিবীতে হাজার হাজার অ্যামাজন কর্মী ‘একো’ ব্যবহারকারীদের বাড়ি এবং অফিস থেকে সংগ্রহ করা ভয়েস রেকর্ডিং শোনেন।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments

0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x