গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। সবকটি নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রতিদিন প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। জেলার দুটি উপজেলা বাদ দিয়ে পাঁচটি উপজেলার প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।
বুধবার (১৭ জুলাই) রাত থেকে যমুনা ও ঘাঘট নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে রেল লাইনে পানি ওঠায় বৃহস্পতিবারও উত্তরের সঙ্গে গাইবান্ধা-রাজধানীর ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ আছে। এছাড়া বাদিয়াখালী এলাকায় রেল লাইন ডুবে যাওয়ায় বুধবার দুপুর থেকে উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে সকল জেলার ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
এলাকাবাসীরা জানায়, শহরের জেলা প্রশাসকের বাসভবন, মেয়রের বাড়িসহ সবগুলো বাড়ির মধ্যে এখন পানি। এতে করে চালানো যাচ্ছে না কোন যানবাহন। ফলে লোকজন তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছেনা। গাইবান্ধার সাত শতাধিক স্কুল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এসব স্কুল আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করলেও সেগুলোর মধ্যে অনেক স্কুলেও পানি উঠেছে। গবাদি পশু, হাঁস মুরগি নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে এলেও শান্তি নেই। বেঞ্চ উচু করে কোন মতে বসে থাকলেও মলমূত্র ত্যাগের সমস্যা ও খাবার পানির সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। চরাঞ্চলের প্রায় চার শতাধিক পরিবার তাদের ঘরবাড়ি ভেঙে নিয়ে নৌকায় বসবাস করছে। আবার কেউ অন্যত্র উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে।
বন্যা আর এখন গ্রাম ও চরাঞ্চলে নেই। শহরের ও গ্রামের সবর্ত্র থৈ থৈ পানি। পানিবন্দী মানুষের দুর্ভোগের পাশাপাশি দুর্ভোগ বেড়েছে গবাদি পশুর। এসব এলাকার মানুষের প্রধান সম্পদ গবাদি পশু রক্ষায় তারা বিভিন্ন উঁচু জায়গায় এবং মাচা করে রাখছে তাদের গরু ছাগল। নিরুপায় হয়ে গরু ছাগলের সঙ্গে একই জায়গায় রাত দিন থাকতে হচ্ছে অনেককে। পলের পুঞ্জ মাঠ ডুবে যাওয়ায় খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে গবাদি পশুর।
বন্যা দুর্গতরা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা খেয়ে না খেয়ে কোনমতো মানবেতর জীবনযাপন করছি। ত্রাণ তো দূরের কথা, কেউ খোঁজ করতেও আসেনি।’ ইউএনবি।