কদিন আগেও পেঁয়াজের বাজার ছিল সহনশীল। তবে মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের ঝাঁজ এতটাই বেড়েছে যে ক্রেতাদের চোখের পানি আর নাকের পানি একাকার হয়ে যাচ্ছে। সারাদেশে পেঁয়াজের দাম বেড়ে দ্বিগুন হয়েছে।
ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর প্রণোদনা তুলে নিয়েছে। ফলে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে গত ১০ দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজ আমদানি কমেছে তিনগুন। ফলে বেনাপোলসহ স্থানীয় বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে দ্বিগুন।
গত ১১ জুন ভারত সরকার ভারতীয় বাজারকে চাঙ্গা করতে এবং মূল্য কমিয়ে আনতে পেঁয়াজের রপ্তানীকারকদের প্রণোদনা তুলে নেয়।পেঁয়াজ রপ্তানিতে ১০ শতাংশ প্রণোদনা ছিল। ৩০ জুন এ প্রণোদনার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ভারত সরকার তা এগিয়ে আনে।
মসলা হিসেবে বাংলাদেশে পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে অনেক বেশি। দেশের অন্যান্য স্থানের ন্যায় বেনাপোল, শার্শা নাভারন, বাগআচড়া ও গোগাসহ স্থানীয় বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৮ থেকে ৩২ টাকা। যা আগে বিক্রি হত ১৪ টাকা কেজি দরে।
পাশাপাশি ক্রেতারা দেশি পেঁয়াজ এখন ক্রয় করছেন প্রতি কেজি ৩৮ থেকে ৪২ টাকায়। যা আগে ছিল ২২ টাকা। তবে ঢাকায় এ দাম আরও বেশি।
আমদানি ও সরবরাহ কমে যাওয়ায় পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে বলে জানান বিক্রেতারা। তবে পেঁয়াজের দাম দ্রুত বাড়ার পেছনে শক্তিশালী ‘সিন্ডিকেট’ কাজ করছে বলে মনে করেন ক্রেতারা।
ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকদের কারসাজিতেই পেঁয়াজের ঝাঁজ এতটা বেড়েছে বলে ক্রেতাদের ধারণা। তারা কর্তৃপক্ষকে স্থানীয় বাজার মনিটরিং করার আহ্বান জানিয়েছেন।
বেনাপোল বন্দর পরিদর্শক নজরুল ইসলাম জানান, গত জুন মাসের শেষের ১০ দিনে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি হয় ১৭৭০ মেট্রিক টন। চলতি মাসের প্রথম ৯ দিনে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে ৪৫৯ মেট্রিক টন।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানান, বাংলাদেশে বছরে ২.২ এবং ২.৫ মিলিয়ন টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। যেহেতু দেশে বছরে পেঁয়াজের উৎপাদন বেড়েছে, তাই গত দশকে আমদানির পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রীর দেয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০৯ অর্থবছরে আমদানির পরিমাণ ছিল প্রায় ০.৪ মিলিয়ন টন, তবে সাম্প্রতিক বছরে এটা ১.১ মিলিয়ন টন স্পর্শ করেছে।
বর্তমানে প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজ মান ভেদে ১৫০ থেকে ২০০ মার্কিন ডলারে আমদানি করা হয়। তবে দেশের অন্যান্য স্থলবন্দরগুলোতে পেঁয়াজ আমদানির পরিমাণ অপরিবর্তিত রয়েছে।