সাবেক স্বামী হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর একমাত্র প্রতিবন্ধী ছেলেকে ফিরে পেতে পাগল হয়ে উঠেছে অসহায় মা বিদিশা সিদ্দিকি। স্বামীর মৃত্যুর খবর পেয়ে শেষ বারের মত দেখতে ভারতের আজমীর থেকে ছুটে আসেন বাংলাদেশে।কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস দলীয় নেতাকর্দের বাধার মুখে সেই স্বপ্ন আর বাস্তবায়িত হয়নি। এমনি কি তাদের দম্পত্ত জীবনে একমাত্র প্রতিবন্ধী ছেলে এরিকের সাথেও অভাগা মার দেখা মিলেনি।
এবিষয় গণমাধ্যমে দেয়া বক্তব্যে বিদিশা বলেন, বাবা (এরশাদ) এর মৃত্যুর পর আমার প্রতিবন্ধী ছেলেটা পাগলপ্রায়। আমি আজমীর থাকাবস্থায় খবর পাই এরশাদ সাহেব মারা গেছেন, খবরটি শোনার পর পরই আমি বাংলাদেশে ছুটে আসি আমার ছেলেকে সান্তনা দিতে। এছাড়া আমার সাবেক স্বামীর মুখটাও একবার দেখতে চেয়েছিলাম কিন্তু একটি মহল আমাকে সবকিছু থেকে বঞ্চিত করেছে। মা হিসেবে এই সময়ে এরিকের পাশে আমারই থাকার কথা। তাকে এখন সান্তনা দেয়া আমরই দায়িত্ব। কিন্তু কিছুই করতে পারলাম না। আমার ছেলেকে কোথায় রাখা হয়েছে আমি জানিনা।
এসময় তিনি জাতির কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, বাবার মরদেহের সাথে এরিককে রংপুরে কেন নেয়া হলো না? এরশাদের মৃত্যুর পর এরিকের সাথে যে আচরন করা হচ্ছে তা অমানবিক।
তিনি আরো বলেন, আমার সন্তান আমার কাছেই নিরাপদ। এতোদিন বাবা জীবিত ছিলো তাই আমার প্রতিবন্ধী ছেলেকে বাবার কাছেই নিরাপদ মনে করেছি। এখন আমি আমার সন্তানকে একা রেখে শান্তি ও স্বস্তি পাচ্ছিনা। আমার শেষ চাওয়া আমার সন্তান আমার কাছেই থাকবে। আদালতের নির্দেশনাও আছে এমন।
তিনি আরো বলেন, আমাকে এরশাদের মৃত্যুমুখ দেখতে দেওয়া হয়নি তবে একমাত্র ছেলে এরিককে নিয়ে শিগগিরই রংপুরে যাবো। কারন এরিকের বাড়ি পল্লী নিবাসেই দাফন করা হয়েছে এরশাদকে। সেখানে এখন আর কারো যেতে বাঁধা নেই। ইনশাল্লাহ ছেলেকে সাথে নিয়েই রংপুরে গিয়ে এরশাদের কবর জিয়ারত করে আসবো।
এদিকে, বিদিশা সিদ্দিক তাঁর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে লিখেছেন, একমাত্র সন্তান এরিক এরশাদকে কাছে পেতে যুদ্ধ ঘোষণা করলাম। এবার শুরু ছেলেকে উদ্ধার করার যুদ্ধ।
উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে এরশাদ-বিদিশার চূড়ান্ত বিবাহ বিচ্ছেদ হবার পর একমাত্র সন্তান এরিক প্রশ্নে আইনী লড়াইয়ে অবতীর্ণ হন সাবেক এই দম্পত্তি। অবশেষে বিষয়টি উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ায়। উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় এরিক মা এবং বাবার সান্নিধেই থাকার সিদ্ধান্ত দেয় আদালত। আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আপোষ-রফার মাধ্যমে পালা করে মা বিদিশা এবং বাবা এরশাদের কাছেই পালা করে থাকতেন এরিক। তবে ছেলের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বেশির ভাগ সময়ই বাবা এরশাদের সাথে ছিল এরিক।চলতি বছরের ১৪ জুলাই সাবেক স্বামীর মৃত্যুর পর বারিধারার প্রেসিডেন্ট পার্কেই ছিলো এরিক।