গেল উপজেলা নির্বাচনে দলীয় নির্দেশনা না মেনে বিরোধী প্রার্থী হওয়া, তাকে সমর্থন ও সহযোগিতা করায় শাস্তি পেতে যাচ্ছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অনেক নেতা। এর মধ্যে অন্তত ৬০ এমপি-মন্ত্রীও রয়েছেন।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, সামনে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন। এই নির্বাচনে যাতে কেউ দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যেতে না পারে সেজন্য দলের পক্ষ থেকে আগে-ভাগেই এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিরোধিতাকারীদের শাস্তি দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিপক্ষে যেসব সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা আওয়ামী লীগের নেতা কাজ করেছেন, তাদের কারণ দর্শানোর চিঠি পাঠানো হচ্ছে। শনিবার থেকেই এ চিঠি পাঠানো শুরু হতে পারে।
এ ছাড়া যারা নৌকার বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন, তাদের সাংগঠনিক পদ স্থগিত করার পাশাপাশি শোকজ করা হচ্ছে। শোকজের পর দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত জানান দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে বৈঠকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের নাম উল্লেখ করা হয়নি।
জানা গেছে, গত মার্চে অনুষ্ঠিত চার ধাপের উপজেলা নির্বাচনে ৫৫ জন সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে অভিযোগ পাওয়া যায়। এপ্রিলে শোকজ করার কথা থাকলেও অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সময় নেওয়া হয়। পরে পঞ্চম ধাপের উপজেলা নির্বাচনেও অনেকে নৌকা প্রতীকের বিরোধিতা করেন। তাই দলের অনেক কেন্দ্রীয় নেতা শাস্তির পক্ষে মত দেন। সব মিলে ৬০ জন সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ আছে, যাদের মধ্যে অন্তত ৬ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় অধিকাংশ উপজেলায় বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা। এর মধ্যে নৌকার প্রার্থীকে হারিয়ে ১৪০টি উপজেলায় জয় পেয়েছেন বিদ্রোহীরা।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ গণমাধ্যমকে বলেন, দলীয় সিদ্ধান্তের বিরোধিতাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। আগামীকাল থেকেই চিঠি পাঠানো শুরু হতে পারে।
আওয়ামী লীগ সূত্র জানিয়েছে, দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কাজ করায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন হারাতে পারেন সংসদ সদস্যরা- বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে অনুষ্ঠিত দলের সংসদীয় কমিটির সভায় প্রধানমন্ত্রী এমন ঘোষণা দিয়েছেন। এর আগে ৭ জুলাই এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও একই রকম আভাস দেন।