দেশের চলমান ভয়াবহ ডেঙ্গু পরিস্থিতির মাঝে এডিস মশার বাচ্চা বা লার্ভা ধ্বংস করার নতুন উপায় খুঁজে পেয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) মৎস্য বিজ্ঞান অনুষদ। পরিস্থিতি মোকাবেলায় মঙ্গলবার (৬ আগষ্ট) ক্যাম্পাসের ড্রেনে আট হাজার মশাখেকো মাছ (মসকুইটো ফিশ) অবমুক্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) মৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের আয়োজনে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. লুৎফুল হাসান এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এরপর তার নেতৃত্বেই মশাখেকো মাছ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ড্রেনে অবমুক্ত করা হয়।
এছাড়া আগামী বৃহস্পতিবার এই মাছ শহরের বিভিন্ন ড্রেনে ছাড়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটু। তিনি আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
গবেষক দলের প্রধান ফিশারিজ ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. হারুনুর রশীদ জানান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১০ বছর আগে মসকুইটো ফিশ অ্যাকুরিয়াম ফিস হিসেবে বাংলাদেশে আসে। পরে এটি বিভিন্ন মুক্ত জলাশয়ে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে চট্টগ্রামের বিভিন্ন ড্রেন ও নর্দমার নোংরা পানিতে মশাখেকো মাছের সন্ধান পাই। এসব মাছ মশার ডিম খাবার হিসেবে গ্রহণ করে।
গবেষণায় পাওয়া তথ্য থেকে জানা গেছে, মশার বাচ্চা বা লার্ভা ভক্ষমে সক্ষম এমন দেশীয় মাছ যেমন খলিশা, দারকিনা, জেব্রা ফিশ নর্দমার নোংরা পানিতে বেশিদিন বাঁচতে পারে না। অন্যদিকে প্রচণ্ড নোরা পনিতে অনায়েসেই জীবনযাপন করতে পারে মসকুইটো ফিশ। তাই নর্দমার মশা নিধনে এই মাছই সবচেয়ে বেশি উপযোগী।
ভিসি অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান বলেন, দেশে চলমান ডেঙ্গুর ভয়াবহ পরিস্থিতিতে এডিস মশার বংশ বিস্তার রোধে নতুন নতুন উপায় শিখতে হবে। এক্ষেত্রে মশা নিধনের বায়োলজিক্যাল পদ্ধতিটি ব্যবহার করা যায়। যেটা হলো মাছ দিয়ে মশা ভক্ষণ করানোর মাধ্যমে মশার প্রকোপ কমানো।
বাকৃবি গবেষকরা জানিয়েছে, এই মশাখেকো মাছ ড্রেনে ছাড়লে মশা নিধন করা সম্ভব।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে করেন মাৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. গিয়াসউদ্দিন আহম্মেদ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি অধ্যাপক ড. মে. জসিমউদ্দিন খান, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল হকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। (নিউজ ডেক্স)