নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদের স্বেচ্ছাচারিতায় ডুবতে বসেছে সাংগঠনিক নিয়ম নীতি। সর্বক্ষেত্রে নিজেকে বড় মাপের নেতা দেখাতে গিয়ে সংগঠনটিকে বিভক্তির দিকে ঠেলে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠে আসছে নেতা ও কর্মীদের কাছ থেকে।
ইতিমধ্যেই পুর্নাঙ্গ কমিটি সাজাঁতে গিয়ে নিজের মনগড়া সিদ্ধান্তের কারনে এই গুণধর নেতার বিরুদ্ধে স্থানীয় মিডিয়াতে উঠে এসেছে নানা অভিযোগ। নিজের পদকে ব্যবহার করে সংগঠনটি শক্তিশালী করার পরিবর্তে তার কর্মকান্ডেই অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়ছে জেলার এই সংগঠনটি।
কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে সাংগঠনিক নিয়ম নীতিকে তোয়াক্কা না করে নিজের মনগড়া নিয়ম প্রতিষ্ঠা করে আবারও সাংগঠনিক কান্ড জ্ঞান হীনতার পরিচয় দিলেন মামুন মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টম্বর) বিকেলে খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও মুক্তির দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে জেলা বিএনপি।
সেই মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলো না জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনির। তবে সেখানে উপস্থিত ছিলো জেলা বিএনপির তিনজন সহ-সভাপতি মনিরুল ইসলাম রবি, নাছির উদ্দিন, নজরুল ইসলাম টিটু। সাংগঠনিক নিয়ম অনুযায়ী এ মানব বন্ধনের সভাপতিত্ব করার কথা ছিলো মনিরুল ইসলাম রবি আর তিনি না করলে সেখানে অন্য দুইজনের একজন সভাপতিত্ব করবেন।
কিন্তু মানববন্ধন সঞ্চালনা কারী যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল হক রিপনকে নিদের্শ দেন এ কর্মসূচির সভাপতিত্ব করবেন মামুন মাহমুদ নিজেই। সেই নির্দেশেই সঞ্চালক অধ্যাপক মামুনের নাম প্রকাশ করেন।
তার এই সাংগঠনিক কান্ড জ্ঞানহীনতার কারনে জেলা বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে কমিটির বাইরে থাকা অনেক নেতাই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কেউ বা সাংগঠনিক নিয়মের কথা তুলে ধরেছেন ঠিক এই ভাবে।
মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি এ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, একটা রাজনৈতিক বা সামাজিক সংগঠনের নিয়ম অনুযায়ী কোন কর্মসূচিতে সভাপতি উপস্থিত না থাকলে সেখানে সহ-সভাপতি যে থাকবেন, সেই ঐ অনুষ্ঠানের সভাপত্বি করবে। আর এটাই সাংগঠনিক নিয়ম।
এ বিষয় জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রাজীব বলেন, এটা কোন রাজনৈতিক সংগঠনের হিসেবের মধ্যে চলে না। একজন সহ-সভাপতি উপস্থিত থাকতে সেখানে সাধারণ সম্পাদক অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করবেন। সাংগঠনিক নিয়মের হিসেবে সভাপতি উপস্থিত না থাকলে সহ-সভাপতিই সভাপতিত্ব করবে। আর এটা পদাধিকার বলেই হয়।
নতুবা সহ-সভাপতি পদটি কেন রাখা হলো কারন সহ-সভাপতি সভাপতিকে সাংগঠনিক কার্যক্রমে সহযোগীতা করবে। তার অবর্তমানের সহ-সভাপতিই সব দেখা শুনা করবে। এটা না করে যদি তাদের উপস্থিতিতে সাধারণ সম্পাদক সভাপতিত্ব করে তাহলে এটা সাংগঠনিক কান্ড জ্ঞানহীনতার পরিচয় তুলে ধরার সামিল।
সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমিন বলেন, বিএনপির রাজনীতি মানেই কোন সাংগঠনিক নিয়ম নীতি মানা হয় না। কারন এখানে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ব্যক্তিত্বর কাছে অন্য কারো মূল্য নেই। কোন কর্মসূচিতে সভাপতি অন-ুউস্থিত কিন্তু সহ-সভাপতি উপস্থিত থাকার পরও সাধারণ সম্পাদক সভাপতিত্ব করেন। তাহলে উপস্থিত সহ-সভাপতিদের রাজনৈতিক ভাবে দেউলিয়া হওয়ার সামিল।
জেলা যুবদলের সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু বলেন, যদি কেউ এটা করে তাহলে সেটা সংগঠন বিরোধী। এটা কখনই হয় না আর কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ডের মধ্যে পরে না। এটা সাংগঠনিক জ্ঞানহীনতার পরিচয় ছাড়া আর কিছুই না।
আর এযাবৎ পর্যন্ত জেলা বিএনপি তাদের কর্মকান্ডে এই সকল কারনেই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে এসেছে। তারা এখনও সহযোগী সংগঠন গুলোর তাদের একই প্লাটফর্মে নিতে পারেনি।
জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনি বলেন, সাংগঠনিক নিয়ম হিসেবে সহ-সভাপতি উপস্থিত থাকতে কখনই সাধারণ সম্পাদক সভাপতিত্ব করতে পারে না। তবে সভাপতি যদি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকে সে ক্ষেত্রে ভিন্ন বিষয়।