নারায়ণগঞ্জ বিএনপির রাজনীতিতে সমালোচিত নাম এ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খান। সংগঠন বিরোধী কর্মকান্ডের কারনে দলীয় নেতা ও কর্মীদের কাছে তাকে নিয়ে রয়েছে বেশ বিতর্ক।
ক্ষমতাশীনদের সাথে আতাঁত করে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ, বিগত নাসিক নির্বাচনে দলের সাথে বেঈমানী, আইনজীবি সমিতির নির্বাচনে গোপনে দলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কাজ করা সহ জেলা ও মহানগর বিএনপির মূল ধারার রাজনীতি থেকে ছিটকে পরা নেতাদের নিয়ে আলাদা ব্যানারে দলীয় কর্মসূচি পালনের নামে বিভক্তি সৃষ্টির অভিযোগ রয়েছে যার বিরুদ্ধে।
নানা অভিযোগে অভিযুক্ত এই নেতা আদালত পাড়ায় নিজের অবস্থান ধরে রাখতে কুটকৌশল অবলম্বনের বৃথা চেষ্টা বিএনপিপন্থি আইনজীবিদের হাতে নাস্তানাবোদ হয়েছেন একাধিবার। আদালত পাড়ায় সেই কৌশলে ব্যর্থ হওয়ার পর নিজেকে মিডিয়াতে আলোচনায় রাখতে খোদ দলের মহাসচিব মির্জা
ফখরুল ইসলাম আলমগীর সহ জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনির, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সাংসদ এ্যাড. আবুল কালাম ও সাধারণ সম্পাদক এটি এম কামালের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকেছেন নিজ বলয়ের নেতাকে দিয়ে। যা স্থানীয় মিডিয়াতে প্রকাশ হয়েছে বেশ জোড়ে সোড়ে।
তবে তার এই কর্মকান্ড নিয়ে কি ভাবছেন জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ। সে বিষয় জানতে চাইলে তারা “দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস”কে জানান তাদের ব্যক্তিগত মতামত।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, যদি তাদের কোন আক্ষেপ থাকে সেটা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দদের সাথে আলোচনা করতে পারতো। সেটা না করে কোর্টের স্বরনাপন্ন হয়ে দাবি করা এটা সংগঠন বিরোধী।
মহানগর বিএনপির সভাপতি এ্যাড. আবুল কালাম বলেন, রাজনৈতিক দলের সদস্য হলেই সমর্থিত হয় না। কারন দলের অনেক সদস্য আছে যারা নির্বাচন আসলে দলের জন্য কাজ করে কিন্তু কোন পদ পদবির জন্য কাজ করে না। আরেকটি গ্রুপ আছে যারা সব সময় দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বেড়ায় এটা তাদের কাজ। এখন দেখার বিষয় সে বিদ্রোহী কমিটির লোক, যার কারনে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ তাদের সমর্থন করেনি। আর তারা সব সময়ই বিদ্রোহ করে এসেছে।
সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল বলেন, যে মামলাটি করেছে সে দীর্ঘ দিন ধরে দলের সংগঠন বিরোধী কর্মকান্ড করে এসেছে। তারা সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছে। এই মামলা করে প্রমান করে দিয়েছে সে এই দলের কেউ না। কারন যে সময় দলের চেয়ারপার্সন মিথ্যা মামলায় কারাগারে আর সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে আসতে পারছে না। সেই সময় সরকারের মত বিএনপির বিরুদ্ধে মামলা করে প্রমান করেছে তারা দলের কেউ না। এটা আমরা রাজনৈতিক ভাবে প্রতিহত করবো।
জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান রোজেল বলেন, আসলে দলের এই দুঃসময়ে এই ধরনের কর্মকান্ড মেনে নেয়া যায় না। তারা নেতৃবৃন্দদের সাথে আলোচনা করতে পারতো। তা না করে আদালতে যাওয়াটা সঠিক হয়নি। এটা অবশ্যই সংগঠন বিরোধী কাজ।
মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, এটা অবশ্যই সংগঠন বিরোধী কাজ কারন তারা মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দদের সাথে আলাপ না করে আদালতের স্বরনাপন্ন হয়েছে। যিনি মামলার বাদি সে কখনই ১০নং ওয়ার্ডের বৈধ কমিটির সভাপতি ছিলো না। তার কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর ছিলো না। সেটার অনুমোদন দিয়েছে এ্যাড. সাখাওয়াত।
তিনি আরও বলেন, সে মামলায় উল্লেখ করেছে বিএনপি যাতে দলীয় কোন কর্মসূচি পালন করতেনা পারে। আমি মনে করি সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্যই সাখাওয়াত এই মামলা করিয়েছে।
মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবুল কাউছার আশা বলেন, আওয়ামী লীগ চায় না আমরা রাজনীতি করি। ঠিক তারাও চায় না আমরা রাজনীতি করি। আগামী ১৮ তারিখ আমাদের একটি কর্মসূচি আছে সেটা পন্ড করাই তাদের এই চেষ্টা। এটার পিছন থেকে ইন্ধোন জোগাছে এক দল ছুট নেতা। সে আওয়ামী লীগের হয়ে দলের বিরুদ্ধে কাজ করছে। নারায়ণগঞ্জ বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্য।
জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমিন বলেন, দলের এই দুঃসময়ে যখন চেয়ারপার্সন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে সফল ভাবে দলকে পরিচালনা করছে। সেই সময় দলের এক নেতা সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য মহাসচিব ও জেলা ও মহানগর বিএনপির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এটা ন্যাক্কার জনক ঘটনা।
তিনি আরও বলেন, সীমানা জটিলতার কারনে জেলা ও মহানগর বিএনপির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারতো। কিন্তু তাদের সাথে মহাসচিবকে জড়িয়েছে আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
জেলা যুবদলের সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু বলেন, এটা দুঃখ জনক দলের দুঃসময়ে দলের মধ্যে থেকে দল বিরোধী কাজ করেছে। আমরা এটা কখনই আশা করিনি।
মহানগর যুবদলের সভাপতি খোরশেদ বলেন, এটা চরম অন্যায় করেছে। দল বিরোধী কাজ করছে। এই ঘটনাটি একটি গানের সাথে মিলে যায় “ র্স্প হইয়া দংশন করো ওঝা হইয়া সারো” মামলা হওয়ার পর সবার আগে সেই প্রতিবাদ দিয়েছে। যার পিছনে থেকে বাদী রাজনীতি করে। এটা তারই ইন্ধোনে হতে পারে অসম্ভব কিছু না।
জেলা আইনজীবি ফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. আব্দুল হামিদ ভাষানী বলেন, এমনিই আওয়ামী লীগের মামলার কারনে বিএনপি মাঠে দাড়াতে পারে না। সেখানে দলের মহাসচিবের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সাখাওয়াত। সুন্দর একটা বাগানকে নষ্ট করার জন্য। আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য এটা করা হয়েছে। মামলার বাদী যার পিছনে রাজনীতি করে, সে বিগত নাসিক নির্বাচনের সময় সরকারী দলের নেতাদের কাছ থেকে ২ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা নিয়েছে।
এছাড়াও সে বিভিন্ন র্কমকান্ডে রাজনৈতিক ভাবে বির্তকিত। আমি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দদের কাছে আহবান করবো এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য।
জেলা ছাত্র দলের সভাপতি মশিউর রহমান রনি বলেন, যেহেতু দলের মহাসচিবের বিরুদ্ধে মামলা করেছে আমি এটার পক্ষে না।