জায়গার দাগ নাম্বার পরিবর্তন করে ভূয়া ও জাল দলিলের দ্বারা প্রতিবেশীর জমি দখল নিতে প্রশাসন ও সন্ত্রাসী ব্যবহার করে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে বিএনপি নেতা আব্দুল হাই গংরা। এই বিষয়ে উভয় পক্ষের পাল্টা পাল্টি একাধিক মামলা দায়ের করা হলেও সুষ্ঠু সমাধানের পূর্বেই আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে জোরপূর্বক জায়গা অবৈধ দখলের মহাৎসবে মেতে উঠেছে এক সময়ের আলোচিত বিএনপি এই নেতা সাবেক বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী আব্দুল হাই।
তিনি প্রশাসন ও স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের ম্যানেজ করে সৈয়দপুর এলাকার মরহুম শেখ পাইয়া গাজী জোতের প্রায় ১০ একক জমি অবৈধ দখল ও আত্মসাতের পায়তারা করছে প্রতিনিয়ত। তার এই রূপ অনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে সহায়তা করছে পুলিশ প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তারা এবং সৈয়দপুর এলাকার চিহ্নিত একাধিক সন্ত্রাসীরা। এ বিষয়ে মরহুম শেখ পাইয়া গাজী জোতের সদস্যরা কোন সহায়তা পাচ্ছে না খুদ প্রশাসনের কাছ থেকে।
জানাযায়, নারায়ণগঞ্জ সদর থানাধীন সৈয়দপুর (জিএমসি) এলাকায় পৈত্তিক সূত্রে মালিকানাধীন মৃত শেখ পাইয়া গাজী জোতের জায়গার বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় অভিযোগ দিয়েও কোন লাভ হয়নি বলে জানায় ভূক্তভোগী জমির মালিকগন। উল্টো মিথ্যা মামলা ও প্রাণনাশের একাধিক হুমকি দিয়ে পুলিশের সহায়তায় এবং চিহ্নিত সন্ত্রাসী দ্বারা জোরপূর্বক জায়গা দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে আব্দুল হাই’র বিরোদ্ধে।
সূত্রমতে, সদর উপজেলাধীন সৈয়দপুর (জিএমসি) এলাকায় পৈত্তিক সূত্রে মালিকানাধীন মৃত শেখ পাইয়া গাজী জোতের জে.এল নং- সি.এস-১৭৭, এস.এ নং-৭৬, আর.এস-১৭ নং মৌজাস্থ সৈয়দপুর ‘ম’ খন্ড ১০ একর ৯৪ শতাংশ জমি প্রশাসন দিয়ে জোড়পূর্বক দখলের চেষ্টা করছে সাবেক বিএনপির সংসদ সদস্য আব্দুল হাই গং।
ভূক্তভোগী জমির মালিকবৃন্দরা নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় অভিযোগ করে গণমাধ্যমকে জানায়, সৈয়দপুর এলাকায় আব্দুল হাই গং এস.এ নং- ৭৭ এর মালিক হওয়ার প্রেক্ষিতে প্রতিবেশী জমির মালিক মরহুম শেখ পাইয়া গাজীর এস.এ নং-৭৬ দাগের জায়গা মালিকানা দাবী করে জোরপূর্বক দখল করার পায়তারা করছে দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন কৌশলে।
কিন্তু যাহার প্রকৃত মালিক সি.এস, এস.এ এবং আর.এস রেকর্ড অনুসারে মৃত শেখ পাইয়া গাজী’র ওয়ারিশ বৃন্দরা। ভূমিদস্যু আব্দুল হাই তার পুত্র একরামুল আলমকে বাদী করে গত ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে ১ম যুগ্ন জেলা জজ আদালত নারায়ণগঞ্জ দেওয়ানী মোকদ্দমা নং-২৪৫/২০১৯ একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।
উক্ত মামলাতে ৮নং অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন ১৯৯৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর তিনি বিজেসি হতে জমিটি ক্রয় করেন। কিন্তু ৭নং অভিযোগে উল্লেখ করেন ৩০/০৯/১৯৯৩ ইং তারিখ সরকার রিপিল অ্যাক্ট ২৪ আইনের বলে বিজেসিকে বিলপ্ত করিয়া উহার সমস্ত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি দায় দায়িত্ব সরকার গ্রহন করেন।
কিন্তু আব্দুল হাই গংরা উক্ত জাল দলিলে আরো উল্লেখ করেন বিলুপ্তির ১০দিন পূর্বে তিনি সরকার হতে টেন্ডারের মাধ্যমে ক্রয় করে মালিক হয়েছেন। যাহা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। কারন উক্ত দলিল নং-২৯৫৫ তে দেখাযায় তিনি বাংলাদেশ জুট কর্পোরেশন ঢাকা’র ভারপ্রাপ্ত সচিব আমিনুল ইসলাম বিগত ৭ই আগষ্ট ২০০২ তারিখ উক্ত দলিল দাতা হিসেবে সরকারের পক্ষে সম্পাদন করেন এবং স্বাক্ষর করেন।
উক্ত দলিলে আরো দেখাযায়, সি.এস-১৭৭ , এস.এ- ৭৭নং আর.এস্রৃ- ১৭ নং। কিন্তু বর্তমানে আব্দুল হাই প্রতিবেশী জমির মালিকের আর.এস-৭৬ নং দাগের জায়গা দখল করতে বিভিন্ন প্রকার পায়তারা করছে।
বর্তমানে হয়তো সন্ত্রাসী বাহিনী, না হয় পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চলছে দখলের নতুন কৌশল। শেখ পাইয়া গাজী জোতের পক্ষে মোঃ হযরত আলী নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় গত ১১ই সেপ্টেম্বর তারিখ লিখিত অভিযোগ করলে সদর মডেল থানা পুলিশের এসআই মোঃ শাহাদাৎ তদন্ত করে থানায় এসে এ প্রসঙ্গে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি ।
বাদীপক্ষ আরো জানায়, সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ আসাদুজ্জামানকে এ বিষয়ে বহুবার অবগত করা হলেও, তিনি কোন মামলা নেয়া যাবে না বলে অনিহা প্রকাশ করছে কোন একটি বিশেষ কারনে। বিষয়টিকে বর্তমানে জনমনে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
ভূক্তভোগীরা আরো জানায়, এই জমির বিষয়ে তারা যুগ্ম জেলা জজ, ১ম আদালত নারায়ণগঞ্জে দেওয়ানী মোকদ্দমা নং- ১৬৯/২০১৯ দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে চলমান রয়েছে। তাছাড়া আমরা এই বিষয়ে তদন্ত কারী পুলিশ কর্মকর্তাসহ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে যথাযত কাগজপত্র জমা দেয়ার পরও উক্ত জায়গায় আমাদের নির্মাণাধীন স্থাপনা কোন আইনের প্রেক্ষিতে প্রশাসনের সহায়তায় আব্দুল হাই এর ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা ভাংচুর করতে সাহস পাচ্ছে।
এ বিষয়ে ভূক্তভোগী জমির প্রকৃত মালিকগন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনাসহ নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোঃ জসিম উদ্দিন এবং র্যাব-১১ এর প্রধানের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সুষ্ট তদন্তের মাধ্যমে সুবিচার আশা করেন।