দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ
নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির যুব রাজনীতিতে কোন্দল ও দীর্ঘ মেয়াদী কমিটির ফলে দুর্বল হয়ে পড়ছে সংগঠনটির কার্যক্রম। দীর্ঘ প্রায় এক যুগের অধিক সময় পার হওয়ার ফলে নতুন নেতৃত্ব বিকাশে বড় বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে নারায়ণগঞ্জ যুবলীগে।
আর তৃতীয় বারের মত ক্ষমতা শুন্য বিএনপির অন্যতম সহযোগী সংগঠন যুবদলের কমিটি বাস্তবায়িত হলেও নিজেদের মধ্যে থাকা কোন্দল সংগঠনটিকে দুর্বল করে তুলেছে। যার ফলে নারায়ণগঞ্জে যুব রাজনীতি কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ হয়ে পরেছে।
এদিকে, ২০০৫ সালে ক্ষমতাশীন দল আওয়ামী লীগ শেষ বারের মত জেলা যুবলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। যেখানে সভাপতি আব্দুল কাদির ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মোঃ শহীদ বাদলকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়।
ঠিক একই কায়দায় তৎকালিন শহর যুবলীগের কমিটি ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। সেই কমিটিতে দায়িত্ব প্রদান করা হয় শহর যুবলীগের সভাপতি পদে শাহাদাত হোসেন সাজনু আর সাধারণ সম্পাদক পদে রাখা হয় আলী রেজা উজ্জ্বলকে।
এর কিছু দিন পর রাজনৈতিক মেরু করনের ফলে তৎকালিন পৌর মেয়র বর্তমান সিটি মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী ও নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের প্রভাবশালী সাংসদ শামীম ওসমানের মধ্যে দন্ধের সূচনায় কমিটি গুলোর সাংগঠনিক কার্যক্রম প্রায় নিস্তেজ হয়ে পরে।
এর কারন জেলা কমিটির সভাপতি ও শহর কমিটির সাধারণ সম্পাদক মেয়র আইভীর বোন জামাতা ও ছোট ভাই। অপরদিকে, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও শহর কমিটির সভাপতি শামীম ওসমানের ঘনিষ্ট সহচর। যারফল সূতিতে মেয়র আইভী ও শামীম ওসমানের কোন্দল এই সংগঠনটির মধ্যেও প্রভাব পড়তে শুরু করে।
এরপর সময়ের ধারাবাহিকতায় জেলা যুবলীগের সভাপতি জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মোঃ শহীদ বাদল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদ পদে আসীন হন। এছাড়াও জেলা যুবলীগের গুরুত্বপুর্ন পদে থাকা অধিকাংশ নেতাই জেলা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপুর্ন পদে স্থান পান। কিন্তু জেলা যুবলীগের নতুন কমিটির মুখ এখনও দেখতে পারেননি এই সংগঠনটির নেতৃবৃন্দরা।
অপরদিকে, এক যুগের অধিক শহর যুবলীগের দায়িত্বে থাকা ব্যর্থ কমিটির গুরুত্বপুর্ন পদে থাকা নেতারা এখনও আশায় বুক বেঁধে আছেন। পুনরায় মহানগর যুবলীগের কমিটির কর্তৃত্ব আকড়ে রাখতে। এরফলে নতুন নেতৃত্ব বিকাশে বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছেন উদীয়মান যোগ্য নেতারা।
এদিকে, গত বছরের ১৯ অক্টোবর জেলা ও মহানগর যুবদলের পুর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করার পর থেকে সাংগঠনিক কার্যক্রম তেমন একটা দেখা যায়নি। জেলা যুবদলে সভাপতি পদে শহীদুল ইসলাম টিটু ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনকে দায়িত্ব দিয়ে ২শ ১ সদস্য কমিটি ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। কিন্তু কমিটি ঘোষণা করার পর থেকে এই সংগঠনে থাকা পুর্নাঙ্গ কমিটির নেতাদের এক সাথে দলীয় কর্মসূচিতে দেখা মিলেনি। কেন্দ্রীয় কর্মসূচি গুলোতে হাতে গুনা গুটি কয়েক নেতার উপস্থিতি দেখা গেলেও সেটাও নিহায়েত কম।
অপরদিকে, মহানগর যুবদলের ২শ ১ সদস্য কমিটি ঘোষণা করা হলেও সেখানে সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের বিরুদ্ধে ব্যক্তি কেন্দ্রীক ও পরিবারতন্ত্রর অভিযোগ উঠে এসেছে। আর এই অভিযোগের সুত্র ধারে কমিটির গুরুত্বপুর্ন পদে থাকা অনেক নেতাই বিদ্রোহ করেছেন বেশ জোড়ে সোড়ে। তবে সেই বিদ্রোহীদের অবস্থা বিলিন হলেও একাই কমিটির বিরুদ্ধে লড়াই করছেন সংগঠনটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাগর প্রধান।
দলীয় কর্মসূচি থেকে শুরু করে সাংগঠনিক কার্যক্রম নিজের কর্মী বাহিনী নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন সাগর প্রধান। আর তার কর্মকান্ডে অনেকটাই কাবু হয়ে পড়েছেন সংগঠনটির সভাপতি সহ আরও অনেকেই।
এদিকে, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর যুবলীগ এবং যুবদলের কমিটি থাকলেও সেখানে সাংগঠনিক কার্যক্রম নেই বলেই চলে। একদিকে দীর্ঘ মেয়াদী কমিটি অন্যদিকে কোন্দল এই দুয়ের মিশ্রনে নারায়ণগঞ্জে যুব রাজনীতি কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।