মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী ও তার সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনায় আদালতে মামলা করেছেন সিটি কর্পোরেশনের আইন কর্মকর্তা জিএমএ সাত্তার। দীর্ঘ ২২মাস ১৮ দিন পুর্বে নগরীতে ফুটপাতে হকার বসানোকে কেন্দ্র করে ৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমান ও মেয়র আইভী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনায় বুধবার (০৪ ডিসেম্বর) বিকেলে সিটি কর্পোরেশনের আইন কর্মকর্তা বাদী হয়ে একাধিক ব্যক্তির নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৯শ থেকে ১ হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ফাহমিদা খাতুন মামলাটি আমলে নিয়ে সদর মডেল থানা পুলিশকে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার উল্লেখিত আসামীরা হলো, নিয়াজুল, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক শাহ নিজাম, মহানগর আওয়াামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জুয়েল হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সুজন, যুবলীগ কর্মী নাসির উদ্দিন ওরফে টুন্ডা নাসির, যুবলীগ নেতা জানে আলম বিপ্লব, যুবলীগ নেতা চঞ্চল মাহমুদ।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, মামলাটি আমলে নিয়ে সদর মডেল থানা পুলিশকে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালতের বিচারক।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর ও অন্যদের সঙ্গে নিয়ে পদযাত্রা শুরু করেন। বিকেল সাড়ে ৪টায় পদযাত্রাটি বঙ্গবন্ধু সড়কের চাষাঢ়া সায়েম প্লাাজার সামনে পৌঁছালে বিবাদীরা পিস্তল, রিভলবার, শটগান ও দেশী অস্ত্র নিয়ে চারদিক থেকে হামলা চালায়। সেই সঙ্গে বৃষ্টির মতো ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। মেয়রসহ তার সঙ্গে থাকা লোকজনকে হত্যার উদ্দেশ্যে এ হামলা চালানো হয়। হামলায় আইভীসহ ৪৩ জন গুরুতর আহত হন।
পরবর্তীতে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ঘটনার চারদিন পর ২২ জানুয়ারি সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলার এজাহার দেয়া হয়। কিন্তু থানা পুলিশ মামলা না নিয়ে জিডি নেয়।
এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা না নেয়ায় ২০১৯ সালের ৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে অভিযোগ করা হয়। তখন পুলিশ সুপার নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসিকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। কিন্তু ওসিও কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেননি। এরই প্রেক্ষিতে আদালতে মামলা করা হয়।
প্রসঙ্গত, ফুটপাতে হকার বসানোকে কেন্দ্র করে ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের চাষাড়ায় মেয়র আইভী ও তার সমর্থকদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে মেয়র আইভী, সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হন। এ ঘটনায় শামীম ওসমানের সমর্থক নিয়াজুল ইসলামকে প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে গুলি চালাতে দেখা যায়।