ফতুল্লায় আবারো আলোচনায় উঠে এসেছে সেই মাদক ব্যবসায়ীদের পীর সাহেব সাইফুল ইসলাম খোকন প্রধান। মাদক ব্যবসায়ীদের অর্থায়নে মাসের বেশীরভাগ সময়ে খোকনের দিনকাটে প্রতিবেশী দেশ ভারতের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে। ভারতে অবস্থানরত নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রভাবশালী মাদক ব্যবসায়ীদের সাথেই কাটে এ খোকন প্রধানের সময়।
খোকনের বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ডে বিরক্ত হয়ে ফতুল্লা ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড থেকে বহিস্কার করা হয়েছিলো। আর এ ফতুল্লা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের হাবিবুল কবির হাবিবের বিরুদ্ধে গনমাধ্যমে বিভিন্ন মিথ্যা ও বানোয়াট তা দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করাচ্ছে খোকন প্রধান।
হাবিবের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মাদক ও নারী সংক্রান্ত বিষয়ে খোকনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে কমিটির সকল সদস্যরা সাংগঠনিকভাবে খোকন প্রধানকে বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নেন। আমি ১.২.৩ নং ওয়ার্ডের সভাপতি হিসেবে সেই বহিস্কারের কাগজে সই করাটাই ছিলো অপরাধ। উল্টো উদোড় পিন্ডি ভুদোড় ঘাড়ে চাপাতে বানোয়াট তথ্য দিয়ে খোকন আমার বিরুদ্ধে কৎসা রটাচ্ছে।
বরিশাইল্লা টিপু প্রসঙ্গে হাবিব জানান,প্রায় ১ বছর পুর্বে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ আলহাজ একেএম শামীম ওসমান এমপি মহোদয়ের কাছে ফুল দিয়ে তিনি দলে যোগদেন। সেখানে আমার কোন সর্ম্পক নেই।
অথচ সেই ফুল দেয়ার ষ্টেজে খোকন প্রধান স্বশরীরে উপস্থিত থাকলেও বর্তমানে সেটা আমার কাধে চাপাচ্ছে। তিনি আরও জানান,একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে ইউনিয়নে আমার ব্যাপক সুনাম রয়েছে যা ক্ষুন্ন করতেই খোকন প্রধানরা উঠেপড়ে লেগেছে।
খোকন প্রধান বেশীরভাগ সময় ভারতে অবস্থান করে এবং তার আয়ের উৎস কি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু মাদক ব্যবসায়ীদের শেল্টার দেয়া এবং নারী দিয়ে ব্যবসা করানোর মত একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে সেক্ষেত্রে সেটাও তার আয়ের উৎস হতে পারে।
তিনি আরও বলেন,জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান,তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং নারায়ণগঞ্জের গনমানুষের নেতা শামীম ওসমান নীতি ও আদর্শের রাজনীতিতে পরিচ্ছন্ন ব্যক্তির প্রয়োজন কোন মাদক বিক্রেতার শেল্টারদাতা ও নারী ব্যবসায়ীদের জন্য নয়।
উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগে খোকন প্রধানের সাথে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী শাহিনের মোবাইলে কথোপকথন ফাঁস হয়েছে। মোবাইলে কথোপকথনে খোকনের দাবি, মামার দরবারের মুরিদ না হয়ে কেউ ফতুল্লা স্টেশন এলাকায় মাদক ব্যবসা করতে পারে না।
অডিও ফাঁস হওয়ার খবরে স্থানীয় প্রশাসন ও সাংবাদিক মহলে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ১৩ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডের অডিওতে বেশ কয়েকবার তিনি মাদক ব্যবসায়ী শাহিনের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করেছে।
এছাড়া ফতুল্লা মডেল থানার ওসির সাথে তার কথা হয় এবং ওসি তার কথা গুরুত্ব দিয়ে থাকেন বলেও উল্লেখ করেন।
এক পর্যায়ে তিনি বলেন, মামার দরবারের মুরিদ না হলে কেউ ফতুল্লা স্টেশনসহ আশপাশের এলাকায় মাদক ব্যবসা করতে পারেন না। সবাই আমার মাজারের মুরিদ হয়ে ব্যবসা করে আসছে।
মাদক ব্যবসায়ী শাহিনের সাথে অডিও ফাঁস হওয়ার পরে ৬ জুলাই বিকাল ৪টায় ফতুল্লা রির্পোটার্স ইউনিটির কার্যালয়ে জরুরী সভায় সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হওয়ায় খোকন প্রধানকে ফতুল্লা রিপোর্টার্স ইউনিটি হতে বহিস্কার করা হয়েছে।
সভায় সর্বসম্মতিক্রমে খোকন প্রধানকে ফতুল্লা রিপোর্টার্স ইউনিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ সহ প্রাথমিক সদস্য পদ হতে বহিস্কার করা হয়।
১২ জুলাই শুক্রবার ফতুল্লা রেলষ্টেশন এলাকায় ফতুল্লা ইউনিয়ন ১, ২, ৩নং ওয়ার্ড কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ কর্তৃক এক জরুরী সভায় সাইফুল ইসলাম খোকন প্রধানকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়। অসামাজিক, অনৈতিক ও সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপের জন্য ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক ও সকল সদস্য পদ থেকে দল থেকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়।
১২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা থাকায় খোকন প্রধানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। একজন নারী আদালতে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। ঐ মামলায় আদালত তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু করেন। ওয়ারেন্টের ভিত্তিতেই ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পরে ঐ মামলায় কিছু দিন জেল খেটে জামিনে বের হয়ে আসে।
এবিষয় খোকন প্রধানে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তাকে পাওয়া যানি।