দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে এমপি-মন্ত্রিত্ব ছেড়ে নির্বাচনের কাজ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ পেশাজীবী সম্মিলিত পরিষদ কর্তৃক বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ আহ্বান জানা।
বিএনপি চেয়ারপারসনের ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনের সঞ্চালনায় এবং ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবি ফোরামের সাধারণ সম্পাদক এড. ফজলুর রহমান, বিএফইজে সভাপতি রুহুল অমিন গাজী,ডিউজে সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী প্রমূখ।
মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল খুব দুঃখ করে ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, যদি ফখরুল ইসলাম নির্বাচনের প্রচারণায় অংশ নিতে পারেন তাহলে আমি পারবো না কেন। ১০০ বার পারবেন। এই মুহূর্তে মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করুন। আসুন একসাথে নির্বাচন করি। আইন তো তাই বলে। আইন বলে আপনি মন্ত্রী বা এমপি থাকলে নির্বাচনের প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না।
তাই আপনি মন্ত্রিত্ব এবং এমপিত্ব ছেড়ে দিয়ে আসেন, আপনি নৌকার জন্য নির্বাচনী প্রচারণা চালান আর আমি ধানের শীষের প্রচারণা চালাই। দেখা যাক জনগণ কোন দিকে থাকে। আজকে একটা কথা পরিষ্কার করে বলতে পারি যে ক্ষমতা থেকে নেমে এসে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করুন। তারপর আসুন আমরা নির্বাচন করি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশে গণতন্ত্র নেই। গণতন্ত্রকে পুরোপুরি সমাহিত করা হয়েছে। আজকে আপনারা উৎসব পালন করছেন খুব ভালো কথা।কিন্তু দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে আপনারা উৎসব পালন করছেন। এই উৎসবে এদেশের মানুষের হৃদয় কতটা থাকবে সেটাই দেখার বিষয়। এদেশের মানুষকে অসুস্থ রেখে তাদের এ উৎসব কতটুকু ফলপ্রসূ হবে সেটা এখন ভেবে দেখতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, খালেদা জিয়া এতোটা অসুস্থ নয় যে তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে হবে। এই কথা আমরা আপনার কাছ থেকে আশা করি না। আশা করি দেশনেত্রীর সুচিকিৎসার জন্য সঠিক কথা বলবেন। খালেদা জিয়ার জামিন এখন আদালতের কাছে বহাল নেই । এখন আপনাদের কোটে বহাল। বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতি সকল দায়-দায়িত্ব আপনাদের। বেগম খালেদা জিয়ার যদি কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয় তাহলে এর সকল দায়ভার আপনাদেরকে নিতে হবে।
ফখরুল বলেন, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজ গণতন্ত্রের জন্য কারাবরণ করে আছেন। তাকে বেআইনিভাবে মিথ্যা মামলায় আটক করে রাখা হয়েছে। বার বার বলা হচ্ছে আদালত তাদের দায়িত্ব পালন করছে। সরকার দেশের সকল রাষ্ট্রযন্ত্রকে দখল করার পাশাপাশি বিচার বিভাগকে দখল করে নিয়েছে। বার বার বলেছি এখনো বলছি, খালেদা জিয়াকে যে আইনের ধারায় আটক করে রাখা হয়েছে সেই আইনের ধারা অনেক মানুষকেই আপনারা জামিন দিয়েছেন।
আমার বিচার বিভাগের কাছে প্রশ্ন। মানুষ সব জায়গায় নির্যাতিত-নিপীড়িত হলে সর্বশেষ বিচার বিভাগের কাছে যায় যাতে তারা আশ্রয় পায়। কিন্তু সেই জায়গা থেকে একটা মানুষের উপর নির্যাতন করা হচ্ছে যে কিনা দেশের ১৬ কোটি মানুষের জনপ্রিয় নেত্রী।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ সরকার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বের হতে দিচ্ছে না তার একটাই কারণ যদি তিনি বাইরে থাকেন তাহলে জনগণ তাদের মসনদ ভেঙ্গে ফেলবে। এ কারণে তাকে আটকে রেখেছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে আটকে রেখেছে। পরিষ্কার করে বলেছি, বার বার বলেছি, এখনও বলছি, সময় থাকতে দেয়ালের লেখা পড়ুন। মানুষের চোখের ভাষা বুঝুন। মানুষের কথা বোঝার চেষ্টা করুন। এভাবে জোর করে, দখল করে, নির্যাতন করে দাবিয়ে রেখে, নির্যাতন করে, গুম খুন করে ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না।
আমি আপনাদের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। তিনি বলেছিলেন, বাংলার মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না। এখনো বলতে চাই দেশের মানুষকে দাবিয়ে রাখা যাবে না। বাংলা মানুষকে কখনোই দাবিয়ে রাখা যায় নাই। নির্বাচন দিচ্ছেন। নির্বাচন নির্বাচন খেলা করছেন সেটা আমরা জানি।
তারপরও আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি। কারণ সেটা খুব পরিষ্কার করে বলেছি, আমরা দেশে গণতন্ত্রের মুক্তির সংগ্রামে দেশ নেত্রীর মুক্তি সংগ্রামের একটা আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনটাকে হাতিয়ার হিসেবে নিয়েছি।