সাংগঠনিক ভাবে পিছিয়ে যুবলীগ
দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবলীগ ও যুবদলের মধ্যে প্রকাশ্যে দন্ধের দাগ দেখা গেলেও ক্ষমতাশীনদের চেয়ে সাংগঠনিক ভাবে এগিয়ে বিরোধীরা। ক্ষমতাশীন দল আওয়ামী লীগে উত্তর ও দক্ষিন মেরুর বিভক্তির রাজনীতির ফলে শহর যুবলীগ এখনও মহানগর কমিটির রুপ পায়নি। এছাড়াও সংগঠনটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে থাকা দন্ধই অস্তিত্ব বিলিন হওয়ার পথে সাংগঠনিক কার্যক্রম।
অপরদিকে, মহানগর যুবদলের মধ্যে প্রকাশ্যে দন্ধ দেখা গেলেও সাংগঠনিক ভাবে নিজের অবস্থান অনেকটাই শক্তিশালী করে তুলেছেন দুই আংশের নেতারা। ২শ ১ সদস্য বিশিষ্ট পুর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করার পর থেকে সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ এর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠে আসে।
এর ফলে কমিটির সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাগর প্রধান সহ অনেকেই প্রকাশ্যে কমিটি অবৈধ ঘোষণা করেন। সেই সাথে এই কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে পুনরায় যোগ্য নেতাদের মূল্যায়ন করে নতুন কমিটি ঘোষণা আহবান জানান। পাশাপাশি দলীয় কর্মসূচি গুলো পালন করে যাচ্ছেন প্রতি নিয়তই।
এদিকে, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী ও ৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমানের মধ্যে প্রকাশ্যে দন্ধের সূচনা হওয়ার পর রাজনীতিতেও এর কিছুটা প্রভাব পড়েছে। এর ফলে শহর যুবলীগের কমিটিতে থাকা সভাপতি সাহাদাত হোসেন সাজনু শামীম ওসমান বলয় এবং সাধারণ সম্পাদক আলী রেজা উজ্জ্বল মেয়র আইভীর ভাই হওয়াতে তাদের মধ্যেও এ দন্ধের প্রভাব পড়তে দেখা যায়।
যার ফলশ্রুতিতে সংগঠনটির সাংগঠনিক কার্যক্রম দুর্বল হয়ে পড়ে। যুবলীগের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি থাকলেও সেটা তেমন একটা পালন করতে দেখা যায় না। যদিও মাঝে মধ্যে কর্মসূচি পালন করেন সেই ক্ষেত্রেও সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আলাদা ভাবে করেন। দুইজনকে এক সাথে কখনই দেখা যায়নি।
অন্যদিকে, মহানগর যুবদলের কমিটি ঘোষণার পর থেকেই ফুসে উঠেছে রাজনৈতিক অঙ্গনে ন্যায পদ থেকে বঞ্চিত যুবদল নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি নারায়ণগঞ্জে বিএনপি’র রাজনীতিতে এড. তৈমূর আলম খন্দকার ও মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ কামিটির দায়িত্বে পেলেই পরিবারতন্ত্রে অবস্থ্য হয়ে পড়ে।
যুবদল নেতাদের অভিযোগে উঠে জানা যায়, কমিটিতে যাদেরকে ঠাঁই দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে অধিকাংশ নেতাকর্মী বিএনপির হরতাল অরবোধ সহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে রাজপথে ছিলো না। তারা শুধুমাত্র খোরশেদের ঘনিষ্টজন হিসেবে ঘরে বসেই পদ পদবী পেয়েছেন। আর যারা রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন, শত শত মামলা হামলায় জর্জরিত হয়েছেন তাদের কোন নাম কমিটির মধ্যে রাখা হয়নি।
তারা আরও বলেন, খোরশেদ তার ব্যক্তিগত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে বিভিন্ন সভাসমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দদের দোকানদার বলে আখ্যা দিলেও, সেই দোকানদারদের ধারস্থ হয়েই কোন সম্মেলন ছাড়া নিজের মন গড়া লোকদের নিয়ে কমিটি ভাগিয়ে এনেছেন। আর এই কমিটিতে গুরুত্বপুর্ণ পদে স্থান পেয়েছে তাদের মনগড়া নেতারা। এর ফলে অনেক যোগ্য নেতাই পদ থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায়, মহানগর যুবদলের সভাপতি খোরশেদ নিজের অস্থিত্ব টিকিয়ে রাখতেই তার একাংশের নেতা ও কর্মীদের নিয়ে দলীয় কর্মসূচি পালন করছেন নাম মাত্র ফটোসেশনের মাধ্যমে।
অপরদিকে, সংগঠনটির সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাগর প্রধান একাই নিজের কর্মী বাহিনী নিয়ে দলীয় কর্মসূচি গুলোতে মাঠ দাব্রিয়ে বেড়াছেন বেশ কায়দা করে। তবে ব্যক্তি সাগর প্রধানের রাজনৈতিক কৌশলতার কাছে অনেকটাই পরাস্ত খোরশেদ। এছাড়া এই কমিটিতে থাকা অনেক বিদ্রোহী নেতারা রাজনৈতিক মাঠে না থাকলেও সাগর প্রধানের রাজনৈতিক কৌশলতায় তারা মুগ্ধ।
সর্বপরি নারায়ণগঞ্জ দুই রাজনৈতিক সংগঠন মহানগর যুবলীগ ও যুবদলের নেতাদের মধ্যে দন্ধ বিরাজমান থাকলেও। সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে বিএনপির যুবদল। যা ক্ষমতাশীন দল আওয়ামী লীগের যুবলীগ সংগঠনে দেখা যায়নি।