দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ আয়শা রাজপথের এক লড়াকু সৈনিকের নাম। যিনি ২০০৬ সালে তৎকালিন সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে গিয়ে পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বহুবার। শুধু তাই নয় নির্যাতনের পাশাপাশি নিজেকে বস্ত্রহীন হতে হয়েছে রাজপথে।
যা তৎকালিন সময় মিডিয়াতে প্রকাশ পেয়েছে বেশ জোড়ে সোড়ে। আর সেই অপরাধে স্বামী হারা হতে হয়েছে তাকে। তবুও দলের আর্দশকে বুকে লালন করে লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন আওয়ামী লীগের এই কর্মী। কখনই পদ পদবির লোভ তাকে গ্রাস করতে পারেনি। আজ সেই আয়সা মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন অথচ তার পাশে নেই দলটির রথি মহারথিরা।
হ্যাঁ আমরা নারায়ণগঞ্জের সেই আয়শার কথা বলছি যিনি এখন বাবা মার সংসারে এক মাত্র কন্যা সন্তান তিশাকে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
প্রায় ১১ বছরের অধিক সময় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেও দলটির দুঃসময়ে যারা রাজপথে থেকে আন্দোলন সংগ্রাম করেছে তাদেরই এক জন এই আয়সা।
যিনি ২০০৬ সালে পুলিশি নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর থেকেই এই অসহায়ত্বকে সঙ্গী করে নিয়েছেন। ডাক্তারি রির্পোট হিসেবে তিনি কিডনী সমস্যার পাশাপাশি চোখে ছানি ও পুলিশের লাঠির আঘাতে মাথায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রতি নিয়তই যন্ত্রনায় ছটফট করছে এই অসহায় আওয়ামী লীগের কর্মীটি।
শনিবার (২৯ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে চানঁমাড়ি মসজিদ সংলগ্ন দাউদ মিয়ার ৪র্থ তলায় জরাকির্ন বাড়ীতে বাবা মার সাথে অসহায়েত্বের দিনযাপন করছেন। ঠিক মত কথা বলতে পারছেন না, কানেও কম শুনছেন। তাই কারো কথার জবাবও দিতে পারেন না ঠিক মত।
তার মা রহিমা খাতুন বলেন, কি লাভ হয়েছে রাজনীতি কইরা, পায় নাই কিছুই, হারাইছে সব। আমরা এই বুড়া বয়সে মেয়েটাকে নিয়ে কোথায় যাবো আপনারা বলতে পারেন। কি হবে নাতনীর ভবিষ্যত ?
আমার দুইটা ছেলে ছিলো একজন দুর্ঘটনায় মারা গেছে আরেক জন রাস্তায় ঘুরে ঘুরে পান বিক্রি করে আমাদের সংসার চালাচ্ছে। ছোট মেয়ের জামাই এতো দিন তার চিকিৎসার খরচ চালাতো এখন সেও অসুস্থ। কি করবো আল্লাহ তুমি বলে দাও।
ছোট ভাই পান বিক্রেতা হোসেন বলেন, আমার বোন জামাই শাহজালাল সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা। সে এতো দিন আপার চিকিৎসার খরচ চালাতো। এখন তার অবস্থাও ভাল না। আমি রাস্তায় ঘুরে ঘুরে পান বিক্রি করে যে অর্থ পাই তা দিয়ে ঠিক মত সংসার চালাতে পারি না। আপার চিকিৎসা করাবো কিভাবে।
এদিকে, আয়শার খোজ পেয়ে বরিশাল সংরক্ষিত মহিলা এমপি সৈয়দা রুবিনা আক্তার মিরা তার খালাতো ভাই কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য বিল্লালকে দিয়ে আর্থিক সহযোগীতার পাশাপাশি এক মাসের সংসারের যাবতীয় বাজার করে পাঠিয়ে দিয়েছেন। সেই সাথে তিনি ঘোষনা দিয়েছেন অচিরেই আয়শার সাথে দেখা করতে আসবেন।
এ বিষয় তার কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ১৮ কোটি জনগনের মধ্যে কম বেশি ১ কোটি আওয়ামী লীগের নেতা আছে। আয়শা আপা আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের কর্মী সে দলকে ভালবেসে রাজপথে থেকে আন্দোলন সংগ্রামে গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা রেখেছে। আমাদের সকল নেতাদের ক্ষুদ্র চেষ্টাই তার সহযোগীতার জন্য যথেষ্ট।
আমি নারায়ণগঞ্জের সাংসদ শামীম ওসমান ভাই, মেয়র আইভী আপা ও ব্যবসায়িক নেতা লিটনকে (ইয়ার্ন মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি) আহবান করবো তাকে সহযোগীতা করার জন্য। আমি অচিরেই তার সাথে দেখা করতে আসবো। সেই সাথে আমি আহবান করবো আমাদের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিবেন।