দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্তের সংখ্যা বৃহস্পতিবারের চেয়ে শুক্রবার কমেছে। তবে মৃত্যু বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৯৪ জন ব্যক্তি করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগী বলে শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছে ৬ জন।
এ নিয়ে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৪২৪। আর মৃতু্য বেড়ে হয়েছে ২৭। বৃহস্পতিবার আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১১২। ওইদিন মৃতু্য হয় একজনের। শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা এ তথ্য জানান।
শুক্রবার ৬ জনসহ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৭। বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) সানিয়া তাহমিনা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ১৮৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। আইইডিসিআর পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ব্যক্তিদের বয়স এবং তারা কোন এলাকার, তা জানান। মীরজাদী সেব্রিনা বলেন, মারা যাওয়া ৬ জনের মধ্যে পুরুষ ৫ জন এবং নারী একজন।
৩০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৫০ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৭০ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ১ জন এবং ৯০ বছর বয়সী একজন। তাদের মধ্যে তিনজন ঢাকার, দুজন নারায়ণগঞ্জের এবং একজন পটুয়াখালী জেলার। শনাক্ত হওয়া ৯৪ জনের মধ্যে ৬৯ জন পুরুষ, আর ২৫ জন নারী। ১০ বছরের নিচে ৪ জন, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ৬ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের ১২ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ২৯, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী ১৬ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ১৪ জন এবং ষাটোর্ধ্ব ১৩ জন।
নতুন শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৭ জনই ঢাকার বাসিন্দা। এর মধ্যে সর্বোচ্চ যাত্রাবাড়ীতে ৫ জন। নারায়ণগঞ্জে ১৬। বাকিরা অন্যান্য জেলার। মোট ১২ হাজার ৬০১ জন এখন হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) সানিয়া তাহমিনা বলেন, ‘আমাদের যে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের ক্যাপাসিটি, সেটা আগের চেয়ে বেড়েছে। সারাদেশে সকল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য ৪৭০টি প্রতিষ্ঠানকে প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে কোয়ারেন্টিনের সেবা প্রদান করতে পারব ২৪ হাজার ৪৯২ জনকে।’
তিনি জানান, সারাদেশে এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৮৫ জন চিকিৎসক ও ১ হাজার ৫৪ জন নার্সকে কোভিড-১৯ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। নভেল করোনাভাইরাসের গতিপ্রকৃতি বিশ্লেষণ করে প্রতিনিয়ত নতুন তথ্য পাওয়ার প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য পরামর্শও বদলে যেতে পারে বলে জানান তিনি। সানিয়া তাহমিনা বলেন, ‘প্রতিনিয়ত গবেষণা করে বিভিন্ন রকম তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যাচ্ছে। সাত দিন আগে আমরা যে পরামর্শ দিয়েছি, সাত দিন পরে নতুন তথ্য পাওয়া যেতে পারে। কারণ এটা একটা নতুন ভাইরাস।
সুতরাং যেটা আমরা বলছি, সেটা যদি অন্য কোনো সূত্র থেকে অন্য রকম পাওয়া যায়, সেটা আমরাও বলব। বুঝতে হবে যখন নভেল ভাইরাস আসে তখন নানারকম চেঞ্জ হয়। এটাকে আপনারা আমাদের অজ্ঞতা হিসেবে না নিয়ে, আমরা যেটুকু জানতাম, সেটুকু আপনাদের কাছে বলেছি।
যদি সেখানে কোনো পরিবর্তন হয়, তাহলে অবশ্যই সেটা আমরা আপনাদের জানিয়ে দেব।’ নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং বা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দিয়ে আসছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ‘সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং’ শব্দবন্ধটির বাংলা অনুবাদে এদিন নতুন একটি শব্দবন্ধ প্রস্তাব করেন সানিয়া তাহমিনা।
স্বাভাবিকভাবে আমরা বলছি সামাজিক দূরত্ব। কিন্তু সামাজিক দূরত্ব করছি না আমরা, আমরা করছি শারীরিক দূরত্ব। একজন আরেকজন থেকে কমপক্ষে ৩ ফুট শারীরিক দূরত্বে থাকব। সেটা বাসার বাইরে তো অবশ্যই, বাসার ভেতরেও এটা অবশ্যই থাকা উচিত।
(নিউজ ডেক্স)