দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: নারায়ণগঞ্জে ছয় বছর পুর্বে যুবককে গুম করা মামুন জীবিত ফিরে এসেছে বাড়ীতে।
অথচ এই মামলায় বিভিন্ন সময় আসামিরা জেল খাটার পর দীর্ঘ ছয় বছর তাদেরকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। সেই সাথে মামলার বাদী ও মিথ্যা সাক্ষীর বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হবে- এ বিষয়ে আদালতে কারণ দর্শানোর আবেদন করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী।
বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে শুনানি শেষে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ফারহানা ফেরদৌস মামলা থেকে অব্যাহতি দেন।
অব্যাহতিপ্রাপ্তরা হলেন- কথিত অপহৃত মামুনের প্রেমিকা তসলিমা, তার বাবা রকমত আলী, ভাই রফিক, খালাতো ভাই সোহেল, সাগর ও মামা সাত্তার মোল্লা।
এর আগে গত ১ নভেম্বর সকালে একই বিচারক মৃত মামুনের জীবিত ফিরে আসার ঘটনায় মামলাটির বিভিন্ন সময়ে তদন্তের দায়িত্বে থাকা তিন কর্মকর্তাকে ৫ নভেম্বর সশরীরে আদালতে উপস্থিত হওয়ার আদেশ দিয়েছিলেন।
আসামিদের পক্ষের আইনজীবী এমদাদ হোসেন সোহেল বলেন, মামুনের জীবিত ফেরার কারণে মামলাটি মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়েছে। আদালতের কাছে রোববার মামলাটি থেকে নিরপরাধ ব্যক্তিদের অব্যাহতি দেয়ার আবেদন করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে শুনানি শেষে আদালত ছয় আসামিকে মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদান করেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ১০ মে চাঁদপুরের মতলবের নিজ বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন মামুন নামের এক যুবক। তখন পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো ডায়েরি কিংবা অভিযোগ করা হয়নি। এরপর ছেলেকে না পেয়ে ঘটনার দুই বছর পর ২০১৬ সালের ৯ মে মেয়ের সঙ্গে প্রেম করায় তার ছেলে মামুনকে ‘অপহরণ করে খুন করার উদ্দেশ্যে গুম’র অভিযোগ এনে ফতুল্লা থানায় মামলা করে কথিত অপহৃত মামুনের বাবা আবুল কালাম।
আসামি করা হয় মামুনের কথিত প্রেমিকা তসলিমা, তার বাবা রকমত আলী, ভাই রফিক, সোহেল, খালাতো ভাই সাগর ও সাত্তার মোল্লাকে। মামলার পরে সব আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশের আবেদনে মাকসুদা বেগম নামে এক নারীর সাক্ষী হিসেবে দেয়া ‘অপহরণ করে খুন করার উদ্দেশ্যে গুম’র বর্ণনা ১৬১ ও ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করেন আদালত। কথিত অপহৃত মামুনের প্রেমিকা আসামি তসলিমা ও তার ভাই রফিক দেড় বছর কারাবাস করেন। আসামি রকমত আলী, সাগর ও সাত্তার দেড় থেকে তিন মাস জেল খেটে জামিনে বের হন।
চলতি বছরের ২২ সেপ্টেম্বর প্রায় ছয় বছর আগে ‘মৃত’ সেই মামুন চাঁদপুরের নিজ বাড়িতে জীবিত ফিরে আসে। ব্যাপারটি নিয়ে মামুনের পরিবার যোগাযোগ করলে ৩০ সেপ্টেম্বর সেই মৃত মামুনকে আদালতে হাজির করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী। ছয় বছর পর মামুন জীবিত ফিরে আসার পর নারায়ণগঞ্জে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।