দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় নির্মাণ করা হচ্ছে তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু। সৌদি আরবের আর্থিক অনুদানে ৬ লেনের এ সেতু নির্মাণ করছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ)। চীনা ঠিকাদার সিনোহাইড্রো কোম্পানি লিমিটেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
২০১৫ সালে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হওয়া এ প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা ছিল ২০১৮ সালের জুনে। এর পর এ বছরের ডিসেম্বরে কাজ শেষ হওয়ার কথা। এখন করোনাসহ কয়েকটি অজুহাত দেখিয়ে প্রকল্পের সময় আবার বাড়ানো হচ্ছে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। শুধু তাই নয়, প্রকল্পের ব্যয়ও বাড়ানো হচ্ছে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম বলেন, সওজ থেকে তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুর ব্যাপারে রিভাইজড ডিপিপির প্রস্তাব করা হয়েছে।
৩৭৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ১ হাজার ২৯০ মিটার দীর্ঘ শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম প্রান্তে ও পূর্ব প্রান্তে বন্দর উপজেলার মদনগঞ্জ সংযোগ করে ছয় লেনের তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু নির্মাণ করা হবে। গাড়ির চাপ সামলাতে ঢাকা শহরকে বাইপাসের মাধ্যমে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-মাওয়া-খুলনা মহাসড়ককে বিকল্প সড়ক হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ দেবে এ সেতু। নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হলে শীতলক্ষ্যা সেতুর পূর্ণাঙ্গ সুফল মিলবে।
২০১০ সালের নভেম্বরে একনেকে অনুমোদিত এ প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল ৩৭৭ কোটি টাকা। পরে ২০১৫ সালে বিশেষ সংশোধিত ডিপিপির হিসাব অনুযায়ী খরচ ধরা হয় ৫৩৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। এর পর প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী আসে ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি। সে অনুযায়ী ব্যয় ৫৯৯ কোটি ২৭ লাখ টাকা। তখন মেয়াদ ধরা হয় ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত। সৌদি সরকারের সঙ্গে ঋণচুক্তি অনুযায়ী মেয়াদ ২০২১ সালের ডিসেম্বর।
সূত্রমতে, প্রকল্পের বাস্তব নির্মাণকাজ পিছিয়ে গেছে। চুক্তি অনুযায়ী চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজটি শেষ করার কথা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রোর। কিন্তু সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ৩১৭ দিন সময় বাড়িয়ে এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর বেঁধে দেওয়া হয়। এ জন্য পরামর্শক কাজেরও সময় বাড়ায়। এ প্রকল্পে সৌদি ফান্ড সরবরাহ বিলম্ব হওয়ায় কাজে বিলম্ব ঘটে।
সে কারণেই ৩১৭ দিন সময় বাড়িয়ে চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ঠিকাদারকে সময় দেওয়া হয়। এখন বলা হচ্ছে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনে এবং ২০২০ সালের মার্চে বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে নির্মাণকাজে ব্যাঘাত ঘটে। এর যুক্তি দেখিয়ে এ বছরের ২২ সেপ্টেম্বর ঠিকাদার সিনোহাইড্রো সময় বাড়ানোর চিঠি দেয়। তাতে ৫৭৪ দিন সময় বাড়ানোর আবদার করে। এটি ৩৬৫ করার ব্যাপারে সম্মত হয় সওজ। এ প্রকল্পের সেতু নির্মাণকাজ এখনো শেষ হয়নি।
৩টি ৯৮ মিটার দীর্ঘ সেতু ও স্প্যানসহ ২টি ৫৩ মিটার দীর্ঘ স্প্যানবিশিষ্ট বক্স গার্ডারের কাজ বাকি আছে। সৌদি ফান্ডের অর্থ ছাড়ে বিলম্ব এবং করোনায় কাজের ব্যাঘাতের যুক্তি দেখিয়ে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ছে। তা ছাড়া ভ্যাট ও আয়কর খাতসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় যুক্ত করে ১২.০৬ কোটি টাকা বাড়ছে।
সে কারণে প্রস্তাব করা হয়েছে ৬১১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এ প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি ৭০ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৬৪.৭৫ শতাংশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। (সুত্র: দৈনিক আমাদের সময়)