দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: শ্রমজীবি মানুষের বাংলাদেশ অথচ এই দেশেই কিছু প্রতিষ্ঠানের কর্মরত শ্রমিকরা তাদের ন্যায পাওনা থেকে বঞ্চিত। অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন সময় শ্রম আইন অমান্য করে শ্রমিকদেরকে অতিরিক্ত খাটিয়ে নিচ্ছেন মালিক পক্ষ। আর তাদের সাথে সু-সম্পর্ক রয়েছে শ্রম দপ্তরের কিছু কর্তাবাবুদের সাথে। যার ফল শ্রুতিতে মালিক পক্ষ আইন অমান্য করলেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না দোষীদের বিরুদ্ধে।
এদিকে, নারায়ণগঞ্জ দোকান ও প্রতিষ্ঠান কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষ থেকে সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার লিখিত ভাবে এই বিষয় অবগত করলেও এর পরিবর্তনের কোন বালাই নেই। তাই গত শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) সাপ্তাহিক ছুটি দেড়দিন বন্ধ রাখতে ও ১৩ দফা দাবি আদায়ের লক্ষে শ্রমিকদের নিয়ে রাজপথে বিক্ষোভ করেছেন সংগঠনটির নেতৃবৃন্দরা।
এবিষয় নারায়ণগঞ্জ কলকারথানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিচালক সৌমেন বড়য়া বলেন, আমি এ বিষয় কিছু বলতে পারছি না। আর আমি নারায়ণগঞ্জের পত্রিকা তেমন একটা পড়ি না। তবে আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টা অবগত হলাম কাল শুক্রবার আমাদের অফিসের লোক মাঠে কাজ করবে।
যদি কোন মার্কেট খোলা থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে, নারায়ণগঞ্জ দোকান ও প্রতিষ্ঠান কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষে শ্রম আইন অনুযায়ী শুক্রবারসহ দেড়দিন সাপ্তাহিক ছুটির পাশাপাশি ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষনা দেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। ১৩ দফা
দাবিতে উল্লেখ রয়েছে, ১। বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারা ৫ মোতাবেক প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত প্রত্যেক শ্রমিককে নিয়োগপত্র ও ছবিসহ পরিচয়পত্র প্রদান করতে হবে। ২। বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ধারা ৬ মোতাবেক প্রত্যেক মালিক তাহার নিজস্ব খরচে নিয়োজিত শ্রমিকের জন্য সার্ভিস বইয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। ৩। বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ধারা ৯ মোতাবেক সকল শ্রমিকদের জন্য একটি রেজিষ্টার রাখতে হবে। ৪। বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ধারা ৫৮ মোতাবেক প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত শ্রমিকদের জন্য বিশুদ্ধ ও সুপেয় পানি সরবরাহের সার্বক্ষণিক ব্যবস্থা করতে হবে।
৫। বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ধারা ১০০ মোতাবেক দৈনিক ০৮(আট) ঘন্টা কাজের নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে। অধিক কাজের জন্য বর্ণিত আইনের ১০৮ ধারা মোতাবেক দ্বিগুন হারে ভাতা দিতে হবে। ৬। বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ধারা ১১৪ মোতাবেক প্রত্যেক দোকান প্রতিষ্ঠান প্রতি সপ্তাহে অন্তত দেড়দিন সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে হবে। এক্ষেত্রে কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর কর্তৃক জারীকৃত প্রজ্ঞাপণ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সকলকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। ৭। বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ধারা ১১৫ মোতাবেক অসুস্থ্য শ্রমিকের ক্ষেত্রে প্রতি পঞ্জিকা বর্ষপূর্ণ মজুরীতে ১০ (দশ) দিনের নৈমিত্তিক ছুটি দিতে হবে।
৮। বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ধারা ১১৬ মোতাবেক অসুস্থ্য শ্রমিকের ক্ষেত্রে প্রতি পঞ্জিকা বর্ষে পর্ণ। মজুরীতে ১৪ (চৌদ্দ দিনের নৈমিত্তিক ছুটি দিতে হবে। ৯। বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারা ১১৭ মোতাবেক চাকরীর মেয়াদকাল ০১ (এক) বৎসর পূর্ণ হওয়া পর বর্ণিত আইন মোতাবেক বাৎ্সরিক ছুটি দিতে হবে। ১০। বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ধারা ১১৮ মোতাবেক প্রত্যেক শ্রমিককে ঐ ১১৮ মোতাবেক প্রত্যেক শ্রমিককে প্রতি পঞ্জিকা বর্ষের ১১ (এগার) দিনের মজুরীসহ উৎসব ছুটি প্রদান ও অন্যান্য সুবিধা প্রদান করতে হবে।
১১। বর্তমান বাজার মূল্যের সাথে সঙ্গতি রেখে শ্রমিকদের ন্যায্য বেতন বৃদ্ধি। ১২। শ্রমিকদের ছেলে-মেয়েদের জন্য খেলাধুলা ও সাগতিক প্রতিযোগিতার আলো ১৩। দূর্ঘটনাজনিত কারণে শ্রমিকদের যথাযথ চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে।