দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: শ্রমিক কর্মচারীদের বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট না দেওয়ার চক্রান্ত বন্ধ করে বাজার দরের সাথে সঙ্গতি রেখে মহার্ঘ্য ভাতা চালুর দাবিতে বাম প্রগতিশীল ৫ টি শ্রমিক সংগঠনের উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) সকাল ১১ টা থেকে ১২ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জে বিকেএমইএ কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের নাঃগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি এম এ শাহীন বক্তব্য রাখেন গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের জেলা কমিটির সভাপতি সেলিম মাহমুদ, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, সহ-সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার দাস, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট জেলার সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরিফ, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির জেলা কমিটির সভাপতি অঞ্জন দাস, জেলার নেতা জাহাঙ্গীর আলম বাবু, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের জেলার সভাপতি হুমায়ুন কবির সাধারণ সম্পাদক এইচ রুবিউল চৌধুরী, বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির জেলারর নেত্রী রাশিদা বেগম ও রোকসানা আক্তার প্রমূখ।
মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ বলেন- করোনা কালীন সময়ে গার্মেন্টস মালিকরা নানা রকম নাটক দেখিয়েছে। এখন শ্রমিক কর্মচারীদের বাৎসরিক ইনক্রিমেন্টের উপর তাদের চোখ পড়েছে। মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ ও বিজিএমইএ শ্রমিক কর্মচারীদের বাৎসরিক মজুরি বৃদ্ধি না করার চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে। তাদের এ আচরণ অত্যন্ত অমানবিক ও দুঃখজনক। করোনা মহামারীর মধ্যে শ্রমিকরা মৃত্যু ভয় উপেক্ষা করে গার্মেন্টস শিল্পের উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে। তাদের এই অবদানের জন্য মালিক ও সরকারের পক্ষ থেকে পুরস্কার দেয়া উচিত।
কিন্তু তা-না করে মালিকরা ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়ে শ্রমিক-কর্মচারীদের বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট থেকে বঞ্চিত করার পাঁয়তারা চালিয়েছে। শ্রমিক স্বার্থবিরোধী মালিক পক্ষের এই ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন- প্রতি বছর দেশে মূল্যস্ফীতি হয় এই মূল্যস্ফীতির সাথে সাথে বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়ে, জীবন যাত্রার ব্যয় বাড়ে এই ব্যয় সমন্বয়ের জন্য আইনগতভাবে মজুরি গেজেটে শ্রমিক-কর্মচারীদের ৫ শতাংশ হারে বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
অর্থাৎ বাৎসরিক মজুরি বৃদ্ধি না করার কোন সুযোগ নেই মালিক পক্ষের বক্তব্য পুরোপুরি অনৈতিক ও অযৌক্তিক। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন- করোনা সংকটের শুরুর দিকে মালিকরা নানা অজুহাত দেখিয়ে শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার কথা বলে সরকারের কাছ থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা প্যাকেজ সহ ৯ হাজার ১৮৮ কোটি টাকার নগদ সুবিধা নিয়েছে। কিন্তু শ্রমিকদেরকে তারা কোন সুবিধা দেয়নি বরং উল্টো ৩৫ শতাংশ হারে বেতন কেটে নিয়েছে ঈদ বোনাস কম দিয়েছে।
গণহারে ছাঁটাই করে দুর্দিনে লাখো লাখো শ্রমিককে চরম বিপদে ফেলে দিয়েছে। এখন আবার শ্রমিকদের বাৎসরিক ইনক্রিমেন্টের উপর তাদের চোখ পড়েছে। অন্যদিকে সরকারের কাছ থেকে আরো প্রণোদনা নেওয়ার ধান্দা করছে। মালিকদের এই মুনাফা লোভী মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। শ্রমিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র চেক করার অজুহাতে ছাঁটাই-নির্যাতন ও শ্রমিক স্বার্থবিরোধী সকল ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে।
অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুল সকল ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দেয়া হবে। বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়ার কারণে জীবন যাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রাপ্ত মজুরিতে জীবন ধারণ করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তা বিবেচনায় নিয়ে বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট বাড়িয়ে দেওয়াসহ বাজার দরের সাথে সঙ্গতি রেখে শ্রমিক কর্মচারীদের জন্য মহার্ঘ্য ভাতা প্রদানের দাবি জানান নেতৃবৃন্দ