দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: প্রাচীনকাল থেকেই শ্রমিকদের ন্যায দাবি আদায়ে বারংবার রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসলেও সেটা বাস্তবে কতটা সফলতা বয়ে এনেছে তা সকলেরই জানা। তবুও যেন ঘাম ঝড়ানো শ্রমিকরা তাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলন প্রথা এখনও জারি রেখেছেন।
এরই ধারাবাহিকতায় শ্রম আইনের ধারা মোতাবেক সাপ্তাহিক ছুটি দেড় দিন বন্ধ ও ১৩ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জে দফায় দফায় শ্রমিকরা রাজপথে বিক্ষোভ করলেও এতে কোন কর্ণপাত করছেন না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
আর এই সুবাদে শ্রম আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে রক্তচোষা জোঁকের ন্যায় শ্রমিকদের ছুটির দিনেও কাজ করিয়ে নিছেন মালিক পক্ষের বাবু সাহেবরা।
এদিকে, শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ দোকান ও প্রতিষ্ঠান কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষ থেকে সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার লিখিতভাবে এ বিষয়ে অবগত করলেও এর পরিবর্তনের কোন বালাই নেই।
লক্ষ্য করে দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জে শুক্রবার ছুটির দিনেও অধিক লাভের আশায় প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের খাটিয়ে নিচ্ছেন নগরীর বিভিন্ন মার্কেটে অবস্থিত বিপনী বিতানের মালিকগণ। আর সেটা দেখেও ঘুম ভাঙ্গছেনা কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শক অধিদপ্তরের কর্তাবাবুদের।
শুক্রবার লক্ষ্য করে দেখা যায়, নগরীর টপটেন, টপমার্ক, বেলমন্ট, রিচপ্লাস, মোবাইল মার্কেট, কালিরবাজার ফ্রেন্ডস মার্কেট, মা কমপ্লেক্স, এন.এস মার্কেট, ডিআইটির একাধিক মার্কেট, ১নং রেইল গেইট মার্কেট সহ বিভিন্ন বিপনীবিতান গুলো বন্ধের দিনেও মালিক পক্ষ খোলা রেখে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
এতে করে মালিক পক্ষ আর্থিক ভাবে লাভবান হলেও কর্মরত শ্রমিকরা ৩০ দিনই চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের কাজ। বিরতিহীন ভাবে কাজ করে কর্মরত শ্রমিকরা অসুস্থ হয়ে পরলেও দেখার সময় নেই প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষের।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক সৌমেন বড়–য়া বলেন, শুক্রবার যাতে করে কোন মার্কেট খোলা রাখতে না পারে সেজন্য মাঠে আমাদের লোক কাজ করছে। গত শুক্রবার যে সকল মার্কেট খোলা ছিলো সেগুলোর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যদি কোন মার্কেট খোলা থাকে সেখানে আমাদের কিছু করার থাকে না। আমরা শুধুৃ খোলা রাখা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারি। এর বেশি কিছু করার ক্ষমতা আমাদের নেই।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ দোকান ও প্রতিষ্ঠান কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক তুলসি ঘোষ বলেন, আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে বহুবার ডিসি ও শ্রম অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানিয়েছি এবং এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে তবুও এর কোন সমাধান হচ্ছে না।
আমরা সরেজমিনে শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারী) বন্ধের দিনে নগরীর অনেক মার্কেটের প্রতিষ্ঠান খোলা দেখেছি এটা খুবই দু:খজনক।
তিনি আরও বলেন, শ্রম অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হয় দুর্বলতা রয়েছে নতুবা কিভাবে মালিকপক্ষ শুক্রবারসহ সাপ্তাহিক ছুটি দেড় দিন বন্ধ ও ১৩ দফা দাবি মানছে না। আমি শ্রমিকদের পক্ষ থেকে শ্রম অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও মালিক পক্ষের কাছে আহবান করবো, সাপ্তাহিক ছুটি দেড় দিন বন্ধ ও ১৩ দফা দাবি মেনে শ্রমিকদের ন্যায্য চাওয়া পুরণ করুন।