দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: কে হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের অবিভাবক এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাছে যুবদল নেতা ও কর্মীদের মাঝে। বিগত দিনে ২০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করার পর ব্যর্থতার কারনে ১৮ মাসের মাথায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সেটা ভেঙ্গে দেন।
এর ফলে নতুন কমিটিতে পদের আশায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দদের কাছে জোড়লবিং ও তদবিরের ধারাবাহিকতা চলছে প্রতিনিয়তই। আর এই লবিং এর কারনে মাঠের রাজনীতি করা প্রকৃত যুবদল নেতারা যোগ্যতার ভিত্তিতে কমিটি থেকে বঞ্চিত হওয়ার সম্ভবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না।
এদিকে লক্ষ্য করে দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের ব্যানারে দলের পক্ষ হয়ে সরকার পতন আন্দোলন সংগ্রামে অগ্রনী ভূমিকা পালন করেছেন অনেক যুবদল নেতা। আবার অনেকেই গুরুত্বপুর্ন পদ পদবি নিয়ে আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন ঘরকুনে নেতাদের তালিকায়।
এবার মহানগর যুবদলের কমিটিতে যারা আলোচনায় রয়েছেন তাদের মধ্যে আছেন, মহানগর ছাত্র দলের সাবেক সভাপতি মাজহারুল ইসলাম জোসেফ। ১৯৯৬ সালে দলের জন্য যার অবদান বলে শেষ হবার নয়। আন্দোলন সংগ্রামে যার ভূমিকা এখনও দাগ কাটে দলের কর্মীদের হৃদয়ে।
কিন্তু বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালিন সময় থেকে এযাবৎ পর্যন্ত দল ও নেতাকর্মীদের সবচেয়ে বড় অগ্নিপরিক্ষার দিন চলছে চলমান একযুগ ধরে। এই সময়ে সরকার পতন আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহন করে পুলিশের মামলা-হামলা, জেল জুলুমের অত্যাচারেও পিছপা হচ্ছেন না দলটির নেতাকর্মীরা। আর এই একযুগ ধরে দলের জন্য ছিটে ফোটা অবদান নেই মাজহারুল ইসলাম জোসেফের। তবুও তিনি আশায় বুক বেধেছেন মহানগর যুবদলের আহবায়ক হওয়ার।
অপরদিকে, মহানগর ছাত্রদলের আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসা মনিরুল ইসলাম সজল। যিনি বর্তমান মহানগর বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করে আসছেন নিষ্ঠার সাথে। চলমান দলের রাজনৈতিক সঙ্কটেও রাজপথে তার ভূমিকা অপরিসীম।
কিন্তু বিগত দিনে মহানগর ছাত্রদলের আহবায়ক থাকাকালিন মনিরুল ইসলাম সজল সাংগঠনিক ভাবে দিয়েছেন ব্যর্থতার পরিচয়। তার সময়ে মহানগর ছাত্রদলের আওতাধীন থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের কোন কমিটির ঘোষণায় দিয়েছেন ব্যর্থতার পরিচয়।
এদিকে, বিলুপ্ত মহানগর যুবদলের কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন শোখন শুরু থেকে এখন পর্যন্ত রাজনৈতিক মাঠে বিচরন করে বেড়াচ্ছেন নিষ্ঠার সাথে। বিগত দিনে নিজ সংগঠন যুবদলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়েছেন তিনি। অযোগ্য নেতাদের দিয়ে মহানগর যুবদলের কমিটি আনার অভিযোগ এনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন নিষ্ঠার সাথে। এবারের কমিটিতে বেশ জোড়ে সোড়ে আলোচনায় রয়েছেন তিনিও।
এছাড়াও রয়েছেন বিলুপ্ত মহানগর যুবদলের কমিটির সহ-সভাপতি নাজমুল হক রানা। যার ব্যক্তিগত পরিচয় তিনি সাবেক সাংসদ ও মহানগর বিএনপির সভাপতি এ্যাড. আবুল কালাম এবং বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুলের ভাই। রাজনৈতিক জীবনে দুই ভাইয়ের সুপারিশ ছাড়াই যিনি ব্যক্তিগত ভাবে নিজের অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন।
এছাড়াও সরকার পতন আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহন করে বিভিন্ন সময় মামলা ও হামলার শিকার হয়েছেন। এখনও তার বিরুদ্ধে চলমান রাজনৈতিক ১৪টি মামলা রয়েছে। নিজের রাজনৈতিক জীবনে কখনই বড় ভাইদের ব্যবহার করার ইচ্ছা প্রকাশ করেননি। তবে ভাইদের মত নিজেও ক্লিন ইমেজ নিয়ে তাদের পথ অনুশরন করে চলছেন তিনি।
অপরদিকে রয়েছেন, বিলুপ্ত মহানগর যুবদলের কমিটির সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাগর প্রধান, যার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়েছে এ্যাড. তৈমূর আলম খন্দকারের হাত দিয়ে। তিনিও বিগত দিনে নিজ সংগঠন যুবদলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়েছেন তিনি। অযোগ্য নেতাদের দিয়ে মহানগর যুবদলের কমিটি আনার অভিযোগ এনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন নিষ্ঠার সাথে।
এখনও দলের প্রয়োজনে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহন করে চলছেন। আর তার কর্মী বাহিনীর উপর নির্ভর করে নিজেকে বড় মাপের নেতা মনে করছেন এ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খান। তবে করোনায় দেশে লকডাউন হওয়ার পর অসহায় মানুষের পাশে থেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিভিন্ন সহযোগীতা করে সর্ব মহলেই যিনি প্রশংসিত।
এদিকে, মমতাজ উদ্দিন মন্তু দায়িত্ব পালন করেছেন বিলুপ্ত মহানগর যুবদলের কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে। দলের জন্য তার ঝুড়িতে সফলতা একেবারেই শুন্যের কোঠায়। অভিযোগ রয়েছে অর্থের বিনিময় বিগত কমিটিতে গুরুত্বপুর্ন পদে আশ্বিন হলেও দিয়েছেন ব্যর্থতার পরিচয়। সংগঠনকে শক্তিশালী করতে যার অবদান তুলে ধরার মত কিছু নেই।
এবারের কমিটিতে আহবায়ক হিসেবে নিজেকে নিয়ে দিব্বি আরামের স্বপ্ন দেখে চলছেন। তাই নিজের অবস্থান ধরে রাখতেই দল ছুট বিতর্কিত নেতাদের সাথে চলছে তার উঠাবসা। চালিয়ে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে জোড় লবিং।
এখন দেখার বিষয় দলের জন্য ত্যাগ শিকার করা প্রকৃত যুবদল নেতারা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দদের কাছে কতটুকু মূল্যায়ন হচ্ছেন। নাকি জোড়লবিং ও অর্থের কাছে সুবিধবাদী নেতার ভীড়ে হারিয়ে যাবে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় থাকা প্রকৃত নেতারা।