দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: ন্যায দাবি নিয়ে মালিক পক্ষ ইদুর বিড়াল খেলায় মেতে উঠেছেন বলে অভিযোগ করেছেন শ্রমিকদের নেতৃবৃন্দ। তারা আরও বলেন, শ্রম আইনকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে শুক্রবার বন্ধের দিনেও মার্কেট খোলা হচ্ছে রেখেছে অর্থ লোভী মালিক পক্ষ। বার বার স্থানীয় মিডিয়াতে বিষয়টি উঠে আসলেও সেটার তোয়াক্কা করছেন না মালিক পক্ষ। আর এই বিষয় নিয়ে এখনও ঘুম ভাঙ্গছেনা কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শক অধিদপ্তরের কর্তাবাবুদের।
তবে এই অভিযোগ মানতে নারাজ কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শক অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক সৌমেন বড়–য়া তিনি বলেন, আমাদের অফিসাররা যতক্ষন মাঠে কাজ করে ততক্ষন সব মার্কেট বন্দ থাকে। আর যদি ২/১ টা খোলা থাকে সেগুলোকেও বন্দ করে দেয়া হয়।
এখন অফিসাররা দায়িত্ব শেষে অফিসে চলে আসলে যদি মার্কেট গুলো খোলা হয় সেখানে আমাদের কি করা। কারন একজন অফিসারের ২৪ ঘন্টা ডিউটি করা সম্ভব না। তবে শুক্রবার যতক্ষন অফিসাররা দায়িত্ব পালন করেছেন ততক্ষন ৯৯% মার্কেট বন্দ ছিলো। পরে কি হয়েছে সেটা বলতে পারছি না।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ দোকান ও প্রতিষ্ঠান কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দরা জানান, শ্রম আইনের ধারা অনুযায়ী শুক্রবারসহ দেড়দিন ছুটির ঘোষণা থাকলেও সেটার বাস্তব চিত্র ঠিক উল্টো। আমরা শুক্রবার (৫ মার্চ) সরজমিনে দেখেছি নগরীর মোবাইল মার্কেট স্যামসান সো রুম, সেম্পনী সো রুম, ভিভো, শাওমি, ম্যাক্সিমাস, টেকনো, রিডমী সহ বিভিন্ন বিপনী বিতান গুলো খোলা ছিলো।
এছাড়াও নগরীর ডায়মন্ড রিং গিফট শপ, টপটেন, টপমার্ক, বেলমন্ট, পার্ক ভাই বিল্ডিং, কেয়া ষ্টোর, একা ফ্যাশন, বিন্দু ফ্যাশন, আদিবা ফ্যাশন, মোন ফ্যাশন গ্যালারী, বিসমিল্লাহ ষ্টোর, ডিআইটি ইলেকট্রিক মার্কেট, বৌরানী শাড়ি বিতান, রাজধানী শাড়ি বিতান, মা শাড়ি বিতান সহ অধিকাংশ মার্কেট গুলো খোলা দেখেছি।
এদিকে শ্রম আইনের ধারা অনুযায়ী, বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ধারা ১১৪ মোতাবেক প্রত্যেক দোকান প্রতিষ্ঠান প্রতি সপ্তাহে দেড় দিন সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে হবে। এক্ষেত্রে কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর কর্তৃক জারীকৃত প্রজ্ঞাপণ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সকলকে নিজ নিজ দায়িত্ব¡ পালনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
তবে সেই দায়িত্ব কতটুকু পালন হচ্ছে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে আমাদের মধ্যে। কারন সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করলে শ্রম আইনকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে অর্থের লোভে পড়ে মালিক পক্ষ কর্মচারীদের ন্যায দাবিকে কাগজে কলমেই সিমাবদ্ধ না রেখে বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহন করতো।
এ বিষয় নারায়ণগঞ্জ দোকান ও প্রতিষ্ঠান কর্মচারী ইউনিয়ন এর সভাপতি মোজাম্মেল হক বলেন, ইতিপুর্বে দুইবার শ্রম আইন বাস্তবায়নে উপ-মহাপরিদর্শকের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পরিচালনায় ত্রি-পাক্ষিক আলোচনায় বসা হয়েছিলো। কিন্তু সেটার সমাধান না আসায় পুনরায় বসার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। তারা আবারও আগামী ১৫ মার্চ ত্রি-পাক্ষিক আলোচনার ব্যবস্থা করেছেন।
এ বিষয় নারায়ণগঞ্জ দোকান ও প্রতিষ্ঠান কর্মচারী ইউনিয়ন এর সাধারণ সম্পাদক তুলসি ঘোষ বলেন, শ্রমিকদের ন্যায দাবি আদায়ের লক্ষে শ্রম অধিদপ্তরের নেতৃবৃন্দদের সাথে একাধিকবার আমাদের বৈঠক হয়েছে। যেখানে তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন শ্রমিকদের ন্যায অধিকার শ্রম আইন বাস্তবায়ন করবেন।
কিন্তু ১৯৭৩ সাল থেকে এযাবৎ পর্যন্ত শ্রম আইন বাস্তবায়ন করার তেমন কোন উদ্যোগ দেখি নাই। আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মহাদ্বয়ের দৃষ্টি আর্কষন করছি। তিনি যেন শ্রমিকদের ন্যার্য দাবি বাস্তবায়নের বিষয় ব্যব্স্থা গ্রহন করেন। কারন ইতিমধ্যে আমরা বারংবার চেষ্টা করেও কোন ফল পাচ্ছি না। শ্রমিকদের ন্যার্য দাবি মানা না হলে এক সময় তারা রাজপথে নেমে আসবে তখন আমাদের আর কিছুই করার থাকবে না।