দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: নারায়ণগঞ্জ বন্দরে ড্রেজার ব্যবসার নিয়ন্ত্রনকে কেন্দ্র করে জুয়েল নামের এক যুবককে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যার প্রতিবাদে মানব বন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী।
এ সময় ৭২ ঘন্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি দাবী করেন বিক্ষোভকারী।
শনিবার সকাল ১০টায় মদনপুরস্থ ঢাকা টু চট্রগ্রাম মহাসড়কে নিহত জুয়েলের স্বজনদের উপস্থিতিতে এ মানব বন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
মানব বন্ধনে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে বক্তারা বলেন,মদনপুর ইউনিয়নের হেদায়েত পাড়া এলাকায় সন্ত্রাসীদের নির্মম অস্ত্রাঘাতে জীবন দিতে হল জুয়েলকে। মদনপুর ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। আগের চেহারায় ফিরে যাচ্ছে।
একটি স্বাধীণ দেশে এমন নির্মম হত্যাকান্ড সত্যিই দুঃখ জনক। বর্তমানে প্রশাসন সাধারন মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। অথচ প্রশাসনিক প্রোগ্রামে গেলে প্রশাসনের কর্তাবাবুরা জনগনের দোড়গোড়ায় গিয়ে পুলিশি সেবা পৌছে দিবে,পুলিশ জনগনের পরম বন্ধুসহ আরো নানা বক্তব্যের ফুলঝুড়ি দেয়।
বাস্তবিক অর্থে প্রশাসন কোন কাজই করছে না। কেননা,সন্ত্রাসীর হাতে নির্মম ভাবে খুন হল জুয়েল। আজ ৩দিন অতিবাহিত হল। অথচ বন্দর থানা পুলিশ এখনও হত্যা মামলার এজাহারভূক্ত প্রকৃত আসামীদের গ্রেফতার করতে পারেনি। এমনকি নিহত জুয়েলের বিচ্ছিন্ন করা হাতের খন্ড অংশটুকুও উদ্ধার করতে পারেনি। খুবই দুঃখ জনক ব্যাপার। আমরা বন্দর থানা প্রশাসনকে আন্তরিকতার সহিত হত্যা মামলায় জড়িত আসামীদের গ্রেফতার করতে জোর দাবী জানাচ্ছি।
এ সময় বিক্ষোভ কারীরা মদনপুরস্থ ঢাকা টু চট্রগ্রাম মহাসড়ক ৩০ মিনিট অবরোধ করে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি করে। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ দীপক চন্দ্র সাহা ঘটনাস্থলে এসে নিহতদের স্বজন ও বিক্ষোভ কারীদের বলেন, আমরা খুব দ্রুত এজাহারভূক্ত আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছি। বিভিন্ন স্থানে পুলিশী অভিযান অব্যাহত আছে।
মনে রাখবেন আমি কারো তদবীর শুনিনা। অপরাধ করে কেউ পার পাবেনা। যতদিন ওসি হিসেবে আমি আপনাদের থানায় আছি ততদিন বন্দরে কোন অপরাধ,অপকর্ম চলবেনা। পরে বিক্ষোভ কারীরা মহাসড়ক থেকে তাদের অবরোধ তুলে নেয়।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন যাবত ড্রেজার ব্যবসার আধিপত্ত বিস্তারকে কেন্দ্র করে মদনপুর আন্দিরপাড় এলাকার আলিম বাহিনী ও নিহত জুয়েলের পিতা আনোয়ার বাহিনীর মাঝে চরম বিরোধ চলছিল। মুলত ওই এলাকায় ড্রেজার ও বালু ব্যবসার নিয়ন্ত্রন নিয়ে উভয় পক্ষ প্রায় সময়ই বিবাদে লিপ্ত ছিল। এর আগে তাদের এই ঝগড়ার রেশ বন্দর থানা পর্যন্ত গড়ায়। এরই ধারাবাহিকতায়,গত বুধবার রাতে সাইরাগার্ডেনে আনোয়ার বাহিনী পার্টি করার জন্য একত্রিত হলে খবর পেয়ে প্রতিপক্ষ আলিম বাহিনী অস্ত্র-সস্ত্রে সুসজ্জিত হয়ে হামলা চালায়।
এতে উভয় পক্ষই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে আলিম বাহিনীর সন্ত্রাসীরা আনোয়ার মিয়ার ছেলে জুয়েলকে এলোপাথারী হাত ও পা সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে তার বাম হাত বিচ্ছিন্ন করে পালিয়ে যায়।
এ সময় গুরুতর অবস্থায় এলাকাবাসী এগিয়ে এসে জুয়েলকে মদনপুর আল বারাকা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জুয়েলকে মৃত ঘোষনা করে।