দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সাংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান বলেন, আমার একটাই কথা হলো সবাই সাবধানে থাকবেন।আগামী দুইটা মাস।এটা হলো রমজান মাস।এর মধ্যে চলছে বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র।
করোনার মহামারি আকার যেভাবে ধারণ করছে।করোনার টেস্ট এক জায়গায় দেখা যাচ্ছে ধরা পড়ছে না অন্য জায়গায় পরীক্ষায় আবার করোনা সনাক্ত হচ্ছে।ল্যাবে এখনো সব করোনা রোগী সনাক্ত হচ্ছে না।এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে।সেটা নিয়ে আমার ভয় হচ্ছে আগামীতে কি অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে।
আমি সাংসদ হবার পর অনেক ইউএনওকে পেয়েছি কিন্তু নাহিদা বারিক তাকে ইউএনও বললে ভূল হবে আমার ছোট বোনের মত এত দক্ষ ও ভালো মানুষ একটাও পাই নাই।
মঙ্গলবার(১৩ এপ্রিল)দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের আয়োজনে সদর ইউএনও নাহিদা বারিকের বদলিতে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সদর উপজেলা অডিটোরিয়ামে উক্ত কথা তিনি বলেন।
শামীম ওসমান,আমি একটু স্বার্থপরের মত কথা বলবো কারন আমি একটু আতংকিত ও দুঃশ্চিন্তিত। আমি নারায়ণগঞ্জ সদর, সিদ্বিরগঞ্জ,ফতুল্লা নিয়ে কাজ করি।গত ১ বছর যে বাজে একটা পরিস্থিতিতে পড়েছি।কিন্তু আমি এটা বলছি না যে আমরা কাজ করিনি।বাংলাদেশের প্রতিটি সেক্টরে যদি এরকম মানুষ থাকতো তাহলে বাংলাদেশ আরো আগেই এগিয়ে যেত,এটা আমার বিশ্বাস।
কারন একটা হচ্ছে যে আমি সরকারের কর্মচারি সরকারের নির্দেশে কাজ করি। আর একটা হচ্ছে, দেশটা আমার আমি দেশের স্বার্থে কাজ করি। ভাবতে হবে দেশটা আমার, দেশের নাগরিক আমার, এলাকা আমার।
আমার নিজের মনে করে কাজ করা, জনগনের স্বার্থে কাজ করা এরকম অনেক গুন আমার চেয়ে বেশি নাহিদা বারিকের মধ্যে আছে বলে আমি মনে করি।কিছু দিন আগে আমি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও জেলার অন্যান্য সংগঠনের লোকদের নিয়ে বসলাম সেখানে উপজেলা কর্মকর্তাদের মাঝে নাহিদা বারিকের কথা উঠলো।
তার বিষয়ে শুধু জেলা প্রশাসক কথা বলেছে তাই না, সে বলতেই পারে তার কর্মকর্তা।কিন্তু শুধু সে নয় সেখানে উপস্থিত পুলিশ সুপার ও অন্য সংস্থার লোকরাও তার প্রশংসাং পঞ্চমুখ ছিলেন।তারা বলেছেন সেদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা রাত পর্যন্ত ইউএনও পা ফোলে যাবার পরও পায়ে স্যান্ডেল পড়ে সেখানে সাহসের সাথে কাজ করেছে নারায়ণগঞ্জবাসীর নিরাপত্তার জন্য।
তিনি আগামীতে নারায়ণগঞ্জে করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতিতে নতুন ইউএনও কিভাবে কাজ করবে সে বিষয়ে দুঃশ্চিন্তা প্রকাশ করে বলেন,সামনে যে অবস্থায় যাবে সেটা নিয়ে আমি আতংকিত।কারন নাহিদা বারিক যেভাবে সবার সাথে মিশে গেছে। কোথায় কিভাবে কাজ করতে হবে জানে।কিন্তু যে ইউএনও আসবে তাকে আমি ভালো না বলবো না।সেও ভালো।কিন্তু খাবার কিভাবে সবার কাছে পৌছিয়ে দিবে, কার সাথে কথা বলবে তা জানবে না।আমি ভালো পুলিশ সুপার পেয়েছি।
একজন পারফেক্ট পুলিশ সুপার মুক্তিযোদ্ধার সন্তান,জেলা প্রশাসক মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডের ছেলে সবাই অনেক ভালো।কিন্তু আমি আমার এই ছোট বোনটাকে অনেক মনে করবো।তার অভাবটা রয়ে যাবে।
তিনি আরো বলেন,একজন ইউএনও হিসেবে না আমার ছোট বোন হিসেবে নাহিদা বারিকের জন্য দোয়া করি।আমার ইচ্ছে ছিলো তার কোন অভিযোগ সম্পর্কে উপদেশ দিবো কিন্তু তার সুযোগও পাই নাই।কারন সে খুব দক্ষ আমার থেকে বেশি যোগ্যতা তার।আমার পরিবারের সকল সদস্যদের যেভাবে দেখি নাহিদা বারিক আমার বোনের মত তাকেও সেভাবেই মনে রাখবো।
তার সাথে আমার দেখা হবে তারপরও নারায়ণগঞ্জবাসী তার অভাবটা মনে রাখবে।নারায়ণগঞ্জ জেলায় কোন মহিলা ডিসি আসেনি কিন্তু অবশ্যই আমি দোয়া করবো নারায়ণগঞ্জ জেলায় সে ডিসি হয়ে আসুক।
এর আগে নাহিদা বারিককে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন অফিসের কর্মকর্তা,কর্মচারী,রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব,জনপ্রতিনিধি ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা।
বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এড.আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন, সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান মো. নাজিমউদ্দিন,মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা মনির, সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম রেজা মাসুম,সদর ওসি(তদন্ত)মোস্তাফিজুর রহমান, ফতুল্লা ওসি(তদন্ত)শফিকুল ইসলাম,উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান,ইউপি সদস্য, প্রশাসনিক কর্মকর্তাবৃন্দ।