দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জ এলজিইডিকে বৃদ্ধা আঙ্গুলি দেখিয়ে সদর উপজেলার ইসদাইর আরসিসি ঢালাই রাস্তা কেটে ড্রেনের লাইন করা অভিযোগ উঠে আসেছে ঐ এলাকার শান্তা গার্মেন্টসের বিরুদ্ধে।
অন্যদিকে, সিটি কর্পোরেশনের কন্ট্রাক্টর মোস্তফা ১০লাখ টাকার বিনিময় ড্রেনের কাজ করছে বলে জানা যায়।
এদিকে অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইসদাইর হাসনাত মার্কেট সংলগ্ন এলাকায় ১০ ফুট দুরুত্বে দুইটি ড্রেনের লাইনের জন্য ২ ফুট করে আরসিসি ঢালাই রাস্তা কেটে ফেলা হয়েছে।
এদিকে সূত্র জানায়, শান্তা গার্মেন্টস মালিক সুরেশ বাবু তার গার্মেন্টস এর বিদ্যুৎ এর সংযোগের জন্য উপজেলা এলজিইডি অফিসে আবেদন করেছে। এখনো পর্যন্ত তাকে এলজিইডি অফিস থেকে কোন অনুমোদন দেওয়া হয়নি। কিন্তু তিনি ১৩ জুলাই ২ ফুট রাস্তা কেটে ড্রেনের লাইনের কাজ শুরু করে দেয়। খবর পেয়ে উপজেলা উপ প্রকৌশলী মোঃজামাল উদ্দিন ঘটনাস্থলে এসে দায়সারাভাবে কাজ বন্ধ করায়।কিন্তু পুনরায় সুরেশ বাবুর নির্দেশে ড্রেনের কাজ চালু হয়েছে।
সরকারি দপ্তর এলজিইডিকে বৃদ্ধা আঙ্গুলি দেখিয়ে একজন গার্মেন্টস ব্যবসায়ী কিভাবে কাজ করছ? এবিষয়ে উপ প্রকৌশলী মোঃজামাল উদ্দিনের সাথে কথা হলে তিনি জানায়, আমাদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ এর লাইনের জন্য অনুমতি চেয়েছে। আমরা তাকে এখন পর্যন্ত কোন অনুমতি দেয়নি। তার আগেই সে রাস্তা কেটে ফেলেছে। তাকে একাধিকবার অফিসে আসার জন্য বলা হলেও তিনি আসেনি। তাই আমরা বাধ্য হয়ে তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করার ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। পরবর্তীতে থানা কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।
শান্তা গার্মেন্টস এর ড্রেনের রাস্তার কাজের জন্য সিটি কর্পোরেশনের কন্ট্রাক্টর মোস্তফা কামাল ১০ লাখ টাকা নেবার কথা উল্লেখ করে জামাল উদ্দিন বলেন, আমি শুনেছি নাসিক কন্ট্রাক্টর মোস্তফা কামালকে ড্রেনের লাইনের কাজের জন্য সুরেশ নামে একজন গার্মেন্টস ব্যবসায়ী ১০ লাখ টাকা দিয়েছে। আমি মোস্তফা কন্ট্রাক্টরের সাথেও যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি তাকে জিজ্ঞাসা করেছি তিনি কেনো এলজিইডি রাস্তা কেটে ড্রেনের লাইন করছে কোন অনুমতি ছাড়া। এ বিষয়ে তিনি আমার প্রশ্নের কোন উওর দেয়নি।
পাশাপাশি ১০ ফুট দুরুত্বে আরেকটি ড্রেনের লাইনের জন্য সিরাজ মিয়া নামে একজন বাড়িওয়ালা ১০ জুলাই রাস্তা কেটেছে সেটাও কি অনুমতি ছাড়া কেটেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,সিরাজ আমাদের কাছে অনুমতি চেয়েছে ড্রেনের লাইনের জন্য। ইতিমধ্যে সে ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে ফেলেছে।
গত ১৫ জুলাই উপজেলা এলজিইডি অফিস থেকে থানায় অভিযোগ পাঠানোর বিষয়টি জানানো হলেও ফতুল্লা থানায় এখনো পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলে জানায়।
ফতুল্লা ইউপি সদস্য আলী আকবর আরসিসি ঢালাই রাস্তা কাটার বিষয়ে জানায়, ঘটনার দিন আমাকে রাতে উপজেলা উপ প্রকৌশলী জামাল উদ্দিন ফোন দিয়ে আমার ওয়ার্ডের আরসিসি ঢালাই রাস্তা কাটার বিষয়টি অবগত করলে আমি কাজ বন্ধ করতে বলে। আমি রাতে এলাকার লোকজন দিয়ে রাস্তা কাটার কাজ বন্ধ করাই।আর এটা এলজিইডির তাই আর আমি আর কোন পদক্ষেপ নিতে পারিনি।
ইসদাইর এলাকাবাসী মোঃছিদ্দিকুর রহমান বলেন, আরসিসি ঢালাই রাস্তা কেটে ড্রেনের লাইনের কাজ করছে সিরাজ। আর সিটি কর্পোরেশনের কন্ট্রাক্টর মোস্তফা কামালকে ১০ লাখ টাকা দিয়ে আরেকটি ড্রেনের লাইন করার জন্য রাস্তা কেটেছে শান্তা গার্মেন্টস এর মালিক সুরেশ বাবু। মোস্তফা কামাল সিটির রাস্তার কাজের বাহিরে গিয়েও আরসিসি ঢালাইয়ের কাজ করছে এলজিইডি এর থেকে কোন অনুমতি না নিয়ে। পরপর দুইটা ড্রেনের জন্য রাস্তা কাটছে সিরাজ ও সুরেশ লোক দিয়ে।
নাসিক কন্ট্রাক্টর মোস্তফা কামালের কাছে এলজিইডি অনুমতির বিষয়টি ও ১০ লাখ টাকার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন,সিটি কর্পোরেশন বাহিরেও আমরা কাজ করতে পারি।আর এই রাস্তার ড্রেনের কাজ করছে ব্যক্তি মালিকানায়। আমার শ্রমিকেরা শুধু কাজ করছে। ১০ লাখ টাকার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর না দিয়ে উঠে চলে যান।
এলজিইডির অনুমতি ছাড়াই কেনো আরসিসি ঢালাই রাস্তা কেটে ড্রেনের কাজ করছে এই বিষয়ে জানার জন্য একাধিকবার শান্তা গার্মেন্টসের মালিকের কাছে মুঠোফোনে কল দিলে তিনি কল রিসিভ করেননি।
অন্যদিকে, এলাকাবাসী মনে করছে নগর উন্নয়নের জন্য এভাবে অপরিকল্পিতভাবে এলজিইডির দায়সারাভাবে কাজ করার ফলেই যেকোন ব্যক্তি আরসিসি ঢালাইয়ের মত রাস্তা কেটে নিজেদের প্রয়োজনে কাজ করছে। কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাস্তা এভাবেই কোন অনুমতি ছাড়া কেটে করছে এলাকাবাসীর জন্য দূর্ভোগ। আরসিসি রাস্তা কেটে ফেলায় অনেকে মনে করছে এই রাস্তা আস্তে আস্তে ভাঙ্গন শুরু হবার।যার ফলে আবারো রাস্তা ভঙ্গর অবস্থায় চলে আসবে।
অন্যদিকে রাস্তা পাশাপাশি দুই ১০ ফুট দুরুত্বে কেটে ফেলায় এলাকাবাসীর চলাচলেও সৃষ্টি হয়েছে সমস্যার।