দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ বাংলাদেশের গুরুত্বপুর্ন জেলা গুলোর মধ্যে অন্যতম ঢাকার পাশর্^বতী জেলা নারায়ণগঞ্জ। দেশের অর্থনৈতিক অবকাঠামো থেকে শুরু করে সর্বক্ষেত্রেই বিশ^ বাজারে মাথা উচু করে নিজের অবস্থান জানান দেয়া অধিকাংশ সময়ই।
পাশাপাশি রাজনৈতিক অঙ্গনের আন্দোলনের সূতিকাগার হিসেবে জেলাটি অতীতে ছিলো বেশ আলোচনায়। বর্তমান রাজনৈতিক অঙ্গনে এই জেলার অবস্থান ঢিলেঢালা হলেও ভবিষ্যত্ব নিয়ে বেশ চিন্তিত সচেতন মহল। আর এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী খোদ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। তবে এখনও প্রবীন রাজনীতিবিদদের সিদ্ধান্ত পাল্টে যেতে পারে এই জেলার ভবিষ্যত রাজনীতি।
তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে তরুন রাজনীতিবিদগন নিজের বর্তমান অবস্থান এবং ভবিষ্যত্ব নিয়ে বেশ আশাবাদী। সেটাও সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। সাংগঠনিক দক্ষতা, রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও অনেক তরুন রাজনীতিবিদগন এখনও রয়েছে পিছিয়ে।
নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টির রাজনীতি গুটি কয়েক পরিবারের মধ্যেই আবদ্ধ। বর্তমান রাজনীতি করতে হলেই এই ভাই আর সেই ভাইয়ের সমর্থন ছাড়া সব কিছুই অসম্ভব। তাছাড়া দ্বন্ধের সীমা উত্তর, দক্ষিন, পুর্ব, পশ্চিম তো আছেই। তাই অনেক পরিবার তাদের সন্তাদেরকে রাজনীতিতে আসতে বাঁধা প্রদান করে থাকে।
আবার অনেক তরুন সমাজ জনসেবা করার জন্য বিভিন্ন সংগঠনে যুক্ত রয়েছেন তবে সেটা রাজনৈতিক ছায়া থেকে অনেক ধুরে। আবার কেউ কেউ সকল বাঁধা পেরিয়ে নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।
এ সকল তরুন রাজনীতিবিদ ও সংগঠকরা হলেন,
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবুল কাউছার আশা, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সাবেক সাংসদ হাজী জালাল উদ্দিন আমেদের নাতী আশা। তার বাবাও বর্তমান মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ৩ বারের সাংসদ এ্যাড. আবুল কালাম। এ্যাড. আবুল কালাম একাধিকবার এমপি নির্বাচিত হলেও এই জেলায় তার প্রশংসা রয়েছে বেশ জোড়ে সোড়ে।
ক্লিন ইমেজ এই নেতার ছেলের এই পরিচয় নিয়ে রাজনীতিতে দ্রুতগামী হওয়ার কথা থাকলেও মামলা, হামলা আর গ্রেফতারের কারনে রাজনীতিতে অনেক পিছিয়ে থাকতে হয়েছে তাকে। তবুও শত বাঁধা উপেক্ষা করে রাজনীতিতে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে এখনও সক্ষমতার পরিচয় দিয়ে এসেছেন আবুল কাউছার আশা। স্বপ্ন দেখেন ভবিষ্যতে দাদা ও বাবার মত জনপ্রতিনিধি হয়ে মানুষের সেবা করার।
শেখ সাফায়াত আলম সানি, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সফল সভাপতি এবং আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। বিগত দিনে সারা দেশে যখন ছাত্রলীগের কর্মকান্ডে প্রশ্নবিদ্ধ ছিলো এই সংগঠনটি। ঠিক তখনও নিজের রাজনৈকিত দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। তাকে নিয়ে জেলাবাসীর আশা ছিলো ভবিষ্যত্ব আওয়ামী লীগের শক্তিশালী সংগঠক হবেন এই তরুন রাজনীতিবিদ।
কিন্তু সেই স্বপ্ন এখন বাস্তবতার মোখ দেখেনি। কোন পদ পদবি না থাকা সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুর আর্দশ বুকে লালন করে এগিয়ে যাচ্ছেন জনগনের দ্বারগোরে। একাধিক জনসেবা মূলক সংগঠনের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় অসহায় মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন এই তরুন নেতা।
মিনহাজুল কাদের মিমন, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-আহবায়ক বাবা বীরমুক্তি যোদ্ধা ও জেলা যুবলীগের সভাপতি এবং জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল কাদের। পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর ভাগিনা। এতো পরিচয় থাকা সত্ত্বেও হঠাৎ করেই রাজনৈতিক পারা থেকে উধাও এই উদীয়মান তরুন রাজনীতিবিদ।
তবে অনেকেই মনে করেন, নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগের উত্তর ও দক্ষিন মেরুর রাজনীতির কারনেই তার পতন। তবে এই সকল তরুন রাজনীতিবিদগন রাজনৈতিক পারা থেকে এই ভাবে জ¦ড়ে পরলে, ভবিষ্যত্বে রাজনৈরতিক হালধরার মত যোগ্যতা সম্পুর্ন্য নেতা পাওয়া অসম্ভব হয়ে পরবে।
গোলাম মুহাম্মদ সাদরিল, রাজনৈতিক অঙ্গনে নিজের কোন ব্যক্তি পরিচয় না থাকলেও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সাংসদ গিয়াস উদ্দিনের ছেলের পরিচয় নিয়েই নাসিক ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। বাবা বিএনপির রাজনীতি করলেও গোরাপতন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন থেকে। ক্ষমতাশীনদের সাথে আতাঁতের অভিযোগ থাকলেও একের পর এক মামলা ও গ্রেফতার তাকে অনেকটাই পিছিয়ে দিয়েছে রাজনৈতিক কর্মকান্ড থেকে। তবে গুঞ্জন রয়েছে তার আপন বড় ভাই সানবির রাজনীতির জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন বাবার স্থানে বসার জন্য।
ইব্রাহিম আদহাম খান, রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হলেও বর্তমান কোন দলের সাথে জড়িত নন। দাদা নারায়ণগঞ্জ এর সাবেক এম এল এ আব্দুস সামাদ খান ও বড় ভাই চেম্বার অব কর্মাস এর সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল। সুশিক্ষিত ও সাংগঠনিক দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক মাঠে তার অবস্থান শুন্য। এর প্রধান কারন দ্বন্ধের সীমা উত্তর, দক্ষিন, পুর্ব, পশ্চিম।
তবে জনসেবামূলক কাজ করে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন এই তরুন সংগঠক। বর্তমানে তরুনদের আর্থসামাজিক উন্নয়নে নারায়ণগঞ্জ ইয়থ ক্লাব নামক যুব সংগঠন নিয়ে ব্যস্ত আছেন। তার সংগঠনের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জে সাবেক এক সেনাপ্রধান ও বিসিএস ক্যাডারদের সম্মাননা প্রদান করে রীতিমতো চমক সৃষ্টি করেছেন। এছাড়াও করোনা কালিন লকডাউনে তার সংগঠনের মাধ্যমে অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে যে চকম দেখিয়েছেন রাজনৈতিক বোদ্ধামহল এর মতে তার আগমনী ভাব এটা।
বর্তমানে কোন রাজনৈতিক শক্তির সাথে সম্পর্ক না থাকলে ও পারিবারিক অনুমতি পাওয়া মাত্র সমমনা রাজনৈতিক যেকোন শক্তির হয়ে তার অভিষেক ঘটবে। দাদা সাবেক এম এল এ আব্দুস সামাদ খান এর উত্তরসুরী হিসাবে সহসাই তিনি রাজনীতিতে পা দেবেন।
মুহাম্মদ হোসাইন, তরুন এই রাজনীতিবিদ স্বপ্ন দেখছেন সোনারগাঁ পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হওয়ার। বঙ্গবন্ধুর আর্দশকে বুকে লালন কওে দায়িত্ব পালন করছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের গণ-যোগাযোগ ও উন্নয়ন বিষয়ক উপ-সম্পাদক হিসেবে। ছিলেন সাবেক কমিটির উপ-ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে এছাড়াও ঢাকা বিশ^ বিদ্যালয়ের কমিটিতে সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। এতো অল্প বয়সে এতো দায়িত্ব পালন করার পরও নোংরা রাজনীতির কারনে কিছুটা পিছিয়ে পড়েছেন এই তরুন নেতা। তবুও হারমানতে নারাজ তিনি লড়াই করে রাজনৈতিক মাঠে আকড়ে ধরে রেখেছেন নিজের অবস্থানকে।