দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে নাম লিখিয়েছে জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। ১৯৭১ সালে জাতির জনক ডাক দিয়েছিলেন এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
আমি যদি হুকিম দিবার নাও পারি তোমাদের যা কিছু আছে তা নিয়েই শত্রুর মোকাবেলা করো। আমরা সেদিন বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে যুদ্ধ করে এ দেশকে স্বাধীন করেছি। ১৯৭১ সালে তিনি যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ যখন শুরু করছিলেন তখন দেশবিরোধী চক্র তাকে হত্যা করে। তারা বিশ্বাস করেছিল বঙ্গবন্ধু যদি বেচে থাকে তার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়ে যাবে তাই স্বাধীনতা সংগ্রামের বিরোধীরা সেদিন জাতির জনককে হত্যা করে।
বুধবার ১৮ আগস্ট দুপুর ২টায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক প্রফেসর ডা. আতিকুজ্জামান সোহেলের উদ্যোগে স্বাধীনতা মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা জি এম আরাফাতের সঞ্চালয়নায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের সহধর্মিনী সুলতানা রাজিয়া, বন্দর আওয়ামীলীগের প্রবীণ নেতা আইয়ূব আলী, মহানগর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি শেখ হায়দার আলী পুতুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিএম আরমান,
জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, জেলা পরিষদের সদস্য ও সাবেক তোলারাম কলেজ ছাত্রসংসদের জিএস জাহাঙ্গীর আলম, জেলা পরিষদের সদস্য ফারুক হোসেন, নাসিক সাবেক প্যানেল মেয়র ও ১৪নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, জেলা আওয়ামীলীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. নিজাম আলী,
মহানগর আওয়ামীলীগের কার্যকরি সদস্য ও বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের পরিচালক সাখাওয়াত হোসেন সুমন, মহানগর আওয়ামীলীগের কার্যকরি সদস্য ও বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের পরিচালক সাব্বির আহম্মেদ সাগর, মহানগর শ্রমিকলীগের সাংগঠনিক সম্পাতক মোঃ রয়েল, ১৬নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিক,
আওয়ামীলীগ নেতা নুরুজ্জামান, আমিনুল ইসলাম রিপন, সাবেক ছাত্রনেতা সেলিম হাসান দিনার, আলী হোসেন সজীব, জেলা যুবলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক তাহের উদ্দিন আহম্মেদ সানি ও ১৫নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা মোশাররফ হোসেন জনি প্রমুখ।
আনোয়ার হোসেন আরো বলেন, আজকে কিছুক্ষণ আগে পড়লাম বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর যারা বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বাজাতে দিত না তারা এখন আওয়ামী লীগ নেতা। আজকে সারা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, সবাই আওয়ামী লীগ।
যখন আওয়ামী লীগের দুর্দিন হয় তখন আমরা লেজ গুটিয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যাই। আর এখন আওয়ামী লীগের হাইব্রিডদের কারনে ত্যাগীরা আজ কোণঠাসা হয়ে গেছে। সব জায়গায় চাকরিজীবী লীগ, সৈনিক লীগ, অমুক লীগ তমুক লীগ বানিয়ে তারা আওয়ামী লীগ।
আর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কোণঠাসা। মানুষকে ভালবাসতে হবে। মানুষের সেবা করতে হবে। মানুষকে ভাল না বাসলে জীবন বৃথা হয়ে যাবে। আমাদের জন্মই হয়েছে মানুষের সেবা করার জন্য।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে দুই ধরনের রাজনীতি চলছে। একটা ওসমান পরিবারের আরেকটা চুনকা পরিবারের। আমি একজন সাধারণ কর্মী। পচাত্তরের ১৫ই আগস্ট সারা নারায়ণগঞ্জে যখন কেউ ছিল না আমরা দশ বারো জন মিলে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে মিছিল করেছিলাম।
বঙ্গবন্ধুর কর্মী হিসেবে আমি বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদ করতে পেরেছি এটাই আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া। অনেকে অনেক বড় কথা বলেন। ৮০ সালের পরে যারা রাজনীতিতে এসেছে তারাও যখন বলে আমরা পচাত্তরের পরে রাজনীতি করেছি তখন বলার কিছু থাকে না। পচাত্তরের পর নারায়ণগঞ্জে অনেককেই খুজে পাওয়া যায়নি।
এর আগে জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, জেলা পরিষদের সদস্য ও সাবেক তোলারাম কলেজ ছাত্রসংসদের জিএস জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুন্দর ভাবে দেশ পরিচালনা করছেন। জিয়াউর রহমান আমলে আমি তোলারাম কলেজ ছাত্রসংসদের জিএস ছিলাম, শামীম ছিলো ভিপি।
যারা বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালন করেন তাদেরকে ধিক্কার জানাই। ১৯৮১ সালেও ক্ষমতা থেকেও জিয়াউর রহমান তার স্ত্রী (খালেদা জিয়া) জন্মদিন পালন করেনি। নারায়ণগঞ্জ বালুমাঠে হেলিকপ্টার নিয়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে জিয়া আসলে আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে রাস্তায় শুয়ে পড়ে ছিলাম। তখন গুলি করতে চেয়ে ছিল তাকে ঘিরে রাখা সেনা সদস্যরা।
পরে জিয়াউর রহমানের হাতে ইশারা তাদের থামিয়ে আমাদের কথা শুনতে সামনে আসেন। পরে তাকে আমি সবার সামনেই তোলারাম কলেজকে সরকারী করণ ও নারায়ণগঞ্জ-কে জেলা ঘোষনা করার দাবি জানাই। পরে তিনি তোলারাম কলেজকে তাৎক্ষনিক সরকারী হিসেবে ঘোষনা দেন। আজ যারা গর্জন করে তাদের ওই সময় তোলারাম কলেজেরর ভিতরে ছিলেন।
বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে জাহাঙ্গীর বলেন, নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের বিশৃঙ্খলা চলছে, যাহা দেশে কোথাও এমন হয় না।
কবরস্থান মাটি নিয়ে রাজনীতি করে। এই কবরস্থানটি দান করে ছিল এক হিন্দু পরিবার। এমপি মেয়র চেয়ারম্যানরা যার যার কাজ সঠিক ভাবে পালন করলে নারায়ণগঞ্জ উন্নয়ন হবে। চলুন আমরা সবাই একসাথে আওয়ামীলীগ করি, তাহলে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগ আরো শক্তিশালী হবে।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা জি এম আরাফাত বলেন, আওয়ামীলীগের ক্ষুদ্র এক কর্মী হয়ে সত্য কথা বলতে ভয় পায় না। আওয়ামীলীগকে ক্ষতি করে কেউ লাভবান হবেন আর শেখ হাসিনা থেকে বেচেঁ যাবেন, তা কিন্তু কখনো হয়নি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ উন্নত দেশ রূপান্তর করতে রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে। আজ বাংলাদেশকে স্বাধীন করার কারণে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে হত্যা করেছে দেশ বিরোধীরা। বঙ্গবন্ধু ছিলেন জনকল্যাণ একজন নেতা। তার স্বপ্ন ছিল বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ নাম থাকবে স্বর্ণের অক্ষরে। বাঙালী জাতির ভাগ্য পরিবর্তন করতে মহান আল্লাহ আমাদের শ্রদ্ধের নেত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা-কে বাচিঁয়েছে রেখেছে।
আরাফাত আরো বলেন, এখন মোটা নেতাদের কদর বেশি। চিকন নেতাদের কদর কমে গেছে। যাদের দামি গাড়ী বাড়ী রয়েছে সে সব নেতাদের পিছনে ছুটতে আমাদের নতুন প্রজন্মরা। আওয়ামীলীগ করতে হলে বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভালোবাসতে হবে।
কিছুদিনের খুশি’র জন্য দামি গাড়ী বাড়ি নেতাদের পিছনে ছুটে কোন লাভ নেই। অনেক রয়েছে সামনে বড় বড় কথা বলে, পিছনে গিয়ে নরম সুরে কথা বলে। এগুলো ছেড়ে দিয়ে আওয়ামীলীগকে শক্তিশালী রাজনীতি দল করার জন্য পরিশ্রম ও মেধা বিকাশ করুন।