দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ দীর্ঘদিন পর যখন কোন বাড়িতে নতুন কোন মেহমানের আগমন হয় তখন সেই বাড়িতে আনন্দের সীমা থাকেনা। ঠিক তেমনীভাবে ফতুল্লা ইউপির প্রতিটি ভোটারের মাঝে আনন্দ বিরাজ করছে প্রায় ৩০ বছর পর এ ইউপিতে নির্বাচনের আমেজ তৈরী হয়ে। আগামী ২৩ ডিসেম্বর ৪র্থ ধাপে ইউপি নির্বাচনে ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে সেই তালিকায়।
ইতিমধ্যে ফতুল্লা ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থিত নৌকা প্রতীকের জন্য ৮ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।
ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফতুল্লা যুবলীগের সভাপতি মীর সোহেল আলী,ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ফতুল্লা ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান খন্দকার লূৎফর রহমান স্বপন,থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ফরিদ আহমেদ লিটন,থানা আওয়ামী লীগের সদস্য মুজিবুর রহমান,থানা আওয়ামী লীগের সদস্য ও থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু মোঃ শরীফুল হক,থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাইজুল ইসলাম,আওয়ামী লীগের সভাপতি মিছির আলী,যুবলীগ নেতা জানে আলম বিপ্লবের প্রস্তাবিত নাম প্রকাশ করেন ফতুল্লা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ।
এদিকে ইউপি নির্বাচনে আওয়ামীলীগের ৮জন প্রার্থী থাকলেও এখনও পর্যন্ত অন্যকোন দলের প্রার্থীর নাম শোনা যায়নি। যদিও বিএনপি ১ম ও ২য় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেয়নি। নিয়েছে জাতীয় পার্টি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। কাশিপুরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত প্রার্থীকে হামলা চালিয়ে মাথাও ফাটিয়েছিলো নৌকার প্রার্থী এম.সাইফুল্লাহ বাদলের ছেলেসহ সঙ্গীয়রা। বক্তাবলীতেও জাপার প্রার্থীকে সদর উপজেলা অভ্যন্তওে নাজেহাল করা হয়েছিলো নৌকার প্রার্থীর লোকজনের পক্ষে। আবার বাসদের পক্ষ থেকেও কুতুবপুরে প্রাথমিকভাবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও হুমকী-ধামকী ও নির্বাচনের পরিবেশ না থাকায় সরে গিয়েছিলেন তিনি।
সদ্য সমাপ্ত ইউপি নির্বাচনে কয়েকটি ইউপিতে দেখা যায় নৌকার বিপরীতে দাড়ানো প্রার্থীকে নির্বাচনের আগের দিন ভয়ভীতি প্রদান করে সরে দাড়াতে বাধ্য করা হয়েছে এবং আবার আগামী ২৮ নভেম্বর ৩য় ধাপের নির্বাচনে সোনারগাঁয়ের ৮টি ইউপি থেকে ৪টি ইউপিতে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে গেছে ভোট ছাড়াই। ফতুল্লা ইউপিতে যে ৮জন নৌকা প্রতিকের জন্য নির্বাচনের জন্য নাম ঘোষনা করেছে তারা সবাই একটি পরিবারের সদস্য ( আওয়ামীলীগের )। সে ক্ষেত্রে নারায়ণগঞ্জের অন্যান্য ইউপির ন্যায় ফতুল্লা ইউপিতেও কর্তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন নেতাই নির্বাচনে আসবেনা। অথ্যাৎ সেই কর্তাবাবু যাকে সাপোর্ট করবেন তিনিই হবেন ফতুল্লা ইউপির নতুন চেয়ংারম্যান। যদি তাই হয় তাহলে ২৩ ডিসেম্বর ফতুল্লা ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের সম্ভবনা নেই বললেই চলে হবে শুধুমাত্র মেম্বার পদে ভোটগ্রহন।
অন্যদিকে ৩০ বছর পর নির্বাচনের ঘোষনা পাওয়ার আনন্দে আতœহারা ইউপির প্রতিটি ভোটার। তারা তাদের মুল্যবান ভোটের মাধ্যমে আগামী ৫ বছরের জন্য তাদের মনোনীত চেয়ারম্যান-মেম্বারকে নির্বাচিত করবেন এমন আশায় প্রহন গুনছেন ২৩ ডিসেম্বরের অপেক্ষায়। কিন্তু এখানে যদি শুধুমাত্র আওয়ামীলীগের প্রার্থী ব্যতিত অন্যকোন দলের প্রার্থী না থাকে তাহলে তাদের আশা গুড়েবালির মত।
আবার যদি কাশিপুর বা এনায়েতনগরের মত অবস্থা হয় যে প্রতিপক্ষ দলের প্রার্থীকে নির্বাচনের ২/১ দিন আগে ভীতি প্রদান করে বসিয়ে দেয়া হয় তাহলে সেটা হবে সীমাহীন প্রহসনের মত। তবে ইউপির সর্বস্তরের ভোটাররা চান ৩০ বছর পরে যেহেতু এখানে নির্বাচন হবে তাহলে সেটা যেন হয় ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত চেয়ারম্যান। তাহলে হয়তবা আমাদের ৩০ বছরের ভোট না দেয়ার দুঃখটা একটু হয়তবা ঘুচবে। আর যদি তা না হয়ে কর্তার ইচ্ছেতে হয় তাহলে ফতুল্লা ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন না হওয়ার সম্ভবনাই বেশী।
উল্লেখ্য যে,তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৫ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিল, ২৯ নম্বর মনোনয়পত্র যাচাই-বাছাই, ৩-৫ ডিসেম্বর আপিল নিষ্পত্তি, প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৬ ডিসেম্বর এবং প্রতীক বরাদ্দ করা হবে ৭ ডিসেম্বর। ভোটগ্রহণ করা হবে ২৩ ডিসেম্বর।