দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জে ২৫ বছরের নিচে শিক্ষার্থীদের দেওয়া হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের কারখানায় উৎপাদিত মার্কিন ওষুধ কোম্পানি ফাইজার এর বায়োনটেকের টিকা। তবে সবাই যখন যেই ভ্যাকসিনের সুযোগ আছে সেটা নেওয়া উচিত বলেছেন সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শেখ মোস্তফা আলী।
মঙ্গলবার সকালে শহরের নিতাইগঞ্জ এলাকায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নগর ভবন প্রাঙ্গনে শীতাতপ নিয়ন্ত্রীত কক্ষে ওই টিকা দেন স্বাস্থ্য কর্মীরা।
সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শেখ মোস্তফা আলী বলেন, ‘চারজন স্বাস্থ্য কর্মী দিয়ে দুটি বুথে ফাইজার টিকা দেওয়া হচ্ছে। যেখানে ৪০০জনকে দেওয়ার কথা সেখানে আমরা মানুষের চাহিদা অনুযায়ী ৬০০ জনকে এ টিকা দিচ্ছি। আমরা ১৬ হাজার টিকা পেয়েছি। সমানভাবে দিতে পারবো। এছাড়াও আমরা আবেদন দিয়ে রাখবো যাতে আরো টিকা আমাদের দেওয়া হয়।’
ফাইজার টিকা নেওয়ার জন্য কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গ আছেন? তিনি বলেন, ‘এমন কোন নির্দেশনা নেই যে নির্দিষ্ট লোকদের ফাইজার টিকা দিতে হবে। এটা যেতে আনা নেওয়া ও তাপমাত্রা সংরক্ষণ করে শীততাপ নিয়ন্ত্রণ কক্ষে দিতে হয় সেজন্য আমরা সীমিত লোককেই দিচ্ছি।
তবে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বয়স্ক লোকদের আগে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও ২৫ বছরের নিচে শিক্ষার্থীদেরও টিকা দেওয়া হয়েছে। তবে শুনেছি ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদেরও এ ভ্যাকসিন দেওয়া হতে পারে। তবে সে বিষয়ে এখনও আমরা কোন দিক নির্দেশনা পাইনি।’
ফাইজার টিকা গ্রহণ করেন বন্দর এলাকার সরকারি কদম রসূল কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র সোহেল রানা। তিনি বলেন,‘টিকা নিয়ে আমি সুস্থ আছি। কোন সমস্যা দেখা দেয়নি। ফাইজার টিকা নিতে পেরে আমি সত্যিই অনেক খুশি। অনেক দিন ধরে অপেক্ষায় ছিলাম টিকা নেওয়ার জন্য। দীর্ঘদিন পরেও ফাইজার টিকা নিতে পেরে সত্যিই ভালো লাগছে। কারণ অনেকেই বলেন ফাইজার টিকা নাকি সব থেকে ভালো।’
ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজের ছাত্রী হাফসা আক্তার বলেন,‘টিকা নেওয়ার পর আমি সুস্থ আছি। কোন সমস্যা হয়নি।’
শেখ মোস্তফা আলী বলেন,‘আমাদের বাংলাদেশে চারটি টিকা প্রচলিত আছে। টিকা নিয়ে মানুষের মধ্যে একটি ভীতি কাজ করে যে, কোন টিকা ভালো, কোন টিকাটা খারাপ, কোনটা নিলে আমরা বেশি সুস্থ থাকবো? আসলে সব টিকার কার্যক্ষমতা কাছাকাছি। সবগুলো ভালো কাজ করে। স্বাস্থ্য ভেদে যার যার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভেদে এটা কাজ করে। তাই এটা নিয়ে মানুষের মনে ভীতি সঞ্চারের কোন সুযোগ নেই বা প্রয়োজন নেই। আমরা মনে হয় সবাই যখন যেই ভ্যাকসিনের সুযোগ আছে সেটা নেওয়া উচিত। তবে সবাইকে এ ভ্যাকসিন গ্রহণ করা উচিত।
কারণ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ ভালো। আমরা প্রতিরোধ প্রক্রিয়া অবলম্ব করছি শুরু থেকেই। মাস্ক ব্যবহার, হ্যান্ড স্যানেটাইজার ও স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের মাধ্যমে। এখন আমাদের সর্বশেষ সংযোজন ভ্যাকসিন গ্রহণ করা। আমি মনে করি আমাদের ৭০ থেকে ৮০ শতকরা মানুষ যদি ভ্যাকসিনের আওতায় আনা যায় তাহলে হার্ড হিউম্যানিটি অর্জন করতে পারলে আমাদের দেশের কোভিড সংক্রমণের হার অনেকটাই কমে যাবে।
দেশবাসী এ মহামারী থেকে মুক্তি পাবে। তাই সবাইকে বাধ্যতামূলক ভাবে স্বাস্থ্যবিধি পালন, ভ্যাকসিন গ্রহণ করা উচিত। আমি ভ্যাকসিন নিলাম কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি পালন করলাম না এক্ষেত্রে আমি নিরাপদ এটা কেউ নিশ্চিত করতে পারছে না। এক্ষেত্রে সচেতনতার বিকল্প নাই। তাই প্রতিরোধ প্রক্রিয়া ব্যাপক ভাবে পালন করতে হবে।’