দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: আসন্ন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নৌকার মাঝি নিধারন হলেও এখন ধানের চাষীর খোজ মিলেনি। ইতিমধ্যেই দলটির নীতি নিধারকরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহন করবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন বহু আগেই।
তবে কর্মীদের চাঙ্গাভাব ধরে রাখতে দলটির নীতি নিধারকরা বলেছেন সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করলে সাংগঠনিক কোন বাঁধা নেই বলে ঘোষণা দিয়েছেন। সেই ক্ষেত্রে এই সুযোগটি কাজে লাগাতে অনেকেই ভোটের লড়াইয়ে অংশ গ্রহন করবেন বলে ধারনা করা হচ্ছে।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে বিএনপির হেভীওয়েট প্রার্থী হিসেবে যাকে প্রথম সাড়ি তালিকায় রাখা হয় তিনি জেলা বিএনপির আহবায়ক ও চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এ্যাড. তৈমূর আলম খন্দকার।
নির্বাচনের মেয়র প্রার্থী হওয়া বিষয় তিনি বলেন, আমি দলের নীতি নিধারকদের সাথে আলোচনা না করে কোন কিছু বলতে পারবো না। এই মুর্হুতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার বিষয় নিয়ে আমরা চিন্তা করছি। তবে আগামী শুক্রবার দলের নেতাকর্মীদের সাথে নির্বাচন নিয়ে আলোচনায় বসবো। তারা কি সিদ্ধান্ত দেয় সেটা নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দদের সাথে আলোচনা করে আমি সিদ্ধান্ত জানাবো নির্বাচন করবো কি করবো না।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি এ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খান নির্বাচনে অংশ গ্রহন করার উদ্দেশ্যে রোববার মনোনয়ন ক্রয় করবেন বলে জানান।
তিনি আরও বলেন, বিগত সিটি নির্বাচনে আমি দলের সমর্থন নিয়ে ধানের শীষ প্রতিকে ভোটের লড়াইয়ে অংশগ্রহন করে ছিলাম। সেই সুবাদে এবারও মনোনয়ন কিনবো। দল যদি আমাকে নির্বাচন করতে বলে আমি করবো আর যদি নির্বাচন করতে নিষেধ করে সরে দাড়াবো।
অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির একাধিক প্রার্থীরা ভোটের লড়াইয়ে অংশগ্রহন করার ঘোষণা দিলেও সেটা এখন পর্যন্ত স্থানীয় মিডিয়াতেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে দলের নীতি নিধারকরা সতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে নেতাকর্মীদের নির্বাচনে অংশ গ্রহন করার ঘোষণা দেওয়াতে এই সুযোগটি অনেকেই কাজে লাগাতে পারে। সেই ক্ষেত্রে শেষ বেলায় বিএনপি থেকে একাধিক সতন্ত্র প্রার্থী মনোনয়ন ক্রয় করার বিষয়টিকে উড়িয়ে দেয়া যায় না।
কারন নাসিক নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল, সহ-সভাপতি এ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খান, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু। তারা সবাই যদি নির্বাচনে ব্যক্তি ইমেজ কাজে লাগিয়ে নিজেদের সতন্ত্র প্রার্থীর তালিকায় রেখে মনোনয়ন ক্রয় করে।
তাহলে বিএনপি থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে পারে একাধিক প্রার্থী। আর এই সুযোগে ক্ষমতাশীনদের কোন হেভীওয়েট প্রার্থী সতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহন করলে ভোটের লড়াইয়ে আইভীর জন্য হতে পারে অশুভ সংকেত।
তবে সব কিছুর পরও দেশের বড় দল বিএনপির নীতি নিধারকরা কি সিদ্ধান্ত দেয় সেটা এখন দেখার বিষয়। কারন নির্বাচন নিয়ে তারা যদি কোন সিদ্ধান্তে না যায়। সে ক্ষেত্রে শেষ বেলায় বিএনপির একাধিক প্রার্থী হওয়ার সম্ভবানা অনেক বেশি।
আর সেটা বাস্তবায়ন হলে বিএনপির ঘরের ভোট ঘরেই থাকবে। সেটা ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর জন্য হতে পারে নির্বাচনী বড় ধাক্কা। কারন আইভীর নির্বাচনে জয়ের জন্য ভোটের একটি বড় অংশ আসে বিএনপি-জামায়াতের ঘর থেকে। কারন নারায়ণগঞ্জ বিএনপিকে রাজনৈতিক কার্যালয় ভেঙ্গে ঘরহীন করতে কৌশল অবলম্বন করেছেন মেয়র আইভী। সে ক্ষেত্রে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির তৃণমূলের ভোট আইভীর পক্ষ না যাওয়াটা অসম্ভব কিছুই না।
এদিকে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের মধ্যে রয়েছে দুই মেরুর রাজনীতি যেখানে মেয়র আইভীর বলয়কে বলা হয় দক্ষিন ও সাংসদ শামীম ওসমান এবং সেলিম ওসমানের বলয়কে বলা হয় উত্তর মেরু।
এখানে দলের সমর্থন নিয়ে দক্ষিন মেরুর মেয়র আইভী নৌকার মাঝি হওয়ার পর অনেকটাই নিরবতায় আছে উত্তর মেরুর রাজনীতি। বিএনপির একাধিক প্রার্থী মেয়র নির্বাচনে অংশগ্রহন করলে সেই সুযোগ অবশ্যই কাজে লাগিতে মরিয়া হয়ে উঠবেন বলে ধারনা করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে উত্তর মেরুর রাজনীতি থেকে জাতীয় পার্টির কোন হেভীওয়েট প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহন করলে পাল্টে ভোটের সমিকরন।
তবে সব কিছু জনসম্মুখে পরিষ্কার হতে সময় লাগবে আরও কিছু দিন।