দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের আয়োজনে বিজয় সমাবেশে নগরীর রাসেল পার্কে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা যেখানে করলেন আসন্ন ১৬ জানুয়ারি নাসিক নির্বাচনের নৌকার মেয়র প্রার্থী ডা.সেলিনা হায়াৎ আইভীকে সমর্থন ঠিক সেই সময়েই নিজ স্বার্থে কেন্দ্রীয় নেতাদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রায়ফেল ক্লাবে ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে করলেন মতবিনিময় সভা ফতুল্লার নেতাকর্মীদের সাথে নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের এমপি একেএম শামীম ওসমান।

মুখে আওয়ামী লীগ,আওয়ামী লীগ আর নৌকা বলে ফেনা উত্তরালেও করছেন নৌকার মেয়র প্রার্থীর বিরোধীতা শামীম ওসমান। তাছাড়া নাসিক নির্বাচন উপলক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড.আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল,মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড.খোকন সাহা,সিনিয়র সহ-সভাপতি চন্দন শীল মেয়র ডা.সেলিনা হায়াৎ আইভীর সাথে নৌকা প্রতীকের জন্য আবেদন করলেও কেন্দ্র থেকে ডা.সেলিনা হায়াৎ আইভীকে নৌকায় সমর্থন জানানো হয়।

এর আগে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আইভীকে নিয়ে এই তিন নেতা সহ শামীম ওসমান বিভিন্ন কুরুচিপূর্ন মন্তব্য করলেও কেন্দ্র থেকে নৌকায় আইভীকে সমর্থন জানানোর পর ইতিমধ্যে এড.আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল ও এড.খোকন সাহা আইভীকে সমর্থন জানিয়েছে।কিন্তু এখন পর্যন্ত চন্দন শীল ও নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের এমপি শামীম ওসমানকে দেখা যায়নি সমর্থন জানাতে।

অন্যদিকে পরপর দুইবার কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিত অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত থেকে ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলে শামীম ওসমান আবারো প্রমাণ করলেন কেন্দ্রীয় নেতারা তার কাছে খুবই নগন্য সেই সাথে নৌকার মেয়র প্রার্থী ডা.সেলিনা হায়াৎ আইভীকে সমর্থন দিচ্ছেন না।

এর আগে গত ২০ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নৌকার মেয়র প্রার্থী ডা.সেলিনা হায়াৎ আইভীর জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের দিক নির্দেশনা দিতে প্রধানমন্ত্রী একটি ভার্চুয়াল বৈঠক ডাকেন।প্রধানমন্ত্রী ওই দিন নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগকে একসাথে নৌকার পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন।সেখানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী উপস্থিত থাকলেও ছিলেন না উপস্থিত শামীম ওসমান।বৈঠক এড়াতেই শামীম ওসমান কবরস্থানে গিয়ে কান্নাকাটি করে সময় পার করেন। কেননা,  শামীম ওসমান সারাবছর আইভী বিরোধীতা করে এসেছেন। তাই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠককে এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল হিসেবে কবরস্থানে বেছে নেন।ঢাকায় বৈঠক চলাকালে শামীম ওসমান মাসদাইর কবরস্থানে প্রায় ১ ঘণ্টা অবস্থান করেন।সে সময় দাদা-দাদী, বাবা-মা ও বড় ভাইয়ের জন্য কেঁদেছেন।

এদিকে গত ২৪ ডিসেম্বর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের আয়োজনে বিজয় সমাবেশে কেন্দ্র থেকে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক,আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি, বি এম মোজাম্মেল হক, আহমদ হোসেন, মৃণাল কান্তি দাস এমপি, আবদুর রহমান, আড়াইহাজারে এমপি নজরুল ইসলাম বাবু, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই,সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল,নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন উপস্থিত হয়ে নাসিক নির্বাচনের নৌকার মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীকে সমর্থন জানান।

কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতারা আসবে জেনেও তাদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এবং আওয়ামী লীগের বিজয় সমাবেশ হওয়া স্বত্তেও নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য একই সময় রায়ফেল ক্লাবে ২৬ ডিসেম্বর ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে মতবিনিময় সভা করেন শামীম ওসমান।এসময় ফতুল্লার নেতাকর্মীদের নিয়ে নৌকার প্রার্থী খন্দকার লূৎফর রহমান স্বপনকে নির্বাচিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন শামীম ওসমান।

শামীম ওসমানের এমন আচারণ দেখে রাজনৈতিক অঙ্গন উঠেছে সমালোচনা।আদৌ শামীম ওসমান আওয়ামী লীগকে মনে প্রানেধারণ করেছে কিনা এ নিয়ে সন্দেহ পোষন করছে রাজনৈতিক অঙ্গনের নেতাকর্মীরা।মুখে আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ করছে আর অন্যান্য নির্বাচনে নৌকা নিয়ে কাজ করার কথা বলছে অথচ নাসিক নির্বাচনে দেখা যাচ্ছে তার চিত্র ভিন্ন।নাকি শামীম ওসমানের মন মত নৌকার প্রার্থী হয়ননি এবং তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী শত্রু আইভী নৌকা পাওয়ায় ক্ষোভে আছেন তা প্রকাশে চলে আসছে।

গতবার একই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিলেন শামীম ওসমান কিন্তু তার বৃথা চেষ্টা আইভীকে মেয়র হতে ঠেকিয়ে রাখতে পারেনি।ইতিমধ্যে গুঞ্জনও উঠেছে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির আহবায়ক এড.তৈমূর আলম খন্দকারকে জানিয়েছেন নাকি সমর্থন।তৈমূর নিজেও করেছেন তা স্বীকার।একটি বক্তব্যে সে বলেছে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের একটি বড় অংশ তাকে করছে সমর্থন।হেফাজতে ইসলামেরও একাংশ তৈমূরকে ইতিমধ্যে সমর্থন জানিয়েছে যা শামীম ওসমান অনুসারী।অন্যদিকে তৈমূর হয়ে কাজ করছে নারায়ণগঞ্জ ছাত্রলীগের একাংশ বলছেন সমালোচকরা।

তারা আরো বলছেন, শামীম ওসমান হয়তো মুখে মুখে নৌকার পক্ষে কাজ করার কথা বললেও ভেতরে বিরোধীতা করবেন। তাই হয়তো প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক এড়িয়ে গেছেন এবং ২৪ তারিখের অনুষ্ঠানে না গিয়ে ইউপি নির্বাচনকে প্রাধন্য দিয়েছেন কারন আইভী তার বিরোধী।এতেই বুঝা যায় শামীম ওসমান নৌকায় আইভীতে সন্তুষ্ট না।