দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: আগামী ১৬ই জানুয়ারি নাসিক নির্বাচন থেকে স্বেচ্ছায় দলীয় নির্দেশে সরে দাঁড়ালেন মেয়র প্রার্থী মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি এ্যাড.সাখাওয়াত হোসেন।
বুধবার(১৫ ডিসেম্বর)দুপুর পৌনে ১টায় এ্যাড.সাখাওয়াত হোসেনের নিজস্ব চেম্বারে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সরে দাঁড়ানোর ঘোষনা।
এসময় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে এড.সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, আপনারা জানেন বিগত ২০১৬ সালের নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আমি বিএনপির দলীয় প্রতীক ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করি।কিন্তু সে নির্বাচনের সাত দিন আগেও এ বিষয়ে আমি নিশ্চিত ছিলাম না।
২০১৬ সালের ১৭ নভেম্বর বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে দলের স্থায়ী কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত মোতাবেক পরের দিন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাদের গুলশানের কার্যালয়ে ডাকেন দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এবং একে একে চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার, নির্বাহী কমিটির সদস্য মো: গিয়াসউদ্দিন ও এডভোকেট আবুল কালাম সাহেবকে নির্বাচনে অংশ নিতে নির্দেশ দেন।
কিন্তু তারা তিনজনই নির্বাচনে অংশ নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তখন চেয়ারপার্সনের নির্দেশে আমি মেয়র পদে নির্বাচন করতে সম্মত হই এবং নির্বাচনে অংশ গ্রহন করি।
তিনি আরো বলেন,কালের পরিক্রমায় আবারো একটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন দড়জায় কড়া নাড়ছে। আগামী ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে মেয়র পদে অংশ গ্রহনের লক্ষ্যে আমি ইতিমধ্যেই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছি এবং আপনারা জানেন আজকে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন।
মনোনয়নপত্র সংগ্রহের পর আমি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান ও মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফেরামের সাথে যোগাযোগ করি। দলের পক্ষ থেকে আমাকে জানানো হয় বর্তমান অবৈধ সরকার এবং আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনের অধীনে বিএনপি কোনো প্রকার নির্বাচনে অংশগ্রহন করবে না এবং এখন পর্যন্ত সেই সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও বিএনপি অংশ নেবে না এবং কাউকে সমর্থন প্রদান করবে না বলে আমাকে নিশ্চিত করা হয়েছে। কোনো বিএনপি নেতা যদি এই নির্বাচনে অংশগ্রহন করে তবে তা তার ব্যক্তিগত নির্বাচন হিসেবে গণ্য হবে, এতে দলের কোনপ্রকার সম্পৃক্ততা থাকবে না। কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষেও দলীয় ভিতরগত বা বহিঃগত কোনপ্রকার সমর্থন থাকবে না।
এ্যাড.সাখাওয়াত হোসেন আরো বলেন, আপনারা জানেন আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শের সৈনিক। এখন পর্যন্ত দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কোনো প্রকার কাজে অংশগ্রহন করি নাই।
আমাদের দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া আমাদের মা। আমাদের মায়ের নির্দেশনা হচ্ছে নির্বাচনে অংশগ্রহন থেকে বিরত থাকা। আমাদের মা যখন সুস্থ ছিলেন তখন তিনি আমাকে নির্বাচনে অংশ নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন, আমি সে নির্দেশ পালন করেছি।
আজ আমাদের মা মৃত্যুশয্যায় থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। আমি একজন জিয়ার সৈনিক হিসেবে সে নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করবো। তাই দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি পূর্ণ সমর্থন আর শ্রদ্ধা রেখে আমি এই ভোটারবিহিন অবৈধ সরকার ও তার অজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিতব্য নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বর্জনের ঘোষনা দিলাম।
তিনি নাসিক নির্বাচনে নারায়ানগঞ্জ বিএনপি থেকে যারা অংশগ্রহণ করেছে তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার আহবান জানিয়ে বলেন,আমি আশা করবো আমার মতো নারায়ণগঞ্জ বিএনপির সকল সিনিয়র নেতৃবৃন্দ এই নির্বাচন থেকে সরে আসবে। কারণ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নেতৃত্বে দেশের মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু অবাধ শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের যে আন্দোলন চলছে, সেইসাথে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে দাড়ানো বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণের আন্দোলন যখন একটি চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত,
তখন এই অবৈধ সরকারের ফাঁদে পা দিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়াটা সেই আন্দোলনের সাথে পরিহাসের সামিল বলে আমি মনে করি। তাই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে বেগবান করতে সকল জিয়ার সৈনিককে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানাচ্ছি। সেই সাথে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থ্যতা আর দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
পরিশেষে আবারো উপস্থিত সাংবাদিক বন্ধুগণকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে কৃতজ্ঞতা ও প্রাণঢালা শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। অতীতের মতো আগামী দিনগুলোতেও আপনাদের সহযোগিতা অব্যহত থাকবে, এই আশাবাদ ব্যক্ত করে আজকের মতো এখানেই শেষ করালাম।