দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় তৃতীয় দফায় বাদী পক্ষের তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে আদালতে।
মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি)দুপুর ১২টা ২৮ মিনিটের দিকে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
সকাল সাড়ে ৯টায় কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে কাশিমপুর কারাগার থেকে মামুনুল হককে আদালপাড়ায় আনা হয়।সকাল থেকেই আদালতপাড়ায় দর্শনার্থীদের প্রবেশ সীমিত করে দেয় পুলিশ। প্রয়োজন ও কাজ ব্যতিত কাউকে আদালতপাড়ায় প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি সকাল থেকে।বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ কোর্ট ইন্সপেক্টর মোঃআসাদুজ্জামান বলেন,আজ তিনজনের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। আদালতে এ সময় উপস্থিত ছিলেন মামুনুল হক, তাকে সকালেই কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আদালতে নিয়ে আসা হয় এবং সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাকে আবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সাক্ষ্যদাতারা হলেন সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু, রিসোর্টের আনসার গার্ড ইসমাঈল ও রিশিপশন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান।রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রকিব উদ্দিন আহমেদ সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মামুনুল হক আদালতে উপস্থিত অবস্থায় তার বিরুদ্ধে তিনজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা সবাই মামুনুল হক ধর্ষণকাজে জড়িত বলে জানিয়েছেন।
এদিকে এই মামলাকে ‘সাজানো’ দাবি করে আসামিপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক নয়ন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সাক্ষীর প্রত্যেকেই বলেছেন, মামলার বাদী যখন রিসোর্টে প্রবেশ করেছিলেন তখন তাকে ভীত বা অস্বাভাবিক ভঙ্গিতে দেখা যায়নি। মামুনুল হক তাকে জোর করে রিসোর্টে নিয়ে গেছেন তেমনও অভিযোগ করেননি কারও কাছে। সাক্ষীদের দুর্বলতা রয়েছে, তাদের সাক্ষ্যে অসঙ্গতি রয়েছে। মামুনুল হককে সামাজিকভাবে হেয় করার জন্যই সাজানো একটি মামলা।’
এর আগে গত ১৩ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে রয়েল রিসোর্টের সুপারভাইজার আব্দুল আজিজ, রিসিপশন অফিসার নাজমুল ইসলাম অনিক ও আনসার গার্ড রতন বড়াল সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। এর আগে, ২৪ নভেম্বর প্রথম দফায় মামুনুল হকের উপস্থিতিতে কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণার সাক্ষ্য নেন আদালত। একই আদালতে ৩ নভেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ মামলায় বিচারকাজ শুরুর আদেশ দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য যে,২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন মামুনুল হক। ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসে মামুনুল হককে ঘেরাও করেন। পরে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এসে রিসোর্টে ব্যাপক ভাঙচুর করেন এবং তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলা করেন ওই নারী। তবে, ওই নারীকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে আসছেন মামুনুল হক।