দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: নারায়ণগঞ্জ জেলার আলোচিত মাদক ব্যবসায়ী ও একাধিক মামলার আসামী সালাউদ্দিন চৌধুরী বিটুকে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেছে।তাকে ছাড়াতে আদালতপাড়ায় নাসিক ১৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মোঃকামরুল হাসান মুন্নাকে।
মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারী) দিবাগত রাতে গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম সালাউদ্দিন চৌধুরী বিটুকে তার নিজ বাসভবন নলুয়াপাড়া থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে এবং বুধবার দুপুরে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
বিটুকে জামিনে মুক্ত করতে নাসিক ১৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মোঃকামরুল হাসান মুন্নাকে আদালতপাড়ায় দৌঁড়ঝাপ করতে দেখা যায়।কারন বিটুর গ্রেফতারে মুন্নার নির্বাচনী প্রচারণা পড়তে পাড়ে ধাক্কা।
এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর নারায়ানগঞ্জ সদর মডেল থানার ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠানে ১৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃকবির হোসেনও নারায়ানগঞ্জ পুলিশ সুপারের কাছে সালাউদ্দিন বিটুর হাত থেকে ১৮ নং ওয়ার্ডবাসীকে মাদক থেকে নিস্তার চেয়ে বলেন,আমাদের এলাকা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা।
আমার ১৮ নং ওয়ার্ডের সীমানা যেখানে শেষ সেখানে গোগনগর ইউনিয়নের শুরু আবার আমার যেখান থেকে শুরু সেখানে গোগনগর ইউনিয়নের সীমানা শেষ।আর এই এলাকাই হচ্ছে মাদকের সয়লাব।আর এই দুই এলাকায় তার মাদকের সয়লাব সে হচ্ছে সালাউদ্দিন বিটু।অনেক সময় গ্রেফতার হয়েছে।এখন আছে বিভিন্ন প্রার্থীর সাথে আতাত করছে।সামনে নির্বাচন সেখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার লক্ষ্যে।আপনার কাছে এখন অনুরোধ থাকবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার জন্য।
তবে সূত্রমতে জানা যায়,গভীর রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলার গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম নলুয়াপাড়া বিটুর নিজস্ব বাসভবন থেকে একটি প্রক্রিয়াধীন মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে নিয়ে আসে।
সূত্র আরো জানায়,বর্তমান কাউন্সিলর মোঃকবির হোসেন ও সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্নার নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে চলছে দৌঁড়ঝাপ বেশি।একে অপরের বিরুদ্ধে করে চলছিলেন বিদ্বাচারন।তবে এলাকায় এলাকায় গিয়েও চাচ্ছেন উভয়ই ভোট ভোটারদের কাছে।সাবেক কাউন্সিলর মুন্না তার দলে ভীড়ান জেলার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন চৌধুরী বিটু ও মেহেদী হত্যা মামলার প্রধান আসামী রানাকে।
আরো আছেন নারায়ানগঞ্জ ৪ আসনের সাংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের বিয়াই ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ লাভলু।তবে ইতিমধ্যে মুন্নাকে নারায়ানগঞ্জ ৫ আসনের সাংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছে।সালাউদ্দিন চৌধুরী বিটুর বিরুদ্ধে নারায়ানগঞ্জ থানায় রয়েছে অর্ধশতাধিক মাদক সহ বিভিন্ন চাঁদাবাজি মামলা।অন্যদিকে রানা হচ্ছে মেহেদী হত্যা মামলার প্রধান আসামী।বিভিন্ন বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিটু ও রানাকে সাথে নিয়ে চাচ্ছে ভোট কাউন্সিলর প্রার্থী মুন্না।
নারায়াণগঞ্জ সদর থানার সোর্সের মাধ্যমে জানা যায়,গত ১ বছরে নারায়ানগঞ্জ শহরের তামাকপট্টির আবিদ আলী চৌধুরী ওরফে হাবলু চৌধুরীর ছেলে সালাউদ্দিন চৌধুরী বিটুকে মাদক মামলায় ২ বার গ্রেফতার করা হয়।কিন্তু নারায়ানগঞ্জের ৪ আসনের সাংসদের বিয়াই ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ লাভলু প্রতিবার থানা থেকে ছুটিয়ে নিয়ে আসেন বিটুকে।এর আগেও একাধিকবার তাকে থানা থেকে ছুটিয়ে আনেন তিনি।তার ছেলে ভিকির শেল্টারে বিটু যৌথভাবে নিতাইগঞ্জ মাদকের সয়লাব করে চলছে।পুলিশ বারবার বিটুকে গ্রেফতার করলেও তাকে সরকার দলীয় ক্ষমতার দাপটে ছুটিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে যেকারনে পুলিশও হয়ে পড়েছে অসহায়।
উল্লেখ্য যে,নারায়ণগঞ্জ শহরের তামাকপট্টি এলাকার আবিদ আলী চৌধুরী ওরফে হাবলু চৌধুরীর ছেলে সালাউদ্দিন চৌধুরী বিটু ওরফে সালাউদ্দিন বিটু।২০১৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে ৫০০ পিস ইয়াবাসহ শহরের নিতাইগঞ্জ তামাকপট্টি এলাকার শুক্কুর মিয়ার রিকশার গ্যারেজ থেকে ডিবির হাতে গ্রেফতার হয় বিটু।
একই বছরের ১৯ আগস্ট বিটুকে সাড়ে ৩০০ পিস ইয়াবাসহ তামাকপট্টি থেকে গ্রেফতার করে ডিবি। বিটু এর আগেও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কদমতলী থানায় সাড়ে ৫০০ পিস ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার হয়।গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি সালাউদ্দিন বিটুর সেকেন্ড ইন কমান্ড বুইট্টা সুজন, শাহীন ও আরিফকে ৬০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আটক করে সদর মডেল থানা পুলিশ। এরপর গা-ঢাকা দেয় মাদক বিক্রেতা সালাউদ্দিন বিটু। পরবর্তীতে তিনি আবারো এলাকাতে ফিরে আসে।