দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: সোনারগাঁও পৌরসভার দত্তপাড়া এলাকায় পুলিশের দুই উপ-পরিদর্শক (এসআই) নিহত হওয়ার ঘটনায় পলাতক আসামি আলমগীর হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর আসামী আলমগীরকে আদালতের মাধ্যমে জিজ্ঞাবাদের জন্য রিমান্ডে এনেছে পুলিশ।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) শেখ বিল্লাল হোসেন জানান, বুধবার আসামি আলমগীর হোসেনকে কক্সবাজারের চকোরিয়া থেকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে পাঠায় পুলিশ। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
গ্রেফতারকৃত আলমগীর হোসেন চট্টগ্রামের লোহাগড়া উপজেলার বাশকানিয়া পাড়া গ্রামের তৈয়ব আলীর ছেলে।
গত বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) সেই আসামি পালানোর ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তদন্ত কমিটিতে সভাপতি করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানকে। আরো দুই সদস্য হলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখার খ-জোনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম শাহরিয়ার হাসান, নারায়ণগঞ্জ ডিএসবি শাখার ডিআইও-২ মো. হুমায়ুন কবির খান।
কমিটিকে ৭ কার্যদিবসে অনুসন্ধান করে সুস্পষ্ট মতামতসহ একটি বস্তুনিষ্ট প্রতিবেদন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলমের নিকট দাখিলের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, ১৭ জানুয়ারি সোমবার গোপন সূত্রে খবর ছিল টেকনাফ থেকে ৫০ হাজার ইয়াবার একটি চালান আসছে, খবর পেয়ে সোনারগাঁয়ের মেঘনা টোলপ্লাজায় তল্লাশি চৌকি বসায় পুলিশ। এ সময় আসামির গাড়িকে সিগন্যাল দিলে এক কনস্টেবলকে আহত করে দ্রুত সেটি পালিয়ে যাবার চেষ্টা করে। পরে পুলিশের আরেকটি টিম মোগড়াপাড়া এলাকায় ধাওয়া করে আসামি আলমগীর হোসেনকে গাড়িসহ এবং ৪২ হাজার ইয়াবা বড়িসহ গ্রেফতার করে।
গ্রেপ্তারের পর আসামিকে নিয়ে তারা সরাসরি জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে চলে যায়। এ সময় আসামিই গাড়ি চালায়। এসপি অফিসে তাদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের পর আসামিকে নিয়ে থানায় রওয়ানা দেন দুই এসআই ও এক এএসআই। তবে, তাদের তিনজনের কেউই গাড়ি চালাতে পারেন না ফলে আসামিকে দিয়েই গাড়ি চালানো হয়। পরে সোনারগাঁয়ের দত্তপাড়া এলাকায় সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে পৌঁছালে গাড়ি থেকে কৌশলে লাফিয়ে পড়ে গাড়ি খাদে ফেলে দেন আলমগীর।
দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা দুই এসআইকে উদ্ধার করে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া আরও এক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আহত হয়েছেন। আহত এএসআইকে মুমূর্ষু অবস্থায় রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে পাঠানো হয় সেদিন।
নিহতরা হলেন- ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার মুনসুরাবাদ গ্রামের কাজী নুরুল ইসলামের ছেলে কাজী সালেহ আহম্মেদ ও গোপালগঞ্জের চরভাটপাড়া গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে এসএম শরীফুল ইসলাম। তারা সোনারগাঁ থানায় কর্তরত ছিলেন।