দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: চল্লিশোর্ধ্ব ছুঁই ছুঁই ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগ কমিটির সদস্যদের। অনেকেই ইতিমধ্যে চল্লিশও করে ফেলেছে পার। এর মধ্যে অনেকেই চলে গেছে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ন পদে ও থানা যুবলীগের পদে।আবার অনেকেই হয়েছে সদস্য।তবুও ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগ এখনো আদু ভাইদের দখলেই।নতুন নেতৃত্বের অভাবে কান্ডারি বিহীন হয়ে পড়েছে ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগ।
নেই কোন নজরদারি জেলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও বর্তমান সাংসদদের।গতবছর ইউপি নির্বাচনের দোহায় অনেক নেতা বলেছেন ২০১৯ এর ইউপি নির্বাচন শেষ হলেই ২০২২ এর শুরুতেই নতুন কমিটি করবে। কিন্তু নেতাকর্মীদের নতুন কমিটি করার আশ্বাস দিলেও ২২ এর এক মাস পাড় হয়ে গেলো কথার সাথে কাজের পাওয়া যায়নি মিল।
দীর্ঘ ২৯ বছর পর ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের মানুষ ভোটাধিকার পেলেও প্রায় ১৬ বছর যাবৎ একই পদে বহাল আছে ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগ।একই চেহারা এত বছর ধরে এবং একই নেতা দ্বারা পরিচালিত হওয়ায় অনেকটা ভেঙ্গে পড়েছে ফতুল্লার ছাত্রলীগ।অনেকের মধ্যে অনেহাও চলে এসেছে ফতুল্লা ছাত্রলীগ নিয়ে।যোগ্য নেতৃত্ব থাকা স্বত্ত্বেও আওয়ামী লীগ,যুবলীগ করা নেতারাই ধরে রেখেছে ছাত্রলীগের পদ পদবী।
জানা যায়,সর্বশেষ ২০০৬ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি এহসানুল হক নিপু ও সাধারণ সম্পাদক জি এম আরাফাতের স্বাক্ষরে আবু মোঃ শরীফুল হককে সভাপতি এবং এম এ মান্নানকে সাধারণ সম্পাদক করে গঠিত হয়েছিলো ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগ কমিটি। দীর্ঘ ১৬ বছর পার হয়ে গেলেও এখনো আসেনি এই কমিটির নতুন নেতৃত্বের। তৎকালীন নির্বাচিত নেতারাও এখন আর নিজেদের ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিতেও স্বাচ্ছন্দ বোধ করছে না,
কেননা তাদের বয়স চল্লিশোর্ধ্ব এবং ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের নবগঠিত কমিটিতে অনেকেই পেয়েছে গুরুত্বপূর্ন পদ। ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শরীফুল হক থানা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির হয়েছেন কার্যকরী ১নং সদস্য এবং এম.এ. মান্নান সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে উনারা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন।যার ফলে নেতৃত্বশূন্য হয়ে গিয়েছে ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগ।
অন্যদিকে ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের নেতৃত্বশূন্যতায় তীব্র হতাশা বিরাজ করছে তৃণমূল পর্যায়ে।যার ফলে ফতুল্লা থানার অন্তর্ভুক্ত প্রতিটি ইউনিয়ন, ওয়ার্ডের ছাত্রলীগ কর্মীরা মূল্যায়ন পাচ্ছে না জেলায় বা কেন্দ্রে গিয়ে। বর্তমান জেলা কমিটির প্রতিটি কর্মসূচিতে নির্দিষ্ট নেতৃত্ব ছাড়াই যে যার মত করেই অংশগ্রহণ করছে ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ। অথচ দীর্ঘদিনের কর্মকান্ডের মূল্যায়নস্বরূপ ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠন না হওয়ায় তৃণমূল পর্যায়ের তীব্র হতাশা লক্ষ্যণীয়। মেয়াদোত্তীর্ন এবং নেতৃত্বশূন্য ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগ কমিটির পূণর্গঠন এখন তৃণমূল কর্মীদের সময়ের দাবী।
ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগ কমিটিতে দক্ষ ও যোগ্য নেতৃত্ব দেবার নেতা থাকলেও অবহেলা করে তাদের নিয়ে করা হচ্ছে না কমিটি।এই কারনে ফতুল্লা থানায় ছাত্রলীগে অনেকটা অনীহা চলে এসেছে ছাত্রলীগের কর্মীদের মধ্যে। বছরের পর বছর কাজ করে যাচ্ছে অথচ করা হচ্ছে না কোন কমিটি গঠন,দেওয়া হচ্ছে না মূল্যায়ন। এর ফলে ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের অনেক সদস্য ও কর্মীরা রাজনীতি ছেড়ে অনেকটা বিভিন্ন পেশা ও অপরাধের সাথে সংশ্লিষ্ট হয়ে যাচ্ছে।এর ফলে ফতুল্লা থানায় ভবিষ্যৎ ছাত্রলীগ কর্মী শূন্য হতে বেশি সময় লাগবে না বলে মনে করছেন অনেক নেতারা।
জেলার বিভিন্ন নেতাদের সাথে এবিষয়ে কথা হলে অনেক নেতা জানায়,কর্মসূচী ছাড়া যেমন কর্মীরা মারা যায় ঠিক তেমনি কর্মী ছাড়া একটি কমটিও অস্তিত্বহীন হয়ে পড়ে। একটি সজিব প্রানঞ্চল কমটির জন্য সব সময়ই প্রয়োজন যোগ্য,দক্ষ ও নতুন নেতৃত্বের। ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগ এখন অনেকটা ভঙ্গুর হয়ে গেছে।কারন যারা এত বছর কমিটি চালিয়ে এসেছে তারা এখন মূল দল আওয়ামী লীগের নেতা হয়ে গেছে। অতিদ্রুত যদি ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা না হয় তাহলে ফতুল্লা এমনেই নেতৃহীন কমিটি হয়ে আছে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ হবার শংকা থাকবে।
বর্তমান ছাত্রলীগ অপরাধ ও অপছাত্ররাজনীতি চর্চা চলছে।এখান থেকে সুষ্ঠু নেতা ও নেতৃত্ব বিকশিত হতে পারবে? এই প্রশ্নের উত্তরে পূর্বে এক সাক্ষাতকারে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও এককালের রাজপথ কাপানো ছাত্রলীগ নেতা জাকিরুল আলম হেলাল বলেছিলেন,আজকে আমার এখানে আসা হয়েছে ছাত্ররাজনীতি থেকেই। আমি যখন নবম শ্রেনী থেকে দশম শ্রেনীতে উঠি তখন ছাত্র রাজনীতিতে যুক্ত হই এরশাদ আমলে। আমি তোলারাম কলেজ থেকে রাজনীতি করে এসেছি।এখন ছাত্র রাজনীতির চর্চা নাই। একটা বিষয় হচ্ছে কর্মসূচী না থাকলে কর্মীরা মারা যায়।
এখন সরকার দলীয় ক্ষমতায় আমরা থাকায় আমাদের কর্মসূচী কম কিš‘ বিরোধী দিলে থাকলে আমাদের কর্মসূচি বেশি থাকে। আর এখন ছাত্র রাজনীতির চর্চা নেই।শুধু তোলারাম কলেজ না সারাদেশেই যদি নির্বাচন না দেয় আপনে নেতা কোথা থেকে পাবেন।ছাত্র রাজনীতির বিকাশ কোথা থেকে হবে। তোফায়েল ভাই,সুলতান ভাই কোথা থেকে এসেছে ডাকসু থেকে।বাদল ভাই তোলারাম কলেজ থেকে এসেছে। প্রতিটি সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নির্বাচন করতে হবে।নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে নেতৃত্বের বিকাশ ঘটবে।
১৬ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করে আসা ফতুল্লা ছাত্রলীগের সভাপতি ও বর্তমান ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগ কমিটির সদস্য আবু মোঃ শরীফুল হক ইউপি নির্বাচনের পূর্বে বলেছিলেন,বর্তমান নির্বাচনী একটা পরিবেশ চলছে। আর ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তারা নিজেরাও প্রার্থী।তাই নির্বাচনের পর এমপি সাহেবের সাথে আমরা বসে দ্র“ত ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের যোগ্য প্রার্থীদের দিয়ে একটি কমিটি ঘোষনা করবো।
তিনি আরো বলেছিলেন,শুধু ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগ না যুবলীগ,স্বেচ্ছাসেবকলীগও দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে কোন নতুন নেতৃত্ব পাচ্ছে না সেটার জন্য নতুন কমিটি হোক সেটাও আমরা চাই।