দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ “স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি,করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করি”এই শ্লোগানে আন্তর্জাতিক ইশারা ভাষা দিবস উপলক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
সোমবার((৭ ফেব্রুয়ারি)সকাল ১০টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় এ আলোচনা সভা।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মোঃজায়েদুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোঃ মঞ্জুরুল হাফিজ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিসি মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন,এক লক্ষ বছর আগের কথা ভাবেন সে সময় কিন্তু ভাষার আবিষ্কার হয়নি। তখন কিন্তু কথা বলতো না আমাদের পূর্ব পুরুষরা ইশারায় কথা বলতো। ভাষা তো একটাই ছিলো ক্রমে ক্রমে অঞ্চলভেদে বিভিন্ন ভাষা আবিষ্কার শুরু হলো।আজকে যদি পাহাড়ি জনগোষ্ঠী মানুষদের কথা শুনলে শব্দ মনে হয়।আমার কাছে শব্দহীন। শব্দ হচ্ছে একটা মাধ্যম যার দ্বারা আমরা যোগাযোগ করি।আমরাও কিš‘ এখনো ইশারা ব্যবহার করি।যেমন একটা সভা চলছে আপনে ইশারা দিয়ে ডাকছেন বা চুপ থাকতে বলছেন।তারমানে ইশারা যোগাযোগ কিন্তু আমাদেরও আছে।
ডিসি আরো বলেন,এক শ্রেনীর মানুষ আছে তারা কানে শুনে না।সুতরাং তারা এই ভাষা বা শব্দ সম্পর্কে বুঝে না।তখন তার মূল অস্ত্র হচ্ছে হাত,ইশারা,অঙ্গভঙ্গি। এই যে প্রতিবন্ধী মানুষগুলো আপনার আমার পরিবারেরই সদস্য। এরা শুধু গরীব পরিবারে জন্মগ্রহন করেনি ধনী পরিবারেও জন্মগ্রহনও করেছে।গ্রামে বা শহরে হোক আমাদের এই মানুষদের সাহায্যে এগিয়ে আসতে হবে।তাদের সাহায্যে হোক সাদাছড়ি,হুইল চেয়ার,তাদেরকে বিনোদন দেওয়া,তাদেরকে শিক্ষা দেওয়া,খেলাধুলায় নিয়ে আসা। প্রতিবন্ধীদের সুযোগ সুবিধা দেবার মাধ্যমে সমাজে একটা সমতা চলে আসবে।আমাদের সব সময় লক্ষ্য রাখতে হবে সমাজের প্রতিটি মানুষ সে একজন প্রতিবন্ধী,বৃদ্ধা বা শিশু ভালো থাকতে পারে।বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দেশকে উন্নয়নের জন্য কাজ করছে।তিনি চেয়েছেন উন্নত বাংলাদেশ করবেন।এই জন্য সমাজের যারা প্রতিবন্ধী তাদের জন্যও তিনি কাজ করছেন।আর আমাদেরও উচিত এবং বাবা মারও উচিত প্রত্যেক সন্তানকে সে হোক প্রতিবন্ধী বা স্বাভাবিক সবাইকে সমানভাবে দেখা।
প্রতিবন্ধীদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী প্রগতি সংস্থা নারায়ণগঞ্জ জেলার মহাসচিব ইউসুফ হাওলাদার বলেন,আমাদের প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নের জন্য প্রতিবন্ধী প্রগতি সংস্থা নামে একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।রআমার হাতে যে সাদা হাতছড়িটি দেখছেন সেটা প্রতিবন্ধী প্রগতি সংস্থা থেকে দেওয়া। গতবছর প্রতিবন্ধী প্রগতি সেবা থেকে আমাদের ১০টি হুইল চেয়ার দেওয়া হয়েছিলো।নারায়ণগঞ্জ সমাজসেবা কার্যালয়ের মাধ্যমে আমাদের অনেক উন্নয়ন সাধিত হয়।সমাজসেবা কার্যালয়ের মাধ্যমে আমাদের যথেষ্ট মূল্যায়ন হয় স্যার(ডিসি)।নারায়ণগঞ্জ জেলায় বিভিন্ন সেবামূলক সংগঠন গড়ে উঠছে তাদের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন সহযোগিতা পাই।তারপরও স্যার আমাদের বিভিন্ন সমস্যা হয়।আপনেরা
জানেন যে সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের প্রতিবন্ধীদের জন্য একটা জিউর চাউলের ব্যবস্থা আছে এটা ডিসি স্যার ও এডিসি স্যার জানেন কিন্তু জেলা প্রশাসক বদলী হবার পর আমরা এটা পাচ্ছি না আমাদের খুব সমস্যা হ্েছ স্যার। আমাদের এই সমস্যার কথাটা যদি এডিসি স্যার ডিসি স্যারকে জানাতেন তাহলে আমাদের উপকার হতো। নাজমা বধিরদের জন্য একটা বধির উন্নয়ন সংস্থা করেছেন বধিরদের বিভিন্ন উন্নয়নের জন্য।মানুষ বলে বোবার নাকি শত্রু নাই কিন্তু আজকে আমি বলতে চাই এই কথার কোন ভিত্তি নাই।বধিরদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে,অত্যাচার করা হচ্ছে,মারা হচ্ছে।এছাড়াও বধিরদের জায়গা দখলের জোড়পূর্বক দখল করা হচ্ছে।এমনকি আদালতে মামলা করা হয়েছে। আমাদের এই সমস্যার কথাগুলো আপনে স্যারকে অবগত করবেন। আমরা প্রতিবন্ধীরা চোখে দেখিনা আপনেরা দেখেন আমরা স্বল্প শিক্ষাগ্রহণ করেই জুড়ে পড়ছে।স্যার আপনে আমাদের প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে সহায়তা করবেন।
আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ শামীম বেপারী,উপ পরিচালক জেলা সমাজসেবা কার্যালয় নারায়ণগঞ্জের আসাদুজ্জামান সরদার,সহকারী পরিচালক মোঃ সোলায়মান হোসেন,সহকারী পরিচালক সদর হামিদুল্লাহ মিয়া,প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র নারায়ণগঞ্জ প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা মোসাঃ উম্মে কুলসুম,নারায়ণগঞ্জ সুইড বুদ্ধি ও প্রতিবন্ধী স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃফজলুল আমিন,
বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী প্রগতি সংস্থা নারায়ণগঞ্জ জেলার মহাসচিব ইউসুফ হাওলাদার,বধির উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি নুরুজ্জামান বাবু,সাধারণ সম্পাদক নাজমা বেগম,সদস্য মোঃ শাওন প্রমূখ