দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ’২০২১ সালের শীর্ষক কার্যক্রমের আওতায় নারায়ণগঞ্জ জেলায় সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখায় জয়িতা সম্মাননা পেলেন এড. নূর জাহান।
মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি)দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ হতে এড.নূর জাহানকে ক্রেস্ট,সনদ প্রদান করেন জেলা প্রশাসক মোঃমঞ্জুরুল হাফিজ।
এসময় নারায়ণগঞ্জ জেলা থেকে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখা নারী এড. নূরজাহান সহ অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী পারভীন আক্তার, শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী লুবনা তারান্নুম, সফল জননী নারী আসমা আখতারি, নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যামে জীবন শুরু করেন যে নারী মোহসেনা বেগমকে জয়িতা সম্মাননা প্রদান করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁর মেয়ে এড.নূর জাহান।উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যায়ণরত অবস্থায় একজন বিদ্যালয় শিক্ষকের সাথে অল্প বয়েসেই বিয়ে হয়ে যায় নূর জাহানের।বিয়ে হবার পরও সেখান থেকেই স্বামীর অনুপ্রেরণায় পড়ালেখা চালিয়ে যান।উচ্চ মাধ্যমিকের গন্ডি পেরোতেই হয়ে যান দুই সন্তানের জননী।কিছু সময় বিরতির পর দুই সন্তান নিয়েই পড়ালেখা শেষ করেন স্বামী ও পরিবারের অনুপ্রেরণায়।
কিন্তু সুখ দেখার আগেই আবারো স্বামীকে হারান।তারপর থেকেই দুই সন্তান নিয়ে জীবনযুদ্ধ শুরু এক নারীর।রাজনীতি,সমাজ সেবা,সমাজ থেকে বঞ্চিত নারীদের নিয়ে কাজ করে থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজে জড়িয়ে পড়েন এই নারী।নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য হয়ে আরো ছড়িয়ে দেন তার সমাজের প্রতিটি উন্নয়নে কাজের স্পহা।
নিজে আইনজীবি হয়েও সমাজের অবাঞ্ছিত,নির্যাতিত,অধিকার থেকে বঞ্চিত নারীদের বিভিন্ন মামলা লড়ে যাচ্ছেন বিনা পয়সায়।সোনারগাঁ উপজেলা সহ নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে যাচ্ছে এই নারীর অসামান্য অবদান।আজ একজন প্রতিষ্ঠিত মা।সন্তানদেরও গড়ে তুলেছেন প্রতিষ্ঠিত মানুষ হিসেবে।আজ সেই নারী জয়িতা পুরুষ্কার প্রাপ্ত হয়েছেন সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখায়।
জয়িতা সম্মাননা পাবার পর ব্যক্ত করেন তার অনুভূতি এড.নূর জাহান সংবাদ মাধ্যমে,আজ ভাষার মাস ২১ ফেব্রুয়ারির প্রথমদিন।আমাদের ভাষা আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন প্রথমেই তাদের প্রতি আমার শ্রদ্ধাঞ্জলি।সমাজ উন্নয়নে বাংলাদেশে আমি জয়িতা হয়েছি।আমি মনে করি যে শুধু আমি না বাংলাদেশের সমাজ উন্নয়নে প্রত্যেক নারী এক এক জন জয়িতা বাংলাদেশের বাতিঘর।
আমাদের জীবন উন্নয়নে যে পরিশ্রম ও সফলতা এক এক জন নারীর যখন জীবন সম্পর্কে বলা হয় তখন আমাদের বুঝা যায় কোথা থেকে কোন কর্ম ক্ষেত্রে আজ এখানে এসেছি।আজকে ঢাকা বিভাগে,ঢাকা জেলা সহ প্রতিটি জেলায় ৫ জন করে জয়িতা হয়েছে তার থেকে আমি বেশি মনে করি যে সবচেয়ে বড় জয়িতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা।যিনি বাংলাদেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন বলেই আজ নারীদেরকে ঘর থেকে তুলে এনে তাদের অবদান ও উন্নয়নে জয়িতা পুরুষ্কার উনি দিচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন,আগামী দিনেও আমাদের বঙ্গবন্ধুর কন্যা ও বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেসার আদর্শে আমরা আজকে যারা জয়িতা পুরুষ্কার পেলাম এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে যিনি আমাদের পুরুষ্কার তুলে দিলেন ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।উনি যা বললেন আমরা করোনার মহামারিতে সবার পাশে থেকে কাজ করবো এবং আমরা জয়িতা বিজয়ী নারীরা প্রত্যেক ঘরে ঘরে নারীদের এটাই পৌঁছে দিতে চাই আমরা নারীরা শুধু রাঁধি,চুল বাঁধি আর সন্তানদের লালনপালন করি না আমরা নারীরা সমাজের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই এক এক জন জয়িতা।আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেত্রী,বিসিএস ক্যাডেট অনেক নারী।তারা শুধু নারীই না তারা সমাজের উধ্বে।
এর আগে বাংলাদেশ শিশু একাডেমির সভাকক্ষে “জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ” শীর্ষক ঢাকা বিভাগের শ্রেষ্ঠ জয়িতাদের হাতে সম্মাননা তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। এসময় শ্রেষ্ঠ জয়িতাদের হাতে নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়।ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভীন, ডিআইজি ঢাকা রেঞ্জ হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) এবং বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনাম।