দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মেঘনা গ্রুপের মেঘনা এডিবঅয়েল কারখানা পরিদর্শন করেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরের পরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার। গতকাল বুধবার বেলা ১২টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত তিনি এ অভিযান পরিচালনা করেন।
মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, বাজার কারসাজিতে উচ্চ পর্যায় জড়িত। মিল মালিক ও বড় বড় ব্যবসায়ীরা সয়াবিন তেল মজুদ করে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ভোক্তাদের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। প্রতিটি মিল পরিদর্শন করে আমরা দেখেছি কোন মিল ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন আইনের ‘গ’ ফরম পূরণ করছেন না। যা আইনের সবচেয়ে বড় ধরনের ব্যত্যায়।
মিল গেইট থেকে পণ্যের প্রতি লিটারের মূল্য নির্ধারণ করে না দেয়ার কারণেই ডিও বা এসো ব্যবসায়ী বা পাইকাররা নিজেদের মতো করে মূল্য বসিয়ে বাজারে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে। যার কারণে বাজারে দাম বেড়েছে, ভোক্তাদের কষ্ট বেড়েছে।
তিনি হুশিয়ারী দিয়ে বলেন, কোন মিল থেকে পন্য বিক্রি করে যদি পাকা রশিদ সাথে না দেয়া হয় সেই মিলের বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিকার আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে। মিল থেকে এসো ব্যবসায়ী, এসো ব্যবসায়ী থেকে পাইকার এবং পাইকার থেকে খুচরা ব্যবসায়ী যে যার কাছে বিক্রি করবে তার সাথে পাকা রশিদ দিতে হবে। যে এর ব্যত্যায় ঘটাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মেঘনা এডিবয়েলে তিন মাসের জানুয়ারী, ফেব্রুয়ারী এবং মার্চ মাসের সয়াবিন উৎপাদন, বিপনন, মজুদ যাচাই বাছাই করে দেখা যায়, সাপ্লাই চেইনে কিছুটা বিচ্যুতি রয়েছে। বিশেষ করে জানুয়ারী মাসের তুলনায় ফেব্রুয়ারী মাসের সাপ্লাই অনেক কম হয়েছে। এছাড়া ডিসেম্বর মাসে ইস্যু করা এসোর পণ্য গতকাল বুধবার মিল থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে। যা প্রদান করার কথা ছিলো এসো ইস্যু করার ১৫দিনের মধ্যে। নরসিংর্দী লোকনাথ ভান্ডার ডিসেম্বর মাসে ৩০লাখ লিটার ফ্রেশ তেলের জন্য এসো গ্রহন করে। কিন্তু সেই পন্য ভেঙ্গে ভেঙ্গে আজ দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, এটা কোন ভাবেই করা যাবে না। এসো ইস্যু করার পর থেকে ১৫দিনের মধ্যে মিল থেকে সেই পণ্য সরবরাহ করতে হবে। আগামী ২৪মার্চের পর থেকে ৯মার্চের আগের কোন পণ্য মিল গেইটে পাওয়া গেলে তা বাজেয়াপ্ত করে সরকার নির্ধারিত মূল্যে ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করা হবে। এছাড়া আগের কোন ডিও বা এসোর সয়াবিন তেল মিল থেকে সরবরাহ করা হলে সেই তেল বাজেয়াপ্ত করে জেল জরিমানাসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও হুশিয়ারী দিয়েছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরের পরিচালক।
এদিকে এমন অভিযোগ অস্বিকার করে মেঘনা গ্রুপের পরিচালক কার্তিক চন্দ্র দাস বলেন, বাজার কারসাজির সাথে মিল মালিকরা জড়িত নয়। মিল থেকে যারা পণ্য সরবরাহ করে সেই এসো বা ডিও ব্যবসায়ীরা তেল মজুদ করে বাজার কারসাজিতে জড়িত বলে তিনি দাবি করেন।
তিনি বলেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরের নির্দেশনা মেনে প্রতিটি খোলা সয়াবিন তেলের প্রতি লিটার মূল্য প্রতি ট্রাকে পাকা রশিদ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া বোতলজাত পন্য গাঁয়ে খুচরা রেট এবং প্যকেটের গাঁয়ে রেট লিখে দেয়া হচ্ছে। তিনি ফেব্রুয়ারী মাসের বিষয়ে বলেন, ফেব্রুয়ারী মাসে সয়াবিন তেলে কাঁচা পন্য নিয়ে আসা মাদার ব্রেসেলের সমস্যা হওয়ার কারনে ওই মাসে সরবরাহে সমস্যা হয়েছে। ভোক্তাদের দূর্ভোগে ফেলার জন্য মিল থেকে কোন কারসাজি করা হয়নি।