দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জ জেলায় চলছে ট্রাফিক পুলিশের অবৈধ যান ব্যাটারিচালিত অটো,মিশুকে জেলার কথিত নামধারী সাংবাদিকদের স্টিকার নিধন কার্যক্রম। তবে জেলায় কথিত সাংবাদিকদের এই স্টিকার নিধন কার্যক্রম কতদিন পর্যন্ত চলবে তা নিয়ে সংশয় নারায়ণগঞ্জবাসীর।
অতীতেও দেখা গিয়েছে অবৈধ যান ও ট্রাফিক পুলিশদের চাঁদাবাজির সংবাদ নারায়ণগঞ্জ জেলার স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় ঘনঘটা করে একাধিকবার প্রকাশ হলে নারায়ণগঞ্জ জেলার ঘুম বাবুদের ঘুম ভাঙে। অর্থাৎ জেলার ট্রাফিক পুলিশদের তৎপরতা দেখা যায়।তবে তা খুবই সীমিত সময় পর্যন্ত দেখা যায়।ট্রাফিক পুলিশের তৎপরতা দেখলে সাংবাদিকদের কলম সংবাদ প্রকাশ বন্ধ করলেই আবার পূর্বের পরিস্থিতি চলে আসে।বিশেষ করে সাংবাদিকদের সাথে চলে তখন ট্রাফিক পুলিশদের কানামাছি খেলা।
ইতিমধ্যে গত কয়েকদিন ধরে নারায়ণগঞ্জ জেলার মূলধারার সাংবাদিকদের সংবাদের চাপের মূখে পড়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার ট্রাফিক পুলিশের আবারো ঘুম ভেঙ্গেছে।ট্রাফিক পুলিশের এই তৎপরতা শুধুই কি আইওয়াশ!ট্রাফিক পুলিশ কি পারবে এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে নাকি আবার অতীতে ফেরে যাবে।
তবে হাইকোর্ট থেকে নিষিদ্ধ এই ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও রিকশায় নারায়ণগঞ্জ সহ সারাদেশই সয়লাব।আর নারায়ণগঞ্জে এসব চলাচলের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা থাকায় গড়ে উঠেছে চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট। ক্ষমতাসীন কিছু রাজনৈতিক নেতা,কথিত নামধারী সাংবাদিক এই সিন্ডিকেটের হোতা। তারা প্রতিদিন কোটি টাকা চাঁদা তুলছে। এই চাঁদার টাকায় যাদের নূন আনতে পান্তা ফুরায় তাদের অনেকেই বাড়ি-গাড়ির মালিক বনে গেছেন। এই সিন্ডিকেটের বদৌলতে বিদ্যুতের এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও পুলিশের পেটেও যাচ্ছে লাখ লাখ টাকা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বার বার নিষিদ্ধ এসব যান বন্ধ করার কথা বলা হলেও অসাধু কিছু ট্রাফিক পুলিশের কর্মকান্ডের কারনে বাস্তবে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। অন্যদিকে এই সুযোগে দিন দিন এসব অবৈধ যানের সংখ্যা বেড়েই চলছে শহরে। যার ফলে বাড়ছে দুর্ঘটনা,প্রাণহানি আর চাঁদাবাজদের সিন্ডিকেট। সাথে পরিবহন সেক্টরের বিশৃঙ্খলাতো আছেই।
অন্যদিকে কথিত নামধারী স্টিকার না থাকলেও অধিকাংশ ব্যাটারিচালিত অটো,মিশুকের চালকদের পুলিশ ধরলেই তারা বের করছে সাংবাদিকদের কার্ড।আবার অনেকেই কার্ড করেও দেওয়া হয়েছে যাতে পুলিশ ধরলে দেখালেই সাথে সাথে ছেড়ে দেয়।
সূত্র মাধ্যমে জানা যায় এই সব অটো,মিশুক ও অটোরিকশা গুলোতে শহরের বেশ কিছু নামে বেনামে ও জেলার বাহিরের বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টালের স্টিকার লাগানো। আর এই স্টিকার গুলোর জন্য প্রতিটি অটো,অটোরিকশা ও মিশুককে দিতে হচ্ছে এককালীন সাড়ে ৩ হাজার টাকা। এছাড়াও প্রতিটি গাড়ীর জন্য মাসিক দিতে হয় আরো ১৫০০-২৫০০ টাকা। এই এককালীন ও মাসিক টাকা আবার ভাগ হচ্ছে দুই ভাগে। এক ভাগ যাচ্ছে কথিত সাংবাদিকদের পকেটে অন্য ভাগ যাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশের সহকারী উপ পরিদর্শক(এএসআই)আবুল বাশারের পকেটে।
স্টিকার ছাড়া গাড়ী গুলো আবার মাসিক চুক্তিও হচ্ছে সেই কথিত সাংবাদিকদের সহযোগিতায় কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তার সাথে। এছাড়াও চাষাড়া শহরমুখী আসা স্টিকার ছাড়া গাড়ী দুই বেলা করে সকাল ৮টায় দিতে হচ্ছে ৫০টাকা ও দুপুরে জন্য ১২টায় দিতে হচ্ছে ৫০ টাকা। দিনে মোট ১০০ টাকা করে দিতে হচ্ছে। অন্যদিকে ২নং রেলগেইট ও ফলপট্টিতেও আলাদা আলাদা করে সকাল ৮টায় ও দুপুর ১২টায় ২০ টাকা করে ৪০ টাকা দিতে হয় পুলিশ সদস্যকে এবং এই অটো,মিশুক গুলোকে আবার শহরে দায়িত্বপ্রাপ্ত তিন রেকারের কর্মকর্তাকে মাসিক ২হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। রেকারের এই তিন কর্মকর্তা এই টাকার কিছু অংশ ব্যয় করছে জেলা পুলিশ সুপারের বাসায় বাজারের।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ সচেতন মহল ট্রাফিক পুলিশের কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানিয়ে বলছে,ট্রাফিক পুলিশের এই কার্যক্রমের ধারা কি অব্যাহত থাকবে কথিত জেলার এই নামধারী সাংবাদিকদের স্টিকারের বিরুদ্ধে নাকি লোক দেখানো কার্যক্রম হবে। আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী বরাবরই চাই শহর যানজট মুক্ত থাকুক। তার জন্য শহরে অবৈধ অটো,ব্যাটারিচালিত রিকশা,মিশুক বন্ধ করা হোক। আপনেরা ইতিমধ্যে দেখেছেন ৬ তারিখ নাসিক মেয়র নিজেই জেলার অবৈধ গাড়ী স্ট্যান্ড ও অবৈধ যান বন্ধ করার জন্য ট্রাফিক পুলিশদের অনুরোধ জানিয়েছে। তবে আজকের পুলিশের কর্ম তৎপরতাকে সাধুবাদ জানাই আমরা।সেই সাথে নাসিককে অনুরোধ করবো ট্রাফিককে শহর থেকে এই অবৈধ যান শহর থেকে উচ্ছেদ করা হোক এবং পুলিশরা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করুক।