দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: বন্দরে সোনাচড়া (বি আই ডব্লিউ টি সি)’র ১নং ডকইয়ার্ডে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের শ্রমিকদের মধ্যে সৃষ্ট সংঘর্ষের ঘটনায় ৩ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সোমবার ১১এপ্রিল সকালে বন্দরের নাসিক’র ২৬নং ওয়ার্ডের সোনাচরা এলাকায় বি আই ডাব্লিউ টি এ’র ১নং ডকইয়ার্ডে এ অনাকাঙ্খিত ঘটনাটি ঘটে।
আহতরা হলেন সোনাচরা এলাকার আঃ জলিল মিয়ার ছেলে তথা সোনাচরা ডকইয়ার্ড এর ওয়াকার্স ইউনিয়নের নবনির্বাচিত সভাপতি আবুল হাসান সবুজ,ডকইয়ার্ডের গ্রীজার জামাল, শ্রমিক আল আমিন।
জানা গেছে, সম্প্রতি বন্দর (বিআই ডাব্লিউ টিসি)’র ওয়াকার্স ইউনিয়নের কমিটি গঠন হয়। কমিটির সংগঠনের নবনির্বাচিত সভাপতি মহসিন ভূইয়ার সাথে অভ্যন্তরীণ শ্রমিক নেতা ও মহানগর শ্রমিকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সামসুল আলম নয়নসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে সদ্য গঠিত কমিটি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর কারন কিছুদিন পূর্বে (বিআই ডাব্লিউ টিসি)’র ওয়াকার্স ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বন্দরের ৩ টি ডকইয়ার্ডে তাদের আঞ্চলিক কমিটি গঠন করা হয়।
এনিয়ে সোনাচরা এলাকায় ১নং ডকইয়ার্ডে সোমবার এক মতবিনিময়ের জন্য সময় নির্ধারণ করা হয়। তবে শ্রমিক নেতা সামসুল আলম নয়ন,বাবুল,আউয়াল,চুন্নুগং মহসন ভুইয়াকে উপস্থিত না থাকার জন্য অনুরোধ করেন এবং কমিটি গঠন সম্পর্কে আলোচনায় বসতে বলেন। কিন্তু মহসিন ভূইয়া শ্রমিক নেতা সামসুল আলম নয়নের কথা উড়িয়ে দিয়ে সদ্য গঠিত কমিটির আনুষ্ঠানিকভাকে পরিচিতি সভা করতে সোনাচরা ডকইয়ার্ডে এলে সেখানকার শ্রমিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে যায়।
এ সময় শ্রমিকরা উক্ত কমিটিকে একটি মনগড়া ও পকেট কমিটি আখ্যা দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। এ সময় উভয় পক্ষ মূখোমূখি হলে আবুল হাসান সবুজ, ডকইয়ার্ডের গ্রীজার জামাল, শ্রমিক আল আমিন শ্রমিকদের হাতে মারধর শিকার হন। এতে আবুল হাসানের মাথায় মারাত্মক রক্ত জখম ঘটে এবং মাথায় ৪ টি সেলাই পড়ে। এছাড়াও তার হাতে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। পরে তাকে দ্রুত নারায়ণগঞ্জ ৩’শ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে সদ্য গঠিত সংগঠনের নবনির্বাচিত সভাপতি মহসীন ভূইয়া জানান, আমাদের কমিটি সম্পূর্ণ বৈধ হওয়ার পরেও উল্লেখিত ক্যাডাররা আমাদের নানাভাবে হেনস্তা করে আসছে। এবং আমাদের সাংগঠনিক কাজে বাঁধা দিয়ে ডকইয়ার্ডে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চাচ্ছে। তারা বহিরাগতদের নিয়ে ডকইয়ার্ডে নানা অপকর্ম করে আসছে। শ্রমিক নেতা সামসুল আলম নয়নের ইন্ধনে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে পরিত্রান পেতে আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এদিকে সামসুল আলম নয়ন জানায়, তাদের কমিটি একটি ভূইফোড় কমিটি এমনকি তারা শ্রমিকলীগের নাম ব্যবহার করে বিএনপি-জামাতের লোকজনদের দলে ভেড়াচ্ছে। তাই শ্রমিকরা তাদের বয়কট করেছে। আমি আগেই জানিয়েছি আপনারা আসলে শ্রমিকরা বিশৃঙ্খলা করতে পারে। আগে আলোচনায় বসেন কিন্তু তারা কোন কথাই শুনেন নি। তবুও তারা বিশৃঙ্খলার উদ্দেশ্যে এখানে শ্রমিকদেও ক্ষেপিয়ে দেয়ার পর এমন ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য তারাই সম্পূর্ণভাবে দায়ী।
১নং ডকইয়ার্ডের অতিরিক্ত প্রকৌশলী জানায়, আসলে এখানে শ্রমিক বহিরাগত মিলি মিশে একটা বিশৃঙ্খলা করেছে। এ বিষয়ে আমরা জেনেছি। কিন্তু ঘটনার সময় আমরা সেখানে উপস্থিত ছিলাম না। আমরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েছি। অবশ্যই উভয়পক্ষকে নিয়ে আমরা বসবো এবং চলমান সংকট নিরসনে চেষ্টা করব।