দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার গোগনগর ইউনিয়ন শীর্ষ সন্ত্রাসী,ভূমিদস্যূ,চাঁদাবাজ, হত্যা মামলার আসামী বিচ্ছু বাহিনীর রুবেল গ্যাং এখনো পুলিশের ধরা ছোঁয়ার বাহিরে।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় একাধিক হত্যা,চাঁদাবাজি,ভাংচুর, ভূমিদস্যূ ও মারামারির মামলা থাকলো এখনো অধরা গোগনগরের আতঙ্ক বিচ্ছু বাহিনীর লিডার রুবেল ও তার সহযোগীরা।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় এই রুবেল গ্যাংদের বিরুদ্ধে হয় খুনের মামলা সহ একাধিক খুনের চেষ্টা,অগ্নি সংযোগ,মার্কেট ভাংচুর,টাকা লুটপাট,চাঁদাবাজি, ডাকাতি সহ অভিযোগ। গত জুন মাসে একের পর এক হত্যা,ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, মারধরের মত অপরাধের মামলা হলেও দিব্বি ঘুরে বেড়াচ্ছে এই রুবেল গ্যাংরা। নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার পুলিশের আসামীদের গ্রেফতারের অনীহায় একের পর অপরাধ ঘটিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছে তারা। আসামীদের না ধরার পুলিশের দায়িত্ব অবহেলায় খুন সহ বড় ধরনের অপরাধ করে সহজে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে পুনরায় একের পর এক অপরাধ ঘটিয়ে চলছে এই চিহ্নিত অপরাধীরা। এতে গোগনগর এলাকাবাসী ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে বিরাজ করছে। কখন আবার কার উপর হামলা চালিয়ে খুন,গুম করে সহজে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে আসে।
এর মধ্যেই গত জুন একটি খুন ও খুনের চেষ্টার মত দুইটি মামলা হয় এই রুবেল গ্যাংদের বিরুদ্ধে। জুন মাসের ২০ তারিখ রাতে চাঁন বাদশা নামে ডকইয়ার্ড ব্যবসায়ীকে পূর্ব শত্রুতার জেরে হত্যার উদ্দেশ্যে তার উপর হামলা চালায় রুবেল,আনছার গ্যাং।এনিয়ে চাঁন বাদশার স্ত্রী হাসি বেগম বাদী হয়ে মোঃ আনসার(৩৫) ,২.রুবেল মেম্বার (৩২) ,৩.শাওন (২৮), ৪.হিমু (২৬) ,৫.ইমরান (৩৪), ৬.মাসুদ(৩৮), ৭.হাবিব(৩৭) সহ মোট ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৪/৫ জনকে আসামী করে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানাহ একটি মামলা দায়ের করে। যার নাম্বার ২৪(০৬)২২।
মামলায় উল্লেখ করা হয়,পূর্ব শত্রুতার জেরে উপরিক্ত আসামীরা গত ২০ জুন রাত সাড়ে ৮টায় মামলার উপরিক্ত আসামীরা চাঁন বাদশার উপর হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালানো হয়।তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে রাম দা কুপানো, লোহার রড দিয়ে দুই পা ভেঙে ফেলা এবং চাকু দিয়ে পিঠে কুপানো হয়। এতে হাতে,নাকে,মুখে রক্তাক্ত জখম,দুই পা ভেঙে যায়।এই মামলায় আসামী রুবেল,আবু কাশেম উচ্চ আদালত থেকে গত ৭ জুলাই ৪ সপ্তাহের জামিন নিয়ে আসে।
একই মাসের ২৬ তারিখ গোগনগর ইউপির সাবেক সদস্য দৌলত হোসেন মেম্বার ওষুধ কিনতে সিএনজিতে চড়ে চরসৈয়দপুর এলাকায় যাবার পথে পূর্ব শত্রুতার জেরে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে। খবর পেয়ে স্বজনরা দৌলত হোসেনকে উদ্ধার করে গুরুতর অবস্থায় মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় দৌলত মেম্বারের স্ত্রী মমতাজ বেগম বাদী হয়ে ২৭ জুন নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ডের মেম্বার রুবেল আহমেদ সহ ইমরান,তাওলাদ মেম্বার,রানা,হিমেল,শাওন, আমির সহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ১৫ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। যার মামলা নং ৩০,তারিখ ২৭/০৬/২২। এই পর্যন্ত সেলিম নামে এক আসামীকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারলেও বাকি আসামীদের গ্রেফতার করেনি। এই সুযোগে গত ৭ জুলাই মামলার আসামী তাওলাদ মেম্বার ৪ সপ্তাহের (৩ আগষ্ট পর্যন্ত) ও ২৭ জুলাই উচ্চ আদালতে প্রধান আসামী সহ বাকী আসামীরা ৪ সপ্তাহের জামিন মঞ্জুর করে।
এর আগে ৫ তারিখ সৈয়দপুরের একটি ডকইয়ার্ড থেকে জাহাজ কেটে তার যন্ত্রাংশ ডাকাতি করে নিয়ে আসে রুবেল গ্যাং এনিয়ে ডকইয়ার্ডের মালিক আল ইসলাম বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে।এর পর পরই ২০ জুন সাইজউদ্দিনের নামে এক ভাঙ্গারি ব্যবসায়ীর উপর চাঁদার জন্য হামলা,জলিল সুপার মার্কেট ভাংচুর,লুটপাট এবং জলিল মিয়ার বাসায় ভাংচুর,বাসা বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও দুইটি বাইক আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়। এনিয়েও নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় ও নারায়ণগঞ্জ আদালতে মামলা হয়। তবু আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অনীহা।নারায়ণগঞ্জের সুনামধন্য একটি পরিবারের নির্দেশে বা তদবিরে পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার করছে না বলে মনে করছে এলাকাবাসী।
এদিকে চাঁন বাদশার মামলায় আসামী রুবেল,তাওলাদ,আবু কাশেমকে উচ্চ আদালত গত ৭ জুলাই ৩ আগষ্টের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ফারহানা ফেরদৌসির আদালতে আত্মসমাপর্ণ করার নির্দেশ দেওয়া হলেও আসামীরা এখন পর্যন্ত আত্মসমপর্ণ করেননি। অন্যদিকে দৌলত মেম্বার হত্যা মামলার আরেক আসামী তাওলাদ হোসেনকেও ৩ আগষ্টের মধ্যে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে আত্মসমাপর্ণ করার নির্দেশ দেওয়া হলেও তারা আত্মসমাপর্ণ করেনি।
এনিয়ে ভুক্তভোগী পরিবাররগুলো রয়েছে আতঙ্কের মধ্যে। এবুঝি আবারো হামলা চালিয়ে আরেকজন সদস্যকে খুন করে। তবে দৌলত মেম্বারের পরিবারের সাথে প্রকাশ্যে এই ঘটনা ঘটে গেছে। গত ৩১ জুলাই প্রকাশ্য দিবালোকে রুবেল গ্যাং মামলার বাদীকে মামলা তুলে ফেলতে হুমকি প্রদান করে।মামলা না তুললে বাকিদেরও খুন করার হুমকি দেওয়া হয়।
এনিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো জানায়,অতিদ্রুত রুবেল মেম্বার,তাওলাদ মেম্বার,আনছার সহ তাদের গ্যাংয়ের সকলকে গ্রেফতার করা হোক।মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেছেন সেই সাথে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে অনুরোধ করেছেন তারা ভয়ের মধ্যে বিরাজ করছে আসামীদের হুমকিতে। আসামীদের গ্রেফতার করে দ্রুত সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করা হোক।