দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: আগামী ১ অক্টোবর হতে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গা পূজা। এবারের দূর্গোৎসবের সফল আয়োজন করার লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে মত বিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল এগারোটায় শহরের চাষাঢ়ায় গোপাল জিউর মন্দিরে এ আয়োজন করা হয়। মত বিনিময় সভায় পূজা উদযাপন পরিষদ ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দ এবং মন্ডপ কমিটির প্রতিনিধিগণসহ আয়োজন সংশ্লিষ্ট সনাতন ধর্মের অনুসারীগন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপনের সভাপতিত্বে ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শিশির ঘোষ অমরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক প্রদীপ কুমার দাস। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পূজা পরিষদের সাবেক সহ সভাপতি ননী গোপাল সাহা, জেলা পূূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক সাংবাদিক উত্তম সাহা, মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি লিটন পাল, সাধারণ সম্পাদক নিমাই দে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে আগত মন্ডপগুলোর প্রতিনিধিগণ মন্ডপের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন। পূজা পরিষদ কতৃপক্ষ পূজার আগেই তা সমাধানের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন। এ সময় নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতৃবৃন্দ অনুষ্ঠানের আয়োজন নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং অতীতের চেয়ে এবারের আয়োজন আরো বেশী প্রানবন্ত হয়েছে বলে মত প্রকাশ করেন। আর এজন্য তারা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপনের বিচক্ষনতা এবং সাংগঠনিক দক্ষতার প্রশংসা করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক প্রদীপ কুমার দাস বলেন, আমরা হিন্দু ধর্মীয় কল্যান ট্রাষ্ট চাইনা। আমরা হিন্দু ফাউন্ডেশন চাই। আমরা কারো অনুগ্রহ চাইনা আমরা আমাদের অধিকার চাই। এদেশ হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিষ্টানসহ সকল ধর্মের মানুষের। তাহলে এদেশে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থাকলে হিন্দু ফাউন্ডেশন কেন থাকবেনা। অচিরেই এ বৈষম্য থেকে মুক্তি চাই।
সভাপতির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপিন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন বলেন, আগত মন্ডপ প্রতিনিধিগণের উপস্থাপন করা বিভিন্ন সমস্যাগুলো শুনলাম এবং যথাযথ কতৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করে তা দ্রুতই সমাধান হবে। সবাইকে সাত্ত্বিক পূজা আয়োজনের আহবান করা হলো। দেশে চলমান বিদ্যুত সংকট বিবেচনা করে সকলকে মিতব্যয়ী হতে হবে আর এ বিষয়ে জাতীয় পপর্যায় থেকে যে নির্দেশনা দেয়া হবে তা মেনে চলতে হবে। তাছাড়া কোনপ্রকার গুজবে কান দেয়া যাবেনা বা গুজব ছড়ানো যাবেনা। সামমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে। আর প্রতিটি মন্ডপে সিসি ক্যামেরা অবশ্যই লাগাতে হহবে যাতে করে প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠি কোনো প্রকার অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে। গত বছর কুমিল্লায় যে ঘটনাটি ঘটানোর ষড়যন্ত্র করা হয়েছিলো তা ধরতে পারা গেছে শুধুমাত্র সিসি ক্যামেরা ছিলো বলে। যদি সে মন্ডপে সিসি ক্যামেরা না থাকতো তাহলে কত বড় দুর্যোগ ঘটে যেতে পারতো। আমরা সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে শারদীয় দুর্গোৎসব উৎসবমূখর পরিবিশে পালন করবো এই হোক আমাদের অঙ্গিকার। সেইসাথে আজকের এই মত বিনিময় সভার সুন্্দর আয়োজনের নেপথ্যের সকলকে নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা ও প্রাণখোলা শুভেচ্ছা।
এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন ফতুল্লা থানা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রঞ্জিত মন্ডল, সাধারণ সম্পাদক শিবু দাস, সোনারগাঁ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি লোকনাথ দত্ত, সাধারণ সম্পাদক এড. প্রদীপ ভৌমিক, পূজা পরিষদ নেতা সুশিল দাশ, বন্দরের সভাপতি শংকর দাস, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল বিশ্বাস, আড়াইহাজারের সভাপতি হারাধন দে, সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব ভৌমিক, রূপগঞ্জের সভাপতি গনেশ পালন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সংগ্রাম দাস রানা, সিদ্ধিরগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক খোকন বর্মন প্রমুখ, পূজা পরিষদ নেতা তপন ঘোষ, কৃষ্ণ আচার্য্য, তপন গোপ সাধু, রিপন দাশ, অভিরাজ সেন সজল, সুজন বিশ্বাস প্রমূখ।