দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: নারায়ণগঞ্জে পুলিশের সাথে বিএনপির নেতাকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় যুবদল নেতা শাওন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক মনিরুল ইসলাম রবি, মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি এ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খান, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু সহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের শতাধিক নেতা ও কর্মী আহত হয়েছে।
নিহত রাজু আহম্মেদ শাওন ফতুল্লার এনায়েতনগরের ৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবদল নেতা এবং শাহেদ আলীর ছেলে।
বৃহস্পতিবার (১লা সেপ্টেম্বর)নগরীর ২নং রেলগেইট এলাকায় বিএনপির ৪৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে জেলা ও মহানগর বিএনপির র্যালীতে পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
এদিকে মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আবু আল-ইউসুফ খান টিপু বলেন, আজকে বিএনপির ৪৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে র্যালী বরে করার কথা ছিলো। কিন্তু পুলিশ র্যালীতে বাধা প্রদান করে ও নেতাকর্মীদের উপর লাঠি চার্জ করেছে। সেই সাথে নেতাকর্মীদের উপর টিয়ারসেল, রাবার বুলেট ও গুলি নিক্ষেপ করে রনক্ষেত্রে পরিনত করেছে। এই ঘটনায় যুবদল নেতা শওন নিহত হয়েছে আর শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। তারা বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন আছে। অনেককে গুরুত্বর অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের চিকিৎসক নাজমুল হোসেন বলেন, পুলিশ-বিএনপির সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছে। তার মরদেহ হাসপাতালে রাখা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্ষীরা জানাযায়, বিএনপির ৪৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে শহরের ডিআইটিতে অবস্থিত আলী আহাম্মদ চুনকা পাঠাগার ও মিলনায়তন থেকে একটা শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটিতে পুলিশ বাঁধা দেয়। এসময় পুলিশের সাথে বিএনপির নেতাকর্মীদের বাকবিতণ্ডা শুরু হয় শোভাযাত্রা।
পরে শোভাযাত্রাটি ২নং রেলগেইট আসলে পুলিশ পিছন থেকে অতর্কিতভাবেভাবে নেতাকর্মীদের উপর লাঠিচার্জ চালিয়ে শোভাযাত্রাটি ছত্রভঙ্গ করে দেন। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়ে।
পুলিশও বিএনপি নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে টিয়ারগ্যাস,রাবার বুলেট ও গুলি ছুড়ে। শুরু হয় পুলিশ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে দাওয়া পাল্টা দাওয়া। শহরের ২নং রেলগেইট, ১নং রেলগেইট, ডিআইটি, মন্ডলপাড়া, উকিলপাড়া পর্যন্ত চলে পুলিশের সাথে বিএনপি নেতাকর্মীদের দাওয়া পাল্টা দাওয়া চলে প্রায় দেড় ঘন্টা। এসময় শহরের অলিতে-গলিতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এসময় দোকান-পাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠা বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে,নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, কোন গণতান্ত্রিক দেশে মিছিল মিটিং করতে হলে কিন্তু অনুমতির প্রয়োজন আছে। আমরা কিন্তু বিএনপির মিটিংয়ের কথা জেলা প্রশাসক ও আমিও জানি না। তারা রাস্তা আটকিয়ে জানমালের ক্ষতি করার জন্য রাস্তা অবরুদ্ধ করে সমাবেশ করার চেষ্টা করছিলো।
আমরা ভদ্রভাবে ও ভালোভাবে তাদের অনুরোধ করেছিলাম যেহেতু এটা শহরের প্রাণকেন্দ্র ও ব্যবসায়ী রাস্তায় তাই তাদের বলেছিলাম রাস্তা অবরোধ করে কোন সমাবেশ করার অধিকার নেই। আপনাদের যদি করতে হয় তাহলে অন্য চিন্তাভাবনা করে করে করেন কিন্তু রাস্তা অবরোধ করে জানমালের ক্ষতি করে এটা করা যাবে না।
তারা আমাদের কথা না শুনে পুলিশের উপর হঠাৎ করে এলোপাথাড়িভাবে বৃষ্টির মত ইটপাটকেল মারা শুরু করেন এবং ককটেল চার্জ শুরু করে।