দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, নারায়ণগঞ্জ জেলার উদ্যোগে এবং কেন্দ্রীয় লিগ্যাল এইড উপ-পরিষদের সহযোগিতায় নারী ও কন্যা নির্যাতন প্রতিরোধে সংগঠকদের নিয়ে এক প্যারালিগ্যাল প্রশিক্ষণ সংগঠন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) তারিখ বিকাল ৩ টায় প্যারালিগ্যাল প্রশিক্ষণ সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি ও জেলার সভাপতি বীর নারী মুক্তিযোদ্ধা লক্ষ্মী চক্রবর্তী।
প্রথমে প্রশিক্ষণার্থীদের নাম রেজিস্ট্রেশন করা হয়। এরপর হাউজরুল ও প্রত্যাশা চয়ন পর্ব পরিচালনা করেন প্রোগ্রাম এক্সিকিউটিভ সুজাতা আফরোজ। নারী ও কন্যার মানবাধিকারের সুরক্ষায় পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধে সুরক্ষা আইন’২০১০- বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট হাসিনা পারভীন, বাল্যবিবাহের কারণ, কুফল ও প্রতিরোধের উপায় বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন আন্দোলন সম্পাদক শোভা সাহা, নারী ও কন্যা নির্যাতন প্রতিরোধে বাস্তব কাজের ধারা বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান ও পরিচালনা করেন লিগ্যাল এইড সম্পাদক সাহানারা বেগম।
আলোচনা শেষে প্রশিক্ষনার্থীদের প্রশ্ন-উত্তর পর্ব শুরু হয়, এ পর্বে অংশগ্রহণ করেন- রওনক রেহানা, মোর্শেদা দেওয়ান, সীমা হক, চৈতি, তিথি সুবর্ণা, ডাঃ করিমুন নেছা, হেপী সূত্রধর, সুমাইয়া চৈতি।
বক্তারা বলেন- বর্তমান সময়ে নারী ও কন্যা নির্যাতনের হার তো কমেনি, বরং পৈশাচিকতার ভিন্ন মাত্রা পরিলক্ষিত হচ্ছে। অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, ভয়াবহ করোনাকালীন সময়ে পারিবারিক নির্যাতন, হত্যা-ধর্ষণ চরম আকার ধারণ করেছে। এজন্য আইনের শাসনের জরুরী প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন দরকার। আইন থাকলেই চলবে না, আইনের সঠিক প্রয়োগ করতে হবে। পারিবারিক সহিংসতা বন্ধে পারিবারিক সুরক্ষা আইন’২০১০ অত্যন্ত যুগোপযোগী। কিন্তু এই আইন সম্পর্কে সাধারণ মানুষ তেমন কিছুই জানে না। অনেক আইনজীবীরও এ আইন সম্পর্কে ধারণা নেই। এ বিষয়ে ব্যাপক প্রচারণা ও প্রয়োগ দরকার। বাল্য বিবাহ একটি জাতির অগ্রগতির প্রধান অন্তরায়। অথচ দেশে বাল্য বিবাহ বেড়েই চলেছে। দারিদ্র্যতা, কুসংস্কার, অশিক্ষা, ধর্মীয় গোঁড়ামি, নিরাপত্তার অভাব, বখাটেদের উৎপাত, সচেতনতার অভাব ইত্যাদি কারণে বাল্য বিবাহ ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।
বর্তমানে সরকার নারী শিক্ষা প্রসারে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বেসরকারি উদ্যোগও রয়েছে। কিন্তু, বর্তমানে দারিদ্র্যতা ও নিরাপত্তার অভাবে বিয়ে দেয়াটাই পিতা-মাতা নিরাপদ মনে করেন। এর ফলে স্বাস্থ্যহানি, মাতৃমৃত্যুর হার বাড়ছে, অপুষ্ট সন্তান জন্ম দান, দারিদ্র্যতা বাড়ছে। তাই সামাজিক নিরাপত্তা, নারী ও কন্যা নির্যাতন প্রতিরোধ, সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক ব্যাপক প্রচারণা ও কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ১৯৭০ সাল থেকে সারা দেশে নারী ও কন্যা নির্যাতন প্রতিরোধে কাজ করে চলেছে। নারায়ণগঞ্জ জেলাও জন্মলগ্ন থেকেই নারী অধিকার রক্ষা ও নির্যাতন প্রতিরোধে আন্দোলন করে আসছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা অফিসে নিয়মিত নির্যাতিত নারী ও শিশুদের আইনী সহায়তা প্রদান ও মামলা করা হয়। নির্যাতনের প্রতিবাদে আন্দোলনমুখী কর্মসূচি পালন করে চলেছে। সকলের মিলিত প্রচেষ্টায় আশাকরি নির্যাতন প্রতিরোধ করা সম্ভব।