31 C
Nārāyanganj
সোমবার, মে ২৯, ২০২৩

দেশে প্রবেশপথগুলোয় করোনা টেস্ট বৃদ্ধির নির্দেশ

দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: চীনসহ ইউরোপের শীতপ্রধান দেশগুলোতে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। এ অবস্থায় দেশের সব বিমান, স্থল ও সমুদ্রবন্দরে স্ক্রিনিং বাড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। একই সঙ্গে বন্দরগুলোতে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে পরীক্ষা করে আক্রান্ত ব্যক্তিকে আইসোলেশনে নেওয়ার জন্যও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

রবিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত বিশ্বে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিতে বাংলাদেশের করণীয় শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সভায় এ নির্দেশ দেন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির।

তিনি বলেন, ‘চীন-ভারতসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে আবারও করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়ছে। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু আছে। অসংখ্য মানুষ প্রতিনিয়ত আসা-যাওয়া করছে। এ অবস্থায় করণীয় ঠিক করতে শনিবার জাতীয় কারিগরি কমিটির বৈঠক ছিল। কমিটি চারটি বিষয়ে আমাদের পরামর্শ দিয়েছে। ’

আহমেদুল কবির বলেন, ‘করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট বিএফ.৭; সেটি বিএ.৫-এর একটি সাব-ভেরিয়েন্ট। এটাকে বলা হয় আর.১৮, অর্থাৎ একজন থেকে ১৮ জনকে সংক্রমিত করতে পারে। অন্য ভেরিয়েন্টের তুলনায় এর সংক্রমণ ক্ষমতা চার গুণ বেশি। ’ তিনি বলেন, নতুন এ ভেরিয়েন্টের ভয়ানক দিক হচ্ছে যে ইনকিউবিশন পিরিয়ড অনেক কম। অর্থাৎ খুব কম সময়ের মধ্যে আপনি আক্রান্ত হবেন এবং এটি অনেক বেশিসংখ্যক মানুষকে সংক্রমিত করতে পারবে। এটার উপসর্গ সম্পর্কে যা জানা গেছে, তা অন্যান্য ভেরিয়েন্টের মতোই।

অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, নতুন ভেরিয়েন্ট টিকা না নেওয়া ব্যক্তিদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাই যারা টিকা নেয়নি তাদের দ্রুত নিয়ে নেওয়ার জন্য কারিগরি কমিটি সুপারিশ করেছে। এ ছাড়া সেকেন্ড বুস্টার ডোজের (চতুর্থ ডোজ) প্রচার-প্রচারণা বৃদ্ধির বিষয়েও বলেছে কমিটি। ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার, প্রেগন্যান্ট নারী ও ষাটোর্ধ্ব যারা আছেন, তাদেরকে দ্বিতীয় বুস্টার ডোজ দ্রুততম সময়ে নিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এ ছাড়া যাদের কোমরবিড কন্ডিশন রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রটেকটিভ কেয়ার, যেমন- মাস্ক ব্যবহার করা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করা এবং আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকার বিষয়ে কারিগরি কমিটি থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে আমরা আইইডিসিআরকে নির্দেশনা দিয়েছি, যদিও দেশে বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হচ্ছে না, তার পরও আমরা বলেছি, যাদেরই সংক্রমণ পজিটিভ আসবে, তাদের যেন জেনেটিক সিকোয়েন্স করে সংক্রমণের নতুন ভেরিয়েন্ট আছে কি না সেটি যেন পরীক্ষা করা হয়। ’

আহমেদুল কবির বলেন, ‘কারিগরি কমিটির সভায় বলা হয়েছে, দ্বিতীয় বুস্টার ডোজে ফাইজারের যে টিকা দেওয়া হচ্ছে, সেটির মেয়াদ ফাইজার কম্পানিই বাড়িয়েছে। এ বিষয়ে ডিজিডিএ অনুমোদন দিয়েছে, জাতীয় কারিগরি কমিটিও বলেছে সেই ভ্যাকসিনটি দ্রুত দিয়ে দেওয়ার জন্য। একই সঙ্গে এটি নিয়ে যেন কোনো দ্বিধা তৈরি না হয়, সে বিষয়েও কারিগরি কমিটি নির্দেশনা দিয়েছে। ’

অনুষ্ঠানে কারিগরি কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা বলেন, ‘কভিড সংক্রমণের নতুন ভেরিয়েন্ট নিয়ে আমাদের সতর্ক হতে হবে। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। মানুষ একেবারে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে ভুলে গেছে। যেহেতু সংক্রমণ বাড়ছে আবারও মাস্ক পরা, দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি। আবারও সচেতনতা বাড়াতে হবে। বুস্টার ডোজ যারা নেয়নি, তাদের দ্রুত টিকা নিয়ে নিতে হবে। ’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশিদ আলম বলেন, টিকার মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে একটি ভুল-বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে। টিকা নিয়ে দ্বিধার কারণ নেই। ম্যানুফ্যাকশন কমিটি টিকা নিয়ে কাজ করে। তাদের সঙ্গে কথা বলেই টিকার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এটা নিয়ে উদ্বেগের কোনো কারণ নেই।

সংক্রমণ আবারও বাড়লে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সতর্ক রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ডিএনসিসিসহ কভিড হাসপাতাল যেগুলো রয়েছে, তাদের সঙ্গে আমরা মিটিং করছি। তাদের প্রস্তুত থাকতে বলেছি। আইসোলেশন ইউনিটগুলোকে প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। অধিদপ্তর সব বিষয় নিয়ে সতর্ক এবং প্রস্তুত আছে। ’

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments

0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x