23 C
Nārāyanganj
বুধবার, মার্চ ২২, ২০২৩

বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় পতাকা বিক্রির ধুম

দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর জন্ম হয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশের। আর জাতীয় জীবনের গুরুত্বপূর্ণ এই দিনটিকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার, মার্কেট ও বিপণিবিতান এমনকি সড়কগুলোতেও জাতীয় পতাকা কেনাবেচার দৃশ্য চোখে পড়ছে।

দু’দিন পর ১৬ ডিসেম্বর। পালিত হবে বাঙালি জাতির মহান বিজয় দিবস। সারা বছরের কোনো সময় জাতীয় পতাকার কথা স্মরণ না হলেও মনে পড়ে এ মাসেই। তাই তো বিজয়ের মাসের শুরু থেকেই জাতীয় পতাকার ব্যবহারও বেড়ে যায়। আর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে এটি চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে। এ কারণে এসময় পতাকা তৈরির ধুম পড়ে যায়। তাই সুযোগ বুঝে মৌসুমি বিক্রেতারা লাঠির মাথায় বেঁধে কাঁধে করে জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছেন লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা।

বাড়ির ছাদে, বারান্দায়, গাড়িতে, রিকশায়, এমনকি মোটরসাইকেলের লাল-সবুজের পতাকা পতপত করে উড়তে থাকে। এজন্য নারায়ণগঞ্জ সহ সারা দেশে চলছে জাতীয় পতাকা বিক্রির ধুম।

সঙ্গে পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে শহরের অলিগলিতে মৌসুমি পতাকা বিক্রেতারাও হাঁকডাক দিয়ে বিক্রি করছেন দেশের জাতীয় পতাকা। নির্ধারিত মাপে কাপড়ের পতাকার পাশাপাশি কাগজ দিয়ে তৈরি পতাকাও বেশ বিক্রি হচ্ছে। কাগজের পতাকা দিয়ে ফুটপাত বা দোকানপাট, বাসা সাজানো হচ্ছে। বৈদ্যুতিক বাতি দিয়েও এখন পতাকা তৈরি করা হচ্ছে।

কয়েক ফুট লম্বা বাঁশে পর্যায়ক্রমে বড় থেকে ছোট আকারের জাতীয় পতাকা সাজিয়ে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। আকারভেদে দামে মিললেই কিনে নিচ্ছেন ক্রেতারা। নির্ধারিত মাপে লাল-সবুজ কাপড়ের পতাকার পাশাপাশি কাগজের তৈরি পতাকাও বেশ বিক্রি হচ্ছে। আকারভেদে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত এসব জাতীয় পতাকা বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া কাগজের পতাকা ১৫-২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে পতাকা বিক্রি করছেন মৌসুমি ব্যবসায়ী আলমগীর ও কবির। এ সময় তারা দু’জনে জানান, জীবন-জীবিকা নির্বাহের জন্যই শুধু পতাকা বিক্রি করা নয়, এই পেশার মধ্যে রয়েছে দেশাত্মবোধ ও দেশপ্রেম। প্রতি বছর বিজয় দিবস উপলক্ষে তারা ফেরি করে পতাকা বিক্রি করেন। পাশাপাশি বার্ষিক ক্যালেন্ডার ও পঞ্জিকাও বিক্রি করেন। বিজয় দিবস যতই ঘনিয়ে আসে, ততই পতাকার চাহিদা বেড়ে যায়। তবে এবার অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বিক্রি কিছুটা কম।

চাষাড়া মোড়ে জাতীয় পতাকা বিক্রেতা শ্যামল ঘোষ বলেন, পতাকা বিক্রি করে আমি গর্বিত। আমি মনে করি, পতাকার মাধ্যমে আমি দেশের মানুষের কাছে শহীদদের সন্তানকে তুলে দিচ্ছি। তারা সেটিকে অত্যন্ত যতেœর সঙ্গে লালন করছেন। এ পতাকার জন্য বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছেন। আর কোনো জাতীয় দিবস এলেই এ পতাকার কদর অনেক বেড়ে যায়। তিনি বলেন, এ এক মাস পতাকা বিক্রি করে অনেক লাভ হয়। তাই বিজয়ের মাস এলেই পতাকা বিক্রি করি।

এখানকার বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আকারভেদে ১০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত পতাকা বিক্রি হয়। এছাড়া কাগজের ছোট পতাকা এক হাজার ১০০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আছে কাগজের বিজয় স্মৃতিসংবলিত ক্যাপ। বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকা করে। মাথায় পরার পতাকাসংবলিত রাবার ব্যান্ড বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ২৫-৪০ টাকা। আছে হাতের ব্যান্ড, তা পাওয়া যাচ্ছে ৩০-৪০ টাকায়।

বিজয় পতাকা ক্রেতা জেসমিন জানান, ১৬ ডিসেম্বর উপলক্ষে শিশুদের জন্য কাগজের তৈরি কয়েকটি জাতীয় পতাকা কিনেছেন। পতাকার মাধ্যমে শহীদদের সম্মানকে তাদের হাতে তুলে দিচ্ছেন বলে তারা মনে করেন। ছোট বাচ্ছারা যেন তাদের অন্তরে জাতীয় পতাকাকে ধারণ করে।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments

0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x