দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে ১০ দফা ঘোষণা করেছে দলটি।
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে গণসমাবেশের প্রধান অতিথি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন এই ১০ দফা ঘোষণা করেন।
বিএনপির মিত্র রাজনৈতিক দল ও সংশ্লিষ্ট সব গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা করে এ ১০ দফা ঠিক করা হয়েছে বলে তিনি ঘোষনা।
এসময় তিনি বলেন, সরকার আজকের গণসমাবেশে বাধা দেওয়ার জন্য নানান ষড়যন্ত্র করেছে। আমাদের সাড়ে চারশোর বেশি নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। তবে সব বাধা-বিপত্তি মোকাবিলা করে আজকের ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ সফল হয়েছে।
বিএনপির ১০ দফা গুলো হলো,
১. বর্তমান অনির্বাচিত অবৈধ জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করিয়া ভোটবিহীন, গণতন্ত্র হরণকারী, লুটেরা ক্ষমতাসীন ফ্যাসিস্ট সরকারকে পদত্যাগ করিতে হইবে;
২. ১৯৯৬ সালে সংবিধানে সংযোজিত ধারা ৫৮-খ, গ ও ঘ’এর আলোকে দল নিরপেক্ষ একটি অন্তবর্তীকালীন তত্বাবধায়ক সরকার গঠন করিতে হইবে;
৩. নির্বাচনকালীন দল নিরপেক্ষ অন্তবর্তীকালীন তত্ত্ববধায়ক সরকার বর্তমান অবৈধ নির্বাচন কমিশন বাতিল করিয়া সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করিবে। উক্ত নির্বাচন কমিশন অবাধ নির্বাচনের অনিবার্য পূর্বশর্ত হিসাবে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আরপিও সংশোধন, ইভিএম পদ্ধতি বাতিল ও পেপার ব্যালট এর মাধ্যমে ভোটের ব্যবস্থা নিশ্চিত করিবে এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার বাতিল করিতে হইবে;
৪. দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মী, পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালনকারী সকল মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক এবং আলেমদের সাজা বাতিল, সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও সকল রাজনৈতিক কারাবন্দীদের অনতিবিলম্বে মুক্তি দিতে হইবে। দেশে সভা-সমাবেশ ও মত প্রকাশে কোনো বাঁধা সৃষ্টি না করা; সব দলকে স্বাধীনভাবে গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালনে প্রশাসন ও সরকারী দল কর্তৃক কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ বা বাঁধা সৃষ্টি না করা; স্বৈরাচারী কায়দায় বিরোধী কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করার লক্ষ্যে নতুন কোন মামলা ও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার যাইবে না;
৫. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮, সন্ত্রাস দমন আইন-২০০৯ এবং বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ সহ মৌলিক মানবাধিকার হরণকারী সকল কালা-কানুন বাতিল করিতে হইবে;
৬. বিদ্যুৎ, জ¦ালানি, গ্যাস, সার ও পানিসহ জনসেবা খাতসমূহে মূল্যবৃদ্ধির গণবিরোধী সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল করিতে হইবে;
৭. নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনয়ন করিতে হইবে ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারকে সিন্ডিকেট মুক্ত করিতে হইবে। মুদ্রাস্ফীতির আলোকে শ্রমজীবি মানুষের ন্যায্যমজুরী নিশ্চিত করা, শিশুশ্রম বন্ধ করা ও কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করিতে হইবে;
৮. গত ১৫ বছরব্যাপী বিদেশে অর্থ-পাচার, ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত, বিদ্যুৎ-জ¦ালানী খাত ও শেয়ার বাজারসহ রাষ্ট্রীয় সকল ক্ষেত্রে সংঘটিত দূর্নীতি চিহ্নিত করার লক্ষ্যে একটি কমিশন গঠন করিতে হইবে;
৯. গত ১৫ বছরে গুমের শিকার সকল নাগরিকদের উদ্ধার করিতে হইবে এবং বিচারবহির্ভূত হত্যা ও রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের প্রতিটি ঘটনার আইনানুগ বিচারের ব্যবস্থা করিয়া যথাযথ শান্তি নিশ্চিত করা এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়ি-ঘর, উপসানালয় ভাংচুর ও সম্পত্তি দখলের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে বিচারিক প্রক্রিয়ায় শাস্তি নিশ্চিত করিতে হইবে;
১০. আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন ও বিচার বিভাগকে প্রাতিষ্ঠানিক শৃংখলা ও পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালনের উপযোগী করার লক্ষ্যে সরকারি হস্তক্ষেপ পরিহার করিয়া স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হইবে।