দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে বুকে লালন করে বছরের শেষদিনে এসেও কেক কেটে ও প্রীতিভোজের মাধ্যমে জাতির জনকের জন্মবার্ষিকী উদযাপন করলেন বধির উন্নয়ন সংস্থার সদস্যরা। এরই সাথে প্রতিবন্ধীরাও প্রমাণ করলেন দেরি হলেও জাতির জনকের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তারাও পিছিয়ে নেই ।
শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২ টায় নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়ায় সংগঠনের নিজস্ব কার্যালয়ে জাতির জনকের এ জন্মবার্ষিকী উদযাপন করেন প্রতিবন্ধীরা।
জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠানটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোঃ নুরুজ্জামান বাবুর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ আদালতের সরকারী কৌশলী (জি.পি) এড.মেরিনা বেগম। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী প্রগতি সংস্থা নারায়ণগঞ্জ জেলার মহাসচিব ইউসুফ হাওলাদার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এড.মেরিনা বেগম বলেন,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের জাতির পিতা। এই পৃথিবী যতদিন ধ্বংস না হবে ততদিন বঙ্গবন্ধু আমাদের কাছে জাতির পিতা হিসেবেই থাকবেন। যার জন্ম না হলে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হতো না। আমরা বাঙালী জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারতাম না। আমরা যদি জন্ম দাতা পিতাকে না স্মরণ করি তাহলে আমাদের কিন্তু নিজেদের অস্তিত্ব থাকে না। আপনেরাও আজ একেবারের বছরের শেষ দিন এসেও জাতির জনকের জন্মবার্ষিকী পালন করে প্রমাণ করে দিলেন দেরিতে হলেও আপনেরা পিঁছিয়ে নেই।
তিনি আরো বলেন,বাংলাদেশ আজ পৃথিবীর কাছে সম্মানের সহিত মাথা উঁচু করে দাঁড় করিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা। একদিন এদেশ উন্নত দেশ হিসেবে মর্যাদা লাভ করবে। বাঙালীরা এখন বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত জায়গায় পৌঁছে গেছে। এখন আমরা বিদেশ যাই একসময় আমাদের দেশেও আসবে চাকুরী,পড়াশোনার জন্য মানুষ অন্য দেশ থেকে। এবছরই নিজস্ব অর্থায়নে আমাদের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হয়েছে। আবার কিছুদিন আগে মেট্রোরেল উদ্বোধন করা হয়েছে। এই যে এত উন্নয়ন এইগুলো বঙ্গবন্ধুর পরিকল্পনা।
তার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা পিতার পরিকল্পনা ও স্বপ্নকে বুকে ধারন করে বাঙালী জাতির মধ্যে বহমান করে দিয়েছেন বলেই আজকে এ জায়গায় আমরা পৌঁছি গেছি। এই গর্বকে আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে লালন করতে হবে। আপনেরা নিজেদের কখনো ছোট মনে করবেন না। প্রত্যেকের মধ্যেই একটা শক্তি আছে। এই শক্তি ও সাহস দিয়ে নিজেরা চলবেন। তাহলে কেউ আপনাদের পরাজিত করতে পারবে না। কোন ভূমিদস্যুও আপনাদের পরাজয় করতে পারবে না। কাজেই আপনেরা মনে সাহস রাখবেন যতক্ষণ বাঁচবেন।
এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্যে ইউসুফ হাওলাদার বলেন, ১৯৫২ ও ১৯৭১ সালের সকল শহীদের প্রতি সম্মান ও সমবেদনা জানাই। তাদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। বাংলাদেশ সরকার শেখ মুজিবের নেতৃত্বে আমাদের জন্য একটা কোটা করেছিলো যেটার মাধ্যমে আমরা আজও বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ভোগ করে থাকি। আমাদের এখানে দৃষ্টি,বাক,শ্রবণ প্রতিবন্ধিরাও আছে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নাজমা বেগম উনি আমাদের বিভিন্ন বিষয় দেখে থাকেন।বিভিন্ন সময় ধর্ষণের শিকার হওয়া প্রতিবন্ধিদের ৬ টি মামলা পরিচালনা করছেন উনি।
এখন নাজমা বেগম নিজেই পাশের বাসার বাড়িওয়ালা আল জয়নালের বিভিন্ন মিথ্যা মামলা ও হামলার শিকার হচ্ছে। তাকে আমরা বলেছিলাম এটা বোবার বাড়ি আপনে ছেড়ে দেন তাদের কিন্তু সে আমাদের কথা না শুনে উল্টো মামলা করে হয়রানি করছে। আপনে স্যার আমাদের এই বিষয়টা একটু যদি দেখতেন।
বক্তব্য শেষে কেক কেটে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উদযাপন এবং ৫০ জন বাক ও ১০ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, বধির উন্নয়ন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক নাজমা বেগম, সহ-সভাপতি ইয়ারুন নেছা ময়না, কোষাধ্যক্ষ মোল্লা রাশেদ বিন বেলাল(শাওন), কার্যনির্বাহী সদস্য সালেহা বেগম,সাধারণ সদস্য ওমর ফারুক, বাংলাদেশ প্রতিবন্ধি প্রগতি সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক হাফেজ মাসুদুর রহমান, বাংলাদেশ প্রতিবন্ধি প্রগতি সংস্থার মহাসচিব ইউসুফ হাওলাদারের সহধর্মিণী রেনু বেগম সহ বধির উন্নয়ন সংস্থা ও বাংলাদেশ প্রতিবন্ধি প্রগতি সংস্থার নেতৃবৃন্দরা।